Ajker Patrika

হারাবে না নীল সাঁতারু কাঁকড়া

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৫
হারাবে না নীল সাঁতারু কাঁকড়া

কক্সবাজারে মৎস্যবিজ্ঞানীরা নীল সাঁতারু কাঁকড়ার বাণিজ্যিক পোনা উৎপাদনে সাফল্য পেয়েছেন। দীর্ঘদিন গবেষণার পর বিপন্ন সামুদ্রিক এই কাঁকড়ার প্রজনন ও উৎপাদন শুরু হয়েছে। এই কাঁকড়ার পোনা বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য খামারিদের সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংস্থা (আইইউসিএন) সম্প্রতি নীল সাঁতারু কাঁকড়াকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী প্রজাতির লাল তালিকাভুক্ত করেছে। বিপন্ন এই কাঁকড়া খেতে খুবই সুস্বাদু। বিদেশেও জনপ্রিয় সি ফুড হিসেবে রপ্তানি হয়। সাম্প্রতিক চাহিদার কারণে এই কাঁকড়ার আহরণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ফলে কাঁকড়াটি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) কক্সবাজারের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে ২০২১-২২ অর্থবছরে নীল সাঁতারু কাঁকড়ার প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এরই মধ্যে গত ডিসেম্বর থেকে তিন ব্যাচে সাঁতারু কাঁকড়ার ডিম থেকে পোনা ফোটানো হয়েছে। সেই বাচ্চা এখন কেন্দ্রের হ্যাচারিতে বড় হচ্ছে।

মৎস্যবিজ্ঞানীদের মতে, কাঁকড়া সমুদ্র উপকূলের দূষণ পরিষ্কারকারী ‘মেইন বায়োটার্বেটর’ বা জৈব রাসায়নিক পরিবর্তনকারী প্রধান প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। কাঁকড়া বায়োটার্বেশনের মাধ্যমে মাটির ভৌত ও জৈব-রাসায়নিক গুণাগুণের বা বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে খাদ্যশৃঙ্খলের বিভিন্ন জীব-অণুজীব ও উদ্ভিদের বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করে। সৈকতের মাটির লবণাক্ততাও কমায় এরা। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে কাঁকড়া আহরণে পরিবেশ থেকে এসব উপকারী প্রাণী হারিয়ে যেতে বসেছে।

কক্সবাজারে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, চাহিদার কারণে নীল সাঁতারু কাঁকড়ার আহরণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ জন্য বিএফআরআই সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই প্রকল্প গ্রহণ করে। এতে সাফল্য পাওয়া গেছে।

নীল সাঁতারু কাঁকড়ার প্রজনন ও পোনা উৎপাদন প্রকল্পের প্রধান গবেষক সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের জ্যৈষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আহমেদ ফজলে রাব্বি বলেন, গত ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনটি ব্যাচে বাচ্চা ফুটেছে। একেকটি ব্যাচে প্রায় ৩ লাখ করে পোনা ফুটেছে। পোনাগুলো নানা ধাপ অতিক্রম করে এখনো অন্তত শতকরা ৬০ ভাগ বেঁচে আছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, সমুদ্রসম্পদের সংরক্ষণ ও অতি আহরণ থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং দেশের সুনীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন, পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে নীল সাঁতারু কাঁকড়ার বাণিজ্যিক প্রজনন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে শীলা কাঁকড়ার পাশাপাশি নীল সাঁতারু কাঁকড়া রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত