Ajker Patrika

খানাখন্দে ভরা লালন শাহ সড়ক

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া)
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ২০
খানাখন্দে ভরা লালন শাহ সড়ক

খানাখন্দে ভরা বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজার সড়কটি। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের কোথাও আবার ওঠে গেছে পিচ ঢালাই। এতে হাজার হাজার দর্শনার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে যানবাহন। যোগাযোগ ব্যবস্থা জরাজীর্ণ হওয়ায় দর্শনার্থীদের সংখ্যাও দিনদিন কমতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, লালন শাহের মাজারটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া এলাকায় অবস্থিত। উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের দবিরমোল্লা গেট থেকে লালন ফকিরের মাজার পর্যন্ত সড়কটি বেহাল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় প্রতিদিনই লালন ভক্ত, অনুসারী ও দর্শনার্থীরা মাজারে যাতায়াত করেন এ সড়ক দিয়ে। এ ছাড়াও জেলা শহরে প্রবেশে যানজটের ভোগান্তি কমাতে এবং সহজ যাতায়াতের জন্য প্রতিদিনই অসংখ্য যানবাহন ও লোকজন চলাচল করে এ সড়কে দিয়ে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ। অসংখ্য খানাখন্দে ভরা। চলাচলের অনুপযোগী। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ইজিবাইক ও মালবাহী যানবাহনগুলো উল্টে যায়। ভেঙে বিকল হয়ে থাকে সড়কে।

স্থানীয়রা জানান, আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহের মাজারে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। যা দবিরমোল্লা রেল গেট সড়ক নামে পরিচিত। একমাত্র সড়ক দিয়ে নিয়মিত সচিব, ডিসি, সাংসদসহ সরকারের বড় বড় আমলারা, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা মাজার পরিদর্শন ও পরিবার পরিজন নিয়ে বিনোদনের জন্য যাতায়াত করেন। কিন্তু কেউই সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেননি। ফলে সড়কটি এখন ‘অভাগা’ হিসেবেই পরিচিত।

দবিরমোল্লা সড়কের বাসিন্দা সংবাদকর্মী সামরুজ্জামান সামুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামন্য বৃষ্টিতেই জমে কাঁদা পানি। কোথাও কোথাও পিচঢালাই উঠে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে বাতাসে ধুলা ওড়ে। মহাব্যস্ত সড়কটি যেন বড় দুর্গম হয়ে আছে।’

চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে লালন শাহের মাজার সড়কটি। সম্প্রতি দবিরমোল্লা গেটস্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, সব সময় কাজের জন্য যাতায়াত করতে হয় এ সড়ক দিয়ে। শহরে যাওয়ার একমাত্র পথও এটি। কিন্তু সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গেছে, ভরে গেছে খানাখন্দে। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় পথচারীদের।

ছেঁউড়িয়া এলাকার আলিমুজ্জামান বলেন, ‘যানবাহনের চাকা ভাঙা স্থানে পড়ে ঘটে দুর্ঘটনা। মাঝে মধ্যেই এলাকার খানাখন্দে পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক আটকা পড়ে। দ্রুত সড়কটি সংস্কার হলে কমবে মানুষের দুর্ভোগ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই সড়কটি আগে ভালো ছিল। কয়েক বছর ধরে এই সড়কে ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তার এই করুণ পরিণতি হয়েছে।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আশপাশের সড়কগুলো ভাঙা হওয়ায় দবিরমোল্লা সড়ক দিয়ে শহরে যাওয়া আসা করি। কিন্তু বর্তমানে এই সড়কের অবস্থাও খুবই খারাপ। রোগী নিয়ে আর যাওয়া যায় না। মানুষ খুব বিপদে আছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রিকশাচালক বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে ভিআইপিরা কালো গাড়ি নিয়ে চলাচল করেন। তাঁদের কালো গাড়িতে ভাঙা বোঝা না গেলেও আমাদের গাড়িতে ঠিকই ঝাঁকুনি হয়, উল্টে যায়, ভেঙে যায়।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘ইতিমধ্যে ওই সড়কের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত