Ajker Patrika

গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৫০
গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ

গত কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে পাবনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন শিশু, বৃদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালের ১৫ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বর্তমানে ৯০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দা ও করিডরে অবস্থান করতে হচ্ছে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের। এদিকে, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিনই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৪০-৪৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। শয্যা সংকটে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ছোট্ট একটি বারান্দায় গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন রোগী ও স্বজনেরা। ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী আসায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের। এক সপ্তাহ ধরে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও শয্যা মিলছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৫টি শয্যা থাকলেও এখানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৯০ জন। বেশির ভাগ রোগী হাসপাতালের বারান্দায় বা করিডরে অবস্থান করছেন। গত দুই সপ্তাহ যাবৎ রোগীর চাপ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। জরুরি বিভাগেও প্রতিদিন অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন।

পাবনা সদর হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা সোহেল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিনই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গড়ে ৪৫-৫০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এঁদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। কিছু মধ্যবয়সী রোগীও আছেন। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৯০ জন রোগী ভর্তি আছেন।

সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের ডায়রিয়া রোগী হামিদা খাতুন বলেন, ‘হঠাৎ করেই গত কয়েক দিন ধরে আমার পেটের মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শেও কোনো কাজ না হওয়ায় সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছানোয়ারা বেগম ও মালেকা খাতুন জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাঁরা। হাসপাতাল থেকে খাবার স্যালাইন ঠিকমতো দেওয়া হলেও অন্যান্য স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। ছোট্ট রুমে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে।

পাবনা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ রহিমা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে চলা অতিরিক্ত গরমে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসক সংকটের জন্য সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার স্যালাইন থাকলেও কলেরা স্যালাইন নেই।’

তিনি আরও বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য কলেরা স্যালাইন ছয় মাস আগেই শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়নি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডের জন্যও নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসক নেই। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নেই।

কথা হলে স্যালাইনের স্বল্পতার কথা স্বীকার করে পাবনা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের জন্য খাবার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে। কলেরা স্যালাইনের কিছুটা স্বল্পতা রয়েছে। খুব শিগগিরই সরবরাহ করা হবে।’

ওমর ফারুক মীর আরও বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর চাপে কোনো ওয়ার্ডেই নির্ধারিত শয্যা অনুযায়ী রোগী ভর্তি বা চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। রয়েছে চিকিৎসক সংকটও। তারপরও সীমিত ব্যবস্থার মধ্যে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত