Ajker Patrika

‘বার আউলিয়া’ আসছে কাল

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৪৮
‘বার আউলিয়া’ আসছে কাল

উত্তাল নদী পেরিয়ে বঙ্গোপসাগর। তারপর সাড়ে ৪ ঘণ্টা সাগর পাড়ি দিয়ে কর্ণফুলী হয়ে চট্টগ্রাম। বরিশালের মানুষদের নদী ও সাগরপথে এমন রোমাঞ্চকর ভ্রমণের সুযোগ করে দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি।

বরিশাল-চট্টগ্রাম নৌপথ চালুর প্রস্তুতি হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিচ্ছে এমভি বার আউলিয়া। গভীর রাতে বরিশাল বন্দরে পৌঁছাবে অত্যাধুনিক এ জাহাজটি। বিআইডব্লিউটিসির চট্টগ্রামের এজিএম গোপাল মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, এমভি বার আউলিয়াই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল ট্রায়াল দেবে। শিগগিরই এটি যাত্রী পরিবহন করবে। এদিকে বরিশাল-চট্টগ্রামে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে এ রুটে যাত্রী ভাড়া সহনীয় রাখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমভি বার আউলিয়ার মাস্টার ফিরোজ আহমেদ বলেন, বার আউলিয়া চট্টগ্রাম-হাতিয়া নৌ-পথে যাত্রীসেবা দিচ্ছে। এটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশ্য রওনা দেবে। টানা ৬ ঘণ্টা চলার পর দুপুর ২টায় হাতিয়া পৌঁছাবে। এরপর ভোলার ইলিশা পেরিয়ে মেঘনা হয়ে বরিশাল পৌঁছাবে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে জাহাজটি বরিশালে পৌঁছাতে পারে। অর্থাৎ চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল পৌঁছাতে প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা লাগবে।

মাস্টার ফিরোজ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী নদী পেরিয়ে হাতিয়া পৌঁছাতে সাড়ে ৪ ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরের উপকূল পাড়ি দিতে হবে। শীত মৌসুমে যাত্রীরা আরামে পাড়ি দেবেন পথটা। ৪ তলার এ জাহাজে বসে ভ্রমণপ্রেমীরা উত্তাল নদী আর সাগরের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাবেন।

বার আউলিয়া প্রসঙ্গে ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘১ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতার জাহাজটিতে প্রথম শ্রেণির ১৩ টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ৮টি কেবিন আছে। রয়েছে ডেকে বেঞ্চে বসার ব্যবস্থা। জাহাজের সব তলাতেই যাত্রীরা অনায়াসে ঘুরতে পারবেন। আরামেই বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে যাত্রীরা যেতে পারবেন।

এর ভাড়া কত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাতিয়া থেকে চট্টগ্রাম ডেকের ভাড়া ৩৬০ টাকা, প্রথম শ্রেণির কেবিন ২১০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন ভাড়া ৭০০ টাকা। বরিশাল পর্যন্ত ভাড়া কত হবে তা এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সপ্তাহে ৩ দিন সার্ভিস দেওয়া হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিসি বরিশালের এজিএম কে এম এমরান জানান, বরিশাল-চট্টগ্রাম জাহাজ চালু হচ্ছে। এখনো শিডিউল এবং ভাড়ার তালিকা পাননি।

জানতে চাইলে বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি অধ্যাপক আমিনুর রহমান ঝান্ডা বলেন, এ রুটে জাহাজ চলাচল করলে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীদের মালামাল আনা নেওয়া সহজ হবে, তেমনি খরচও কমবে। সাধারণ যাত্রীরা ঘুরতে কিংবা যে কোনো কাজে চট্টগ্রাম যেতে পারবেন সহজে। তবে তিনি দাবি করেন, সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসিকে যাত্রী ধরে রাখতে ভাড়া সহনীয় করতে হবে।

জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে এ রুটে প্রথম জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছিল। পরে আবার চালু হলেও ২০০৯ সালে সামান্য অজুহাতে এ রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বরিশাল থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। বরিশাল কিংবা ভোলার ইলিশা থেকে মেঘনা পাড়ি দিয়ে লক্ষ্মীপুর হয়ে চট্টগ্রাম যেতে একদিকে যেমন অনেক সময় লাগছে, তেমনি অর্থ খরচ হচ্ছে প্রচুর। আবার বরিশাল থেকে চাঁদপুর-ঢাকা কিংবা শরীয়তপুর পার হয়ে যেতেও লাগছে প্রায় দুই দিন। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন তাঁরা। নতুন করে এ পথে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বরিশালের সাধারণ মানুষ, ভ্রমণপ্রেমী এবং ব্যবসায়ীরা ভীষণ খুশি।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান জানান, বরিশাল-চট্টগ্রাম রুটে জাহাজ চালুর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে একটি জাহাজ ট্রায়াল দেবে। এ অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধায় এ সার্ভিস চালু হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...