Ajker Patrika

প্রত্যাশা ও বাস্তবতা

সম্পাদকীয়
প্রত্যাশা ও বাস্তবতা

নির্বাচন কমিশন বুধবার একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল। বিষয় ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’। জানা গেছে, এমন ‘কর্মশালা’ নির্বাচন কমিশন আরও করবে। নির্বাচনের মাস চারেক আগে কেন এমন কর্মশালা আয়োজনের প্রয়োজন পড়ল, তা অবশ্য অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা কী এবং সে ক্ষেত্রে বাস্তব অবস্থাই-বা কেমন, তা যে নির্বাচন কমিশনের অজানা নয়, সেটা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে। এরপরও একটি কর্মশালা হয়েছে। আমন্ত্রিত অতিথিরা কথা বলেছেন। প্রত্যাশার কথা বলেছেন। বাস্তবতাও বলেছেন। সবাই কিছু না কিছু পরামর্শও দিয়েছেন।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে সবাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগের দুটি নির্বাচন থেকে ভালো দেখতে চান। নির্বাচন নিয়ে যেন বিতর্ক না হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো বিষয়ে ঐকমত্য নেই। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে শত্রু ভাবে। অথচ এই দুই দলের মধ্যে সমঝোতা না হলে, দেশে একটি ভালো নির্বাচন হওয়ার বাস্তবতা দেখা যায় না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল যথার্থই বলেছেন, ‘আমরা একটা কঠিন অবস্থার মধ্যে আছি। অনেকগুলো সংকট কিন্তু নিরসন করতে হবে রাজনীতিকদের। এ কথাটি আমি বারবার বলেছি, আমাদের যদি অনুকূল পরিবেশ রাজনীতিবিদেরা তৈরি না করে দেন, তাহলে আমাদের পক্ষে নির্বাচনটা করা কষ্টসাধ্য হবে। আর যদি অনুকূল করে দেন, তাহলে আমাদের জন্য সহজ হবে।’

নির্বাচন কমিশনকে আসলে কষ্টসাধ্য কাজটিই করতে হবে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার মানসিকতা দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে নির্বাচন হয়তো দেশে হবে। তবে সেটা বিতর্কমুক্ত হবে কীভাবে, সেটাই দেখার বিষয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবশ্য বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতিতে তিনি আস্থা রাখতে চান।

নির্বাচন কমিশন নিয়ে যেসব সংশয় ও সমালোচনা আছে, তার জবাব দিয়ে সিইসি বলেছেন, ‘বলা হচ্ছে এই নির্বাচন কমিশন আগেই পক্ষপাত করে ফেলেছে সরকারের সঙ্গে। এটা সত্য নয়। আমরা অতটা কাপুরুষ নই।’

এই কমিশনের সময়ে যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো দেখে কি মানুষের মনে হয়েছে যে এই কমিশন ‘অতটা কাপুরুষ নয়’? গাইবান্ধার উপনির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে কমিশন যতটুকু সাহস দেখিয়েছে, ততটাই জড়তা দেখিয়েছে অপরাধী চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে।

জামালপুরের ডিসি আওয়ামী লীগকে আবার নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সমালোচনা করে এমন দল অনুগতদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করলে পরিস্থিতি কী হবে, এ প্রশ্নও কর্মশালায় উঠেছিল। ওই জেলা প্রশাসককে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু এমন ডিসি কি দেশে আর একজনও নেই?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত