Ajker Patrika

সুদ কারবারিদের দৌরাত্ম্য

রাসেল আহমেদ, তেরখাদা
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৮
সুদ কারবারিদের দৌরাত্ম্য

খুলনার তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চলছে রমরমা সুদের কারবার। চড়া সুদে টাকা খাঁটিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সুদ কারবারিরা। তাঁদের দৌরাত্ম্যে উপজেলায় এক শ্রেণির মানুষ দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে ফুলে ফেঁপে বড় হচ্ছে আরেক শ্রেণির মানুষ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সুদ কারবারিরা এমন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সুদখোরদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তেরখাদার জয়সেনা, সাহাপাড়া, কাচিকাটা, বারাসাত, নাচুনিয়া, পাতলা, সাচিয়াদাহ, শেখপুরা, আজগড়া, কোলাপাঠগাতী, মধুপুর, পানতিতাসহ বিভিন্ন এলাকায় দুই শতাধিক ব্যক্তি সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই স্বর্ণ, মুদি, দর্জি, চাল ও কাপড় ব্যবসায়ী। অফিস আদালতে স্বল্প বেতনে কাজ করা মানুষ এবং সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা চড়া সুদের ফাঁদে পড়েন। সুদি কারবারি অধিক মুনাফায় টাকা ধার দেন এবং মাসের পর মাস এর সুদ নিয়ে থাকেন। একজন ঋণগ্রহীতা আসল টাকার দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা পরিশোধ করেও দেনা মুক্ত হতে পারে না। সুদের টাকা পরিশোধ করতে অনেকেই সহায়-সম্বল বিক্রি করে পথে বসেছেন।

অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী মহাজনেরা তাঁদের সুদের কারবার নির্বিঘ্ন করতে নিজ নিজ এলাকার দালাল, ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের মাসোহারা দিয়ে থাকেন। এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা ভয়ে ওই সব সুদখোরদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য মুখ খুলতে সাহস পায় না।

উপজেলার বারাসাত ইউনিয়নের হাড়িখালী এলাকার ইজিবাইক চালক রুস্তম মোল্লা বলেন, আমি এলাকার এক সুদি কারবারির কাছ থেকে টাকা সুদে নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সুদের টাকা বাকি পড়ায় গত সপ্তাহে আমার জমিজমা ও বসতবাড়ি দখল করতে চলে আসে এবং আমার বসত ঘরে তালা মেরে দেয়। পরে থানা-পুলিশের সহায়তায় ঘরে উঠতে পেরেছি। শুধু রুস্তম মোল্লাই নন। বরং তার মতোই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অনেক মানুষ ভুক্তভোগী।

এদিকে তেরখাদার সদরের সোনার ব্যবসার আড়ালে অধিকাংশ সুদ কারবারি গাড়ি-বাড়িসহ লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। তাঁরা কর ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি লাখপতি হয়ে গেছেন। অনেক সুদখোর গাড়ি-বাড়ি-দোকানপাটের সংখ্যা বাড়িয়েই চলছেন।

এ বিষয়ে তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় লোকেরা সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে থানায় কোনো অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত