Ajker Patrika

দুর্ভোগের শেষ নেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের

মো. শামীমুল ইসলাম, আগৈলঝাড়া
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ২২
দুর্ভোগের শেষ নেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের

নির্মাণের দুই যুগ পার হলেও সংস্কার না করায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসত ঘরগুলো। সামান্য একটু বৃষ্টিতেই ফুটো টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আসবাবপত্র। সিডর, ফণী কিংবা আম্পানের মতো বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করা পরিবারগুলো বেঁচে থাকলেও পাচ্ছেন না সরকারি কোনো সাহায্য। তাই তাঁদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পরায়, টিনের নিচ দিয়ে পলিথিন লাগিয়ে রেখেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশ্রিত পরিবারগুলো। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পরেছে দরজাগুলো। ঘরগুলোর টিনের বেড়া মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে এখানকার বাসিন্দাদের।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহায়তায় ২০০০ সালে পয়সারহাট সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী বাগধা ও বাকাল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা পয়সারহাট গোপালসেন মৌজায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বানানো হয়। প্রকল্পে প্রতি শেডে ১০টি ঘর করে ১০টি শেডে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ১০০ট ভূমিহীন ও দুস্থ পরিবারকে বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়। তবে বর্তমানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৭০টি পরিবারের বাস। হালকা ঝড়-বাতাসেই গাছের ডাল ভেঙে পরছে ঘরের ওপর। এতে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।

নীতিমালা অনুযায়ী ১০টি পরিবারের প্রতিটি শেডে ১টি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট,২টি গোসলখানা ও ১টি গভীর নলকূপ থাকার কথা থাকলেও তা নেই। এ ছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্পটি উপজেলার দুই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হওয়ায় বাসিন্দাদের সব সময় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য জরাজীর্ণ অবস্থায় একটি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এর কার্যক্রম নেই। অর্ধশতাধিক ছেলেমেয়েকে দূরের স্কুলে পড়াশোনা করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে দেখা গেছে। প্রকল্পের বাসিন্দা লুৎফা বেগম জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পটিতে বিদ্যুৎ, স্কুল, মাদ্রাসা না থাকার কারণে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাঁরা। সংস্কার করা না হলে বাসিন্দাদের বসতঘরও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা জানান, ঈদ বা পূজায় সরকারিভাবে অল্পসংখ্যক পরিবার চাল পেলেও দুই ইউনিয়নের মধ্যবর্তী হওয়ায় সব সময় সাহায্য-সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত তাঁরা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ভূমিহীন পরিবারগুলোর আশ্রয়ের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর। প্রায় প্রতিটি ঘরই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বসবাসের অনুপযোগী ঘরগুলো মেরামত করতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেম জানান, শিগগিরই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি পরিদর্শন করে সংস্কারের ব্যবস্থা নেব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত