Ajker Patrika

পুণ্যময় হোক পবিত্র শবে বরাত

সম্পাদকীয়
পুণ্যময় হোক পবিত্র শবে বরাত

পবিত্র শবে বরাত আজ। ১৪ শাবান দিবাগত এই রাত ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। হাদিসের ভাষ্যমতে, এ রাতে মহান আল্লাহ মানুষের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহের দৃষ্টি দেন এবং পাপকর্ম ক্ষমা করে তাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তাই এই রাতকে ‘লাইলাতুল বরাত’ বা ‘শবে বরাত’, অর্থাৎ মুক্তির রাত বলা হয়। এ রাতে পুরো বছরের ভাগ্য, রিজিক, জন্ম, মৃত্যুসহ মানবজীবনের অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হওয়ার কথা হাদিসে বিবৃত হয়েছে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে রাতটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা এ রাত পালন করে। আমাদের দেশেও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে এটি পালিত হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে মসজিদে সারা রাত আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হয়। কৃত গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার জন্য আরজি জানায়। রাতের শেষ প্রহরে সাহরি খেয়ে পরের দিনটি সিয়াম সাধনায় পালন করে অনেকে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতের সুবিধার্থে এ রাতের পরদিন সরকারি ছুটি থাকে।

এ রাতে অনেকেই ভালো খাবার-দাবারের আয়োজন করে। হালুয়া-রুটির প্রথাও অনেক স্থানে দেখা যায়। গ্রহণযোগ্য কোনো হাদিসে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা বিবৃত হয়নি বলে মতামত দেন অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ। তবে ঐতিহ্যগতভাবে ভালো খাবার তৈরি এবং প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও দরিদ্রদের মধ্যে তা বিতরণ নিশ্চয়ই মানুষে মানুষে হৃদ্যতা বাড়ায়। এ রাতে পটকা ও আতশবাজি পোড়ানো, দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো, লাউডস্পিকারে উচ্চ স্বরে অনুষ্ঠান করাসহ বিভিন্ন অসামাজিক ও কষ্টদায়ক কাজকর্মও হতে দেখা যায়, যা বিশ্রামরত মানুষের বিশ্রামে এবং ইবাদতরত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতে বিঘ্ন ঘটায়। এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা সবার সামাজিক কর্তব্য।

যে কয়েক শ্রেণির মানুষ এই মহিমান্বিত রাতে আল্লাহর ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হবে বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, হিংসুক তাদের অন্যতম। তাই মানুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ একেবারে ঝেড়ে ফেলাই শবে বরাতের প্রধান শিক্ষা। এ ছাড়া অতীতের গুনাহ, অন্যায়, অনাচার, প্রতারণা, অনিয়ম, দুর্নীতিসহ সব ধরনের অপরাধ থেকে একনিষ্ঠ হয়ে তওবা করা এ রাতের সেরা শিক্ষা। ভবিষ্যতে কোনো অপরাধে না জড়ানোর দৃঢ় অঙ্গীকার করা এ রাতের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। পাশাপাশি পার্থিব জীবনের সৌভাগ্য-সমৃদ্ধি কামনা এবং পরকালের মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে আহাজারি করাও আমাদের অন্যতম কর্তব্য।

মনে রাখতে হবে, অন্যায়, অপরাধ ও গুনাহের কাজে ইচ্ছাকৃত নিজেদের যুক্ত রাখার দৃঢ় মানসিকতা লালন করে এই রাতে ক্ষমা পাওয়ার আশা দুরাশা বৈ কিছু নয়। তাই শবে বরাতের মতো তাৎপর্যপূর্ণ সময়গুলোতে তওবা করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করা উচিত।

পাশাপাশি উচিত শবে বরাতের শিক্ষাগুলো জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রতিফলিত করা। হিংসা, জিঘাংসা, অপরাধ ও গুনাহ থেকে মুক্ত সুষ্ঠু-সুন্দর কল্যাণকর সমাজ গঠনে সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের জাতীয় জীবন পবিত্র শবে বরাতের আশীর্বাদে ভরে উঠুক—এই কামনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত