Ajker Patrika

মহররম মাসে মুমিনের করণীয়

শাব্বির আহমদ
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৫, ১০: ২৯
মহররম মাসে মুমিনের করণীয়

মহররম চার পবিত্র মাসের একটি। ইসলামি বর্ষপঞ্জি শুরু হয় এ মাসের মাধ্যমে। মহররম মাসের মর্যাদা কোরআন ও হাদিসে বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া আশুরার কারণে মাসটি মুসলমানদের কাছে বেশ গুরুত্ব বহন করে। এই মাসে শান্তি ও তাকওয়ার সঙ্গে সময় কাটানোর কথা বলে ইসলাম।

মহররম মাসের ফজিলত

মহররম মাস বেশ ফজিলতপূর্ণ। আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, সেদিন থেকে সময় তার নিজস্ব গতিতে চলছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত। জিলকদ, জিলহজ ও মহররম—তিনটি মাস ধারাবাহিকভাবে রয়েছে। আরেকটি মাস রজব, যা জমাদিউস সানি ও শাবান মাসের মাঝে অবস্থিত।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩১৯৭)।

ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মতে, সম্মানিত চার মাসের মধ্যে মহররম শ্রেষ্ঠ। কেননা, একবার আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কোন বাহন ভালো? রাতের কোন অংশ ও কোন মাস সর্বোত্তম?’ নবী করিম (সা.) উত্তরে বলেছিলেন, ‘যে বাহনের দাম বেশি, সেটি বেশি কল্যাণকর। আর রাতের সর্বোত্তম অংশ হলো মধ্যভাগ। এ ছাড়া সর্বোত্তম হলো আল্লাহর মাস, যাকে তোমরা মহররম বলে ডেকে থাকো।’ (সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি: ৪২১৬)

মহররম মাসের আমল

মহররম মাসের ইবাদত আল্লাহর কাছে বেশ পছন্দের। বেশ কিছু নফল আমলের মাধ্যমে এ মাস অতিবাহিত করা যায়। বিশেষ করে এ মাসে রোজা রাখার মধ্যে বিশেষ ফজিলত রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেন, রমজানের রোজার পর সর্বশ্রেষ্ঠ হলো মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম হলো রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাজ। (সহিহ্ মুসলিম: ১১৬৩)

এ মাসে রয়েছে অত্যন্ত তাৎপর্যময় দিন আশুরা। এ দিন নবীজি (সা.) নিজে রোজা রেখেছেন এবং সাহাবিদের রোজা রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। আশুরার রোজার ফজিলত বর্ণনা করে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি আল্লাহ তাআলার কাছে আশা রাখি, যে ব্যক্তি মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখবে, তাঁর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১১৬২)। তবে আশুরার দিন রোজা রাখার ক্ষেত্রে নবী করিম (সা.)-এর একটি বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে—তা মেনে রোজা রাখতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘আশুরার দিন তোমরা রোজা রাখো। তবে এ ক্ষেত্রে তোমরা ইহুদিদের বিপরীত করো, (তারা ১০ মহররম রোজা রাখে) তোমরা আগের দিন বা পরের দিনও রোজা রাখো।’ (সহিহ্ ইবনে খুজাইমা: ২০৯৫)

রোজার পাশাপাশি এ মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা, জিকির-আজকার করা, নফল নামাজ আদায় করা, তাসবিহ-তাহলিল পড়া, দরুদ পাঠ করা, দান-সদকা করা উচিত। এ ছাড়া রাসুল (সা.)-এর জীবন, সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ ও আশুরার ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করাও এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত