Ajker Patrika

চাষের খরচই উঠছে না বোরোতে

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
চাষের খরচই উঠছে না বোরোতে

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর কৃষকেরা বোরো মৌসুমের সোনালি ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। উৎপাদনও হয়েছে আশানুরূপ। তবে ধানের দাম কম হওয়ায় চাষের খরচ উঠছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এদিকে উপজেলায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ উদ্বোধন করা হলেও এখনো কৃষকের তালিকা পুরোপুরি প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। সরকারি দামে এবার ৩ হাজার ৩৩৬ মেট্রিক টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে বলে উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এবার নাগেশ্বরীতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমি এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ মেট্রিক টনের ওপরে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান কাটার ভরা মৌসুমে ঝড় আর লাগাতার বৃষ্টিতে তলিয়েছিল অধিকাংশ খেত। এসব খেতের ধান কাটতে চড়া মূল্যে কৃষিশ্রমিক নিতে হয়েছে। এ ছাড়া ধান মাড়াই এবং শুকাতেও খরচ হয়েছে আগের তুলনায় দ্বিগুণ। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এখন ধানের দাম কম হওয়ায় চাষের খরচ তুলতে পারছেন না তাঁরা।

কৃষকদের তথ্য অনুযায়ী, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে এবার খরচ হয়েছে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ধান হয়েছে ১৮ থেকে ২০ মণ। বর্তমানে মোটা জাতের ধান প্রায় ৭০০ এবং চিকন ধান ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামে ধান বিক্রি করলে বিঘাপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান হয়।

উপজেলার বাহের কেদার গ্রামের কৃষক আজগর আলী জানান, বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কাটতে বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া মাড়াই করতে খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বিঘা ধান চাষে খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। ধান পাওয়া গেছে ২০ থেকে ২১ মণ। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৬৯০ টাকা দরে। এ হিসেবে এবার ধান আবাদ করে লোকসান হয়েছে।

একই এলাকার হারেজ আলী বলেন, ‘এবার ৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। এর মধ্যে ৩ বিঘার কেটে মাড়াই করেছি। পানিতে তলিয়ে থাকা ধান অনেক নষ্ট হয়েছে। এসব ধান কেউ কিনতে চাচ্ছে না। তা ছাড়া ধানের দামও কম।’

কচাকাটা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের ধান কম দামেই বিক্রি করতে হয়। সরকার কখন ধান নেয় আমরা জানি না। সরকারের নির্ধারিত দাম পাই না। এবার খারাপ আবহাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি। ফলে ধান বিক্রি করে চাষের খরচ উঠবে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান বলেন, ‘এবার প্রতি কেজি ধানে ২৭ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এই দামে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা হবে। দুই মেট্রিক টন ধান নিয়ে ইতিমধ্যে সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

টারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তা ছাড়া বৃষ্টির কারণে কৃষকেরা ধান কাটতে দেরি করেছেন। সব মিলিয়ে ধান সংগ্রহ একটু পিছিয়ে গেছে। তবে প্রচার চলমান রয়েছে এবং আবহাওয়াও ভালো হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে পুরোদমে ধান সংগ্রহ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত