Ajker Patrika

খাদ্যসংকটে হাতির পাল

অভিজিৎ সাহা, নালিতাবাড়ী
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২২, ১৫: ৪৮
খাদ্যসংকটে হাতির পাল

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে খাদ্যের সন্ধানে এক টিলা থেকে আরেক টিলায় ছুটছে ৪০-৪৫টি বন্য হাতির পাল। এই পালের সঙ্গে হাতির দুটি বাচ্চাও রয়েছে। ক্ষুধার তাড়নায় হাতির পাল দিশেহারা। খাচ্ছে টিলায় থাকা গাছের ছাল-বাকল।

বর্তমানে হাতির পালটি চকিদার টিলায় বাঁশ বাগানে অবস্থান করছে। ময়মনসিংহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা হাতির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। কেউ যেন হাতি পালকে উত্ত্যক্ত করতে না পারে, সবাইকে সে বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।

জানা গেছে, হাতি দল বেঁধে সমতল ভূমিতে চলাফেরা ও আহার করতে সহজ মনে করে থাকে। তাই সময়-অসময়ে হাতির পাল সীমান্তপথ পাড়ি দিয়ে সমতল বনাঞ্চলের আবাসিক ও কৃষি প্রধান এলাকায় চলে

আসে। পাহাড়ে বসবাসরতদের বাড়িঘর, ফসলাদির জমি ও বিভিন্ন বাগানে প্রবেশ করে ফসল নষ্ট করে। গত ২২ বছর ধরে এসব বন্যহাতি সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোয় অসংখ্য ঘরবাড়ি ও ফসল নষ্ট করেছে। এদিকে এক সপ্তাহ ধরে ৪০-৪৫টি হাতির পাল নাকুগাঁও সীমান্তের বানের টিলায় চার দিকভদিয়ে অবস্থান করে। গত রোব ও সোমবার হাতির পালটি খাদ্যের সন্ধানে কাটাবাড়ি কাঠাতলা টিলায় অবস্থান করে।

গতকাল মঙ্গলবার চকিদারটিলার বাঁশ বাগানে অবস্থান করে। হাতির অবস্থান ও দেখভালের দায়িত্বে আছেন মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার আবদুল করিমসহ বন বিভাগের লোকজন।

টিলা থেকে লোকালয়ে ও ফসলি জমিতে হানা দিতে না পারে তার জন্য এলাকাবাসীও সতর্ক রয়েছেন। এ সময় নয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানসহ ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত সোমবার পড়ন্ত বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৪০-৪৫ টি বন্য হাতির পাল দল বেঁধে কাঠালতলী টিলা থেকে আরেক টিলায় খাদ্যের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হাতির খাবার না থাকায় বন বিভাগের বিভিন্ন সামাজিক বনায়নের গাছের ছাল-বাকল তুলে খাচ্ছে হাতি। টিলার মাটি শুঁড় দিয়ে হাতির নিজের শরীরে ছোড়ে মারছে।

এ সময় হাতির দুটি ছোট বাচ্চা দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এই দৃশ্য দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। মানুষের বিচরণ দেখে একাধিকবার একটি হাতি লোকজনকে তাড়া দিয়ে হুমকি দেয়। এ সময় লোকজন পেছন দিকে দৌড়ে টিলা থেকে সমতলে নেমে আসে।

এ্যালিফেন্ট রেসপন্স টিমের সদস্য মনতিষ সাংমা বলেন, ‘হাতির পালটি খাদ্যের সন্ধানে টিলা থেকে টিলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ যেন হাতির কোনো রকম ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছি।’

দাওধারা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘পাহাড়ের ঢালে ঋণ করে দুই কাঠা জমিতে বোরো আবাদ করছি। এই ফসলে পাঁচ সদস্যের পরিবারের খাওয়নের ব্যবস্থা অয়। হাতিপাল টিলায় থাকায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। ।’

ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাতির পালটি খাদ্যের সন্ধানে একটিলা থেকে আরেক টিলায় ঘুরছে। কেউ যেন হাতিকে কোনো রকম ক্ষতি করতে না পারেন। তার জন্য দুপুর থেকে পাহাড়েই রয়েছি।’

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার আবদুল করিম বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে হাতির পালটি উপজেলার সীমান্তে রয়েছে। হাতি দেখতে মানুষ ভিড় করছেন। আমরা হাতির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রয়েছি। কেউ যেন হাতি পালকে উত্ত্যক্ত করতে না পারে, তার জন্য সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। হাতির পালটি মঙ্গলবার চকিদার টিলার বাঁশ বাগানে অবস্থান করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত