Ajker Patrika

জুয়ার আসরে প্রতিদিন কোটি টাকা হাতবদল

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
জুয়ার আসরে প্রতিদিন কোটি টাকা হাতবদল

ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের ভোরাইল এলাকায় পাঁচ মাস ধরে চলছে জুয়ার আসর। সেখানে প্রতিদিন হাতবদল হচ্ছে প্রায় কোটি টাকা। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন ও স্থানীয়দের ম্যানেজ করে জুয়ার এই আসর পরিচালনা করছেন বাইশাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মঈন মিয়া (৩৩)। তাঁকে সহযোগিতা করেন বাদল হোসেন (৩৫) নামের একজন।

অভিযুক্ত মঈন মিয়া বাইশাকান্দা ইউনিয়নের ভোরাইল এলাকার বাসিন্দা। বাদল একই এলাকার সবুর খানের ছেলে।

সরেজমিনে জানা যায়, পাঁচ মাস ধরে ভোরাইল এলাকায় চলছে এই জুয়ার আসর। ভোরাইল এলাকার কবরস্থানের পেছনে এবং ধানতারা-খাগাইল আঞ্চলিক সড়কের পাশে বসে এই আসর। ওই এলাকায় প্রশাসনের কিংবা অপরিচিত কোনো গাড়ি ঢুকলেই সঙ্গে সঙ্গে সে তথ্য পৌঁছে যায় জুয়ার আসরে। আর এ জন্য এলাকার সোরহাব, মকবুল, জাহাঙ্গীর, ময়নালসহ ৩৬ থেকে ৪০ জন সোর্স রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সোর্সের মধ্যে ২০ জন দিনে এবং ২০ জন রাতে জুয়ার আসরের আশপাশে অবস্থান নিয়ে পাহারা দেন, যেন প্রশাসনের কেউ এলেই জুয়ার আসর থেকে সবাই পালাতে পারেন।

প্রত্যেক সোর্সকে প্রতিদিন দেওয়া হয় ৫০০ টাকা করে। ধানতারা বাজারের মালেক মিয়ার মালিকানাধীন মায়ের দোয়া হোটেল থেকে প্রতিদিন জুয়া খেলতে আসা লোকজনের জন্য দুপুরের খাবার সংগ্রহ করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জুয়ার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই টাকার বিনিময়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন মাস আগে জুয়ার ওই আসর থেকে রুবেল ও হারুন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছিল পুলিশ; কিন্তু তাঁরা জামিনে এসে আবার জুয়া খেলা শুরু করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকা হাতবদল হচ্ছে জুয়া খেলার মাধ্যমে। মঈন মেম্বার প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা খরচ করেন এই জুয়ার আসর পরিচালনার জন্য। ভোরাইল এলাকার মতি মিয়ার মুদিদোকানে এবং দোকানের আশপাশে ২৪ ঘণ্টাই দুজন করে লোক পাহারায় থাকেন। ৩৬ থেকে ৪০ জনের মতো সোর্স রয়েছে। তাঁদের প্রতিদিন ৫০০ করে টাকা দেওয়া হয়। এলাকার ছোট থেকে বড়, প্রায় সবাই জানে এই জুয়ার আসরের কথা।

এলাকার একাধিক লোকজন জানান, ইউপি সদস্য মঈন মিয়ার নেতৃত্বেই এসব কিছু চলছে। প্রশাসন, স্থানীয় মানুষ ও সাংবাদিকসহ সব মহলকেই ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে এই জুয়ার আসর পরিচালনা করছেন তিনি। 
জানতে চাইলে বাইসাকান্দা ইউপির সদস্য মঈন মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি দেখা করবানে।’

অভিযুক্ত বাদল হোসেন বলেন, ‘জুয়া খেলে না কে? ধামরাইয়ের ৪০ ভাগ মানুষই জুয়া খেলে। এসব নিউজ-টিউজ করে লাভ নাই।’

জানতে চাইলে বাইশাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘আপনি আমাকে বললেন আমি জানলাম। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব।’

বাইশাকান্দা ইউনিয়ন বিটের দায়িত্বে থাকা ধামরাই থানার এসআই রবিউল হক বলেন, ‘জুয়ার বিষয়ে আগে কিছুই জানতাম না। বিষয়টি জানার পর থেকেই ওই এলাকার জুয়াড়িদের ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি দেখতেছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত