Ajker Patrika

সড়কের মাঝে ৫৩টি গাছ বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪: ১৮
সড়কের মাঝে ৫৩টি গাছ বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

মাগুরা শহরের ভায়না এলাকায় প্রশস্ত সড়কের মাঝে রয়েছে ৫৩টি গাছ। এ কারণে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। এদিকে গাছের মালিকানা নিয়ে জটিলতায় রাস্তার কাজও এখন বন্ধ রয়েছে। দুঘটনাপ্রবণ এই গাছের দায় নিচ্ছেন না বন বিভাগ ও সওজের কেউই। তাঁরা একে অপরের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আবার এই গাছের জায়গার মালিকানা দাবি করে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।

মাগুরা থেকে নড়াইল যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। পিএমপি (মেজর-সড়ক) কর্মসূচির আওতায় ভায়না থেকে মীরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। এর বেশির ভাগ কাজ শেষের দিকে হলেও শহরের ভায়না এলাকা থেকে স্থানীয় বাজারসংলগ্ন পৌর গোরস্তান পর্যন্ত গাছ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। এ কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে।

ভায়না পিটিআইপাড়া এই পৌর গোরস্তানসংলগ্ন দোকানি আজিজুল হাকিম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে এই গোরস্তানসংলগ্ন নতুন মহাসড়কে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।’ এ জন্য এই গাছগুলোই দায়ী বলে তিনি মনে করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘রাস্তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রশস্ত। তাই দ্রুতগতির যান পাশাপাশি চলছে। যখনই এখানে আসছে, তখন গাছগুলো রাস্তার মাঝে হওয়ায় ব্রেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।’

স্থানীয় যুবক আশিক হোসেন বলেন, ‘পৌর গোরস্তানে প্রতিদিন নানা জায়গা থেকে মানুষ লাশ দাফন করতে আসে। এই গাছগুলো রাস্তার মাঝামাঝি হওয়ায় ব্যস্ত সড়ক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও।’ ওই এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, গাছগুলো নিয়ে জেলা পরিষদ, বন বিভাগ ও সওজ (সড়ক ও জনপথ) কেউই দায় না নেওয়ায় এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।  

সড়ক বিভাগ রাস্তার কাজ শুরু করলে এই সড়কের মোট ৫৩টি গাছ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। মালিকানা হিসেবে বন বিভাগ, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, সওজ আলাদাভাবে দাবি করে আসছে; কিন্তু পৌর গোরস্তানসংলগ্ন প্রায় ১৫টি গাছ এই প্রশস্ত সড়কের মাঝে থাকায় প্রায় ২০ মিটার সড়কের কাজ আর শেষ হয়নি।

এক সপ্তাহ আগে এই গোরস্তানসংলগ্ন নতুন মহাসড়কে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ রাস্তা পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

তবে এই অংশের দুর্ঘটনাপ্রবণ গাছের মালিকানা দাবি করেনি মাগুরা বন বিভাগ। এই কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘ওই গাছ আমাদের এলাকার না। আমাদের কোনো জায়গা থাকে না। আমরা স্থানীয় মানুষদের নিয়ে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি করি। এতে গাছের পরিচর্যা স্থানীয়রা করে থাকেন। এ পর্যন্তই আমাদের কার্যক্রম। তাই গাছের মালিকানা আমাদের নয়। হতে পারে জেলা পরিষদ, সওজ বা জেলা প্রশাসনের।’

গাছের মালিকানার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সড়ক ও জনপথ। এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই গাছ আমাদের নয়। এটা জেলা প্রশাসন বা জেলা পরিষদের হতে পারে। দুপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। গাছ অপসারণ না করলে আমরা রাস্তার এই অংশের কাজ সম্পন্ন করতে পারছি না।’

অবশ্য জেলা পরিষদ কিছু জমির দাবি করলেও গাছগুলো কাদের জমিতে তা জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র হালদার। তিনি মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওখানে জেলা পরিষদের জমি রয়েছে। আবার জেলা প্রশাসন ও সওজও জমির দাবি করছে। তাই আমরা মামলা করেছি। মামলার নিষ্পত্তি না হলে কোনো কিছুই আর করা সম্ভব হবে না।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জুলিয়া সুকায়না আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই সড়কসংলগ্ন ৫৩টি গাছ নিয়ে নিলাম ডাকা হয়েছিল সওজের অনুকূলে। আগস্টে মাসে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে; কিন্তু গাছের মালিকানা ও ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে মামলা করেছে জেলা পরিষদ। মামলা আদালতে চলমান। নিষ্পত্তি না হলে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

পাকিস্তানের ভয়ে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ করতে চায় না ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত