Ajker Patrika

কৃষকের ক্ষতি, আজও বৃষ্টির আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কৃষকের ক্ষতি, আজও বৃষ্টির আভাস

অগ্রহায়ণের বৃষ্টিতে সারা দেশেই ক্ষতিগ্রস্ত হলেন কৃষক। কোথাও আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কোথাও হয়েছে রবিশস্যের ক্ষতি। এদিকে বৃষ্টিতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরের শ্রমজীবী মানুষের।

গত বুধবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। থেমে থেমে সারা রাতই মোটামুটি বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও সারা দিনই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে বুধবার ও গতকালের বৃষ্টিতে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বেশ কিছু আলুর খেত ডুবে গেছে। এতে আলুর বীজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহের মধ্যে যাঁরা আলুর বীজ রোপণ করেছিলেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। সিরাজদিখানের গোবরদী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ৫৬০ শতাংশ জমিতে সপ্তাহখানেক ধরে আলু রোপণ শেষ করেছি। এখন যেহেতু বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এই আলুর বীজ আর রক্ষা করা যাবে না। অনেক জমি পানিতে ভরে গেছে। জমি থেকে পানি সরানোর কাজ করছি। কিন্তু এত বৃষ্টিতে পানি সরিয়ে শেষ করা যাচ্ছে না। এবার মৌসুমের শুরুতেই অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে।’

এই এলাকার কৃষকেরা বলছেন, এক দিনের মধ্যে পানি কমে না গেলে সব সবজিই পচে যাবে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সৃষ্ট লঘুচাপটি ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। আর মেঘ কেটে গেলেই শীতের প্রকোপ বাড়বে। এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল যেভাবে সারা দিন বৃষ্টি হয়েছে, ততটা আজ হবে না। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কিছুটা মেঘ বা হালকা বৃষ্টি থাকতে পারে। দেশের আর কোথাও টানা বর্ষণের সম্ভাবনা নেই।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে আমন ধানের ক্ষতি যেমন হয়েছে, তেমনি রবিশস্যেরও ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও পাকা ধানখেতে পানি জমেছে। কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কৃষক বেলাল মিয়া বলেন, ‘কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে আমার আলু ও সরিষাখেত নষ্ট হয়েছে। এখন আবার রোপণ করেছি, কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে। আমার পাকা আমন ধানেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে।’ 

বৈরী আবহাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে গতকাল সকাল ৮টা থেকে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ থাকে। এর ফলে বেলা ১১টা পর্যন্ত বেসরকারি কোম্পানির তিনটি ফ্লাইটের ঢাকাগামী দুই শতাধিক যাত্রী আটকা পড়েন। 

টানা বৃষ্টিতে ফসলের খেতের মতো ইটের ভাটাগুলোতেও বড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর এলাকার শালঘরিয়া নাফিস ইটভাটার মালিক তাবুল ইসলাম বাবু বলেন, মৌসুমের শুরুতে ভাটায় আগুন দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য প্রায় ১ লাখ কাঁচা ইট প্রস্তুত করা হয়েছিল। গত দুই দিনের বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে প্রায় সব কাঁচা ইট ভিজে গেছে। এতে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত