Ajker Patrika

সামাজিক জাগরণ দরকার

সম্পাদকীয়
সামাজিক জাগরণ দরকার

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চার বছরের শিশু বায়েজিদকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ১৩ মে ধানখেত থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বায়েজিদ উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদিপ্রবাসী তাহারুল ব্যাপারীর ছেলে। আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ১৪ মে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে।

শিশু হত্যার ঘটনায় যে কেউ মর্মাহত হবেন। একটি শিশুকে যে হত্যা করতে পারে, তার মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ একেবারেই থাকতে পারে না। আমাদের চারদিকে সামাজিক পরিবেশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সুকুমার প্রবৃত্তির জায়গায় ঠাঁই করে নিচ্ছে বর্বরতা। অস্বীকার করার উপায় নেই যে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশও অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক, কাঠামোগত অনেক রূপান্তর হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের দেশে মূল্যবোধের স্তরটি ক্রমে নিম্নগামী হচ্ছে। শিশু হত্যার অসংখ্য ঘটনা আমাদের দেশে ঘটে চলেছে, অথচ আমরা কোনোভাবেই শিশু হত্যা রোধ করতে পারছি না।

চার বছরের একটা শিশুর কী অপরাধ থাকতে পারে? কোনো পরিবারে এই বয়সের একটি শিশুর স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও তা মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।বায়েজিদকে যে ক্রোধ বা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা স্পষ্ট। বায়েজিদের বোন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া তিশাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল প্রতিবেশী রোমানের পরিবার। এতে পরিবার রাজি না হওয়ায় রোমান বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল। পরিবারের অভিযোগ, এ কারণেই বায়েজিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। রোমানের বাবা সিরিকুল সুদের ব্যবসা করেন। আর রোমান এলাকায় একজন চিহ্নিত চোর এবং নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সিরিকুলের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ঘটনার মূল আসামি কে? সেটা এখনো উদঘাটন করা যায়নি।

শিশুটি আর তার মা-বাবার কাছে ফিরবে না। বোনও তার আদরের ছোট ভাইটিকে আর কাছে পাবে না। জীবনের বাকি দিনগুলো সন্তানহারা বেদনা নিয়ে কাটাতে হবে তার মা-বাবাকে। হত্যাকারীর শাস্তি হবে কি হবে না, সে প্রশ্ন খুবই জরুরি, তবে তার চেয়ে জরুরি হলো, এ বিষয়টি নিশ্চিত করা, যেন আর কোনো অবুঝ শিশুর এ রকম পরিণতি না হয়।

বিগত সময়ে শিশু হত্যার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তরা ধরা পড়লেও এবং তাদের কারও কারও বিচার হলেও এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। কেন এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে? তা নিয়েই আমাদের ভাবা দরকার। এ জন্য সমাজের সব অংশের বিবেকবান মানুষদের ভাবতে হবে। শুধু আইন, বিচারব্যবস্থা দিয়ে শিশু হত্যা রোধ করা যাবে না, তা স্পষ্ট।

শিশুদের সুরক্ষায় সমাজের মধ্যে মূল্যবোধ ও মানবিকতাবোধের জাগরণ ঘটানো জরুরি। একই সঙ্গে যেখানেই শিশু নির্যাতন ও হত্যা, সেখানেই প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ জারি রাখতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে শিশুদের ওপর সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত