Ajker Patrika

টিকা নিতে গিয়ে লম্বা লাইনেশিক্ষার্থীদের কষ্ট

আজাদুল আদনান, ঢাকা
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৯: ৩৯
টিকা নিতে গিয়ে লম্বা লাইনেশিক্ষার্থীদের কষ্ট

রাজধানীর বনানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার। গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিবন্ধনে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে টিকা নিতে আসে একই স্কুলের মালিবাগ শাখায়। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় তাকে।

শুধু তাহমিনা নয়, এই কেন্দ্রে আসা দুই হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অনেকে এমন ভোগান্তির কথা জানান। এই কেন্দ্রে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পাঁচটি শাখার পাশাপাশি আরও একটি গার্লস স্কুল মিলে দুই হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়। সে তুলনায় নেই বুথসংখ্যা। এর ওপর টিকাদানে ধীরগতি সেই দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড়। তখনো শুরু হয়নি টিকাদান। অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরাও। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইটি বিভাগের লোকজন দেরিতে আসায় এবং নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রে টিকা না পৌঁছানোয় সকাল সাড়ে ১০টার শুরু হয় টিকাদান।

অভিভাবকেরা বলেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে টিকা দেওয়ার জন্য এসএমএস দেওয়া হয়েছে। অথচ এখানে জায়গা ছোট, দাঁড়ানোর মতো জায়গা নেই। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আমাদেরই অবস্থা খারাপ, সেখানে বাচ্চাদের অবস্থা কী হবে?’

দশম শ্রেণির ছাত্রী সাবিহাকে টিকা দিতে সকাল পৌনে ৮টায় নিয়ে এসেছেন বাবা আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা যদি ঠিকঠাক করতে না-ই পারে, তাহলে উদ্যোগ নেওয়ার কী দরকার? সাড়ে চার ঘণ্টার বেশি হলো মেয়েটা লাইনে দাঁড়িয়ে। এখানে বসার জায়গাও নেই।’

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের মালিবাগ শাখার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সব প্রতিষ্ঠানকে এক কেন্দ্রে না দিয়ে সময় নিয়ে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থা করলে ভালো হতো। সবাইকে একসঙ্গে দেওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

উত্তরার সাউথ ব্রিজ স্কুলে টিকা দেরিতে আসায় নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় টিকাদান। ১০টি বুথ হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ৭টি। এই কেন্দ্রে এদিন ২ হাজার ৬৬ জনকে টিকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

তবে কষ্ট ভোগ করলেও টিকা পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা। দশম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া বলে, ‘অনেকটা চিন্তায় ছিলাম, টিকা পাব কি না। প্রায় চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে টিকা পেয়েছি। বুথের সংখ্যা বাড়ালে আমাদের এত কষ্ট হতো না।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ৮৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। কিন্তু এত প্রতিষ্ঠানের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীকে কম সময়ে টিকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় সংক্ষিপ্ত করা হয় সেই তালিকা। পরে ১২টি নির্ধারণ করা হয়। সেখান থেকে আবার ৮টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, একদিকে টিকার সংকট, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় গোটা কর্মসূচি অনেকটা জটিলতায় রূপ নিয়েছে।

প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ হাজার করে দৈনিক ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। কিন্তু গতকাল প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম।

অন্যদিকে মাউশির তথ্য বলছে, ঢাকায় ৭০০টি প্রতিষ্ঠানে টিকা পাওয়ার মতো কম বয়সী শিক্ষার্থী আছে ৬ লাখের মতো। এর মধ্যে ৪ লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা গেছে। কিন্তু নিবন্ধন করেছে মাত্র ১ লাখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় ‘জুতার মালা’ দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ইরানের পতন হলে, এরপরই রাশিয়া—অভিমত রুশ বিশ্লেষকদের

লাইভ-২ (২৩ জুন, ২০২৫): ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুঁশিয়ারি, জাতিসংঘে জরুরি বৈঠক

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত