নুসরাত জাহান শুচি
‘জেলখানার চিঠি
বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস
কয়েদি নং: ৯৬৮ /এ
খুলনা জেলা কারাগার
ডেথ রেফারেন্স নং: ১০০/২১
একজন ব্যক্তি যখন অথই সাগরে পড়ে যায়, কোনো কূলকিনারা পায় না, তখন যদি চোখের সামনে একটি পাতা ভাসে, সেই পাতা ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। আমি তদ্রূপ সাগরে পড়ে যাওয়া কূলকিনারা হারানো পথিক। জানি না আমার এই আর্তনাদ কেউ আমলে নেবে কি না।’
চিঠির প্রথম অংশের লেখাগুলো এমন ছিল। খুব অবাক হয়েছিলাম যখন খবরটি সামনে এল। আমার ছোট্ট জীবনে ধারণা ছিল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা বা মুনির চৌধুরীর মতো সাহিত্যিক বা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো বিদ্রোহী কবিই কেবল কারাগারে বসে লিখতে পারেন, ‘কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’। এর বাইরেও যে সাদামাটা এক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দরিদ্রের লেখনীতে এমন দৃঢ়তা থাকতে পারে, তা আমার জানার বাইরেই ছিল এত দিন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ জারি হওয়া সেই আসামি পরবর্তী সময়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ পেয়েছেন কি না, তা আর জানা হয়নি। তবে যে বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে—চালচুলোহীন একজন মানুষ, যিনি কিনা তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতও নন, তিনিও জজ সাহেবের বিচারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। এ থেকে বোঝা যায়, সাহিত্য বা শক্তি সবটাই আপেক্ষিক। সময়ের প্রয়োজনে সামান্য জেলেও কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ফিরতে পারেন। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে মা তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে পারেন। অর্থাৎ বলা চলে, সাহসিকতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াটা জরুরি।
মানুষ যখন বুঝতে পারে পিছু হটার আর জায়গা নেই, তখন অদম্য শক্তি নিয়ে সামনে আগাতে পারে। তারই অন্যতম উদাহরণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর যখন ভাষার লড়াই চলমান, তখনই কিন্তু বাঙালি বলে আমরা স্বাধীনতা চাইনি, শুধু চেয়েছিলাম বাংলা ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর পেরিয়েছে এটি বুঝতে যে দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। আর পিছু হটার জায়গা নেই। তাই তো যার যা কিছু ছিল—লাঠি, লাঙল, কুড়াল বা সামান্য কিছু হাতিয়ার—তা নিয়েই অস্ত্রের বিরুদ্ধে দিব্যি লড়াই চালিয়েছে বাংলার দামাল ছেলের দল। ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে মানুষ। কারও সংগ্রাম খাবারের জন্য, কেউ রোগের সঙ্গে লড়াই করছে আমৃত্যু, কেউ জীবন বাজি রেখে ট্রলারে করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপে প্রবেশের আশায়, কেউ ছুটছে চাকরির পেছনে, কেউ আবার চাকরি ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে হিমালয় জয়ের আশায়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ গল্পের নায়ক। সেই আত্মবিশ্বাস আছে বলেই হামাগুড়ি দেওয়া শিশুটিও উঠে দাঁড়ায়; কেবল হাঁটতেই নয়, একসময় দৌড়াতেও শিখে যায়।
লেখক: নুসরাত জাহান শুচি, সাংবাদিক
‘জেলখানার চিঠি
বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস
কয়েদি নং: ৯৬৮ /এ
খুলনা জেলা কারাগার
ডেথ রেফারেন্স নং: ১০০/২১
একজন ব্যক্তি যখন অথই সাগরে পড়ে যায়, কোনো কূলকিনারা পায় না, তখন যদি চোখের সামনে একটি পাতা ভাসে, সেই পাতা ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। আমি তদ্রূপ সাগরে পড়ে যাওয়া কূলকিনারা হারানো পথিক। জানি না আমার এই আর্তনাদ কেউ আমলে নেবে কি না।’
চিঠির প্রথম অংশের লেখাগুলো এমন ছিল। খুব অবাক হয়েছিলাম যখন খবরটি সামনে এল। আমার ছোট্ট জীবনে ধারণা ছিল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা বা মুনির চৌধুরীর মতো সাহিত্যিক বা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো বিদ্রোহী কবিই কেবল কারাগারে বসে লিখতে পারেন, ‘কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’। এর বাইরেও যে সাদামাটা এক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দরিদ্রের লেখনীতে এমন দৃঢ়তা থাকতে পারে, তা আমার জানার বাইরেই ছিল এত দিন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ জারি হওয়া সেই আসামি পরবর্তী সময়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের সুযোগ পেয়েছেন কি না, তা আর জানা হয়নি। তবে যে বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে—চালচুলোহীন একজন মানুষ, যিনি কিনা তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতও নন, তিনিও জজ সাহেবের বিচারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। এ থেকে বোঝা যায়, সাহিত্য বা শক্তি সবটাই আপেক্ষিক। সময়ের প্রয়োজনে সামান্য জেলেও কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে ফিরতে পারেন। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে মা তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে পারেন। অর্থাৎ বলা চলে, সাহসিকতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াটা জরুরি।
মানুষ যখন বুঝতে পারে পিছু হটার আর জায়গা নেই, তখন অদম্য শক্তি নিয়ে সামনে আগাতে পারে। তারই অন্যতম উদাহরণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর যখন ভাষার লড়াই চলমান, তখনই কিন্তু বাঙালি বলে আমরা স্বাধীনতা চাইনি, শুধু চেয়েছিলাম বাংলা ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা। এরপর দীর্ঘ ২৫ বছর পেরিয়েছে এটি বুঝতে যে দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। আর পিছু হটার জায়গা নেই। তাই তো যার যা কিছু ছিল—লাঠি, লাঙল, কুড়াল বা সামান্য কিছু হাতিয়ার—তা নিয়েই অস্ত্রের বিরুদ্ধে দিব্যি লড়াই চালিয়েছে বাংলার দামাল ছেলের দল। ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে মানুষ। কারও সংগ্রাম খাবারের জন্য, কেউ রোগের সঙ্গে লড়াই করছে আমৃত্যু, কেউ জীবন বাজি রেখে ট্রলারে করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপে প্রবেশের আশায়, কেউ ছুটছে চাকরির পেছনে, কেউ আবার চাকরি ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে হিমালয় জয়ের আশায়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ গল্পের নায়ক। সেই আত্মবিশ্বাস আছে বলেই হামাগুড়ি দেওয়া শিশুটিও উঠে দাঁড়ায়; কেবল হাঁটতেই নয়, একসময় দৌড়াতেও শিখে যায়।
লেখক: নুসরাত জাহান শুচি, সাংবাদিক
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১০ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫