Ajker Patrika

টানা বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১০: ০০
টানা বৃষ্টিতে জনজীবন স্থবির

বরিশালে সোমবার মধ্যরাত থেকে লাগাতার বৃষ্টি চলেছে। কখনো ভারী আবার কখনো মাঝারি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে নগরীর প্রায় বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। গতকাল মঙ্গলবার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে যাননি তেমন একটা। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটার।

একাধিক নগরবাসী জানান, সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ভারী বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমে এলেও গতকাল মঙ্গলবার সারা দিনই বিরামহীনভাবে বৃষ্টি হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতায় নগরজুড়ে দুর্ভোগ নেমে আসে বলে জানান তারা।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. মাসুদ রানা রুবেল জানান, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজমান থাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা আরও ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নবগ্রাম সড়ক, সদর রোড, সংলগ্ন প্রেসক্লাব সড়ক, ভাটিখানা, আমানতগঞ্জ, সাগরদী জিয়া সড়ক, রূপাতলী হাউজিং, বগুড়া রোড, মুন্সী গ্যারেজ, তালতলি, লুৎফুর রহমান সড়কসহ নগরীর নিচু এলাকাগুলো বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বর্ষণের ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল খুবই কম। জরুরি পণ্যের দোকান বাদে অন্যান্য অধিকাংশ দোকানপাট ছিল বন্ধ।

নগরীর নবগ্রাম রোডের একাধিক বাসিন্দা জানান, বৃষ্টি হলেই তাদের এ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর কারণ হিসেবে তারা জানান, সড়কটি মূলত খাল দখল করে করা হয়েছে। সেখানে এখন যে ড্রেন তাও পরিষ্কার না থাকায় জলাবদ্ধতা এখানকার নিত্যদিনের সঙ্গী।

বরিশাল নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, নগরীর আশপাশের খালগুলো খনন না করা হলে এই জলাবদ্ধতা থেকে তাদের নিস্তার নেই। বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তাদের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বিভিন্ন স্পটে পানি অপসারণে কাজ করছে। বৃষ্টি কমে পানি নেমে যাচ্ছে। দ্রুত পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে ফসলের উপকার হয়েছে। সদর উপজেলার করাপুরের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, এই বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজি সতেজ হবে, ধান ভালো হবে। একই কথা জানান মুলাদী কৃষি সমিতির সম্পাদক কামরুল ইসলাম।

এদিকে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গত দুদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এতে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে মহা বিপাকে। বৃষ্টির কারণে মানুষ কাজে যেতে না পারায় ঘরে বসে অলস সময় কাটিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।  গত সোম ও মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে উপজেলার রাজিহার, বাকাল, বাগধা, গৈলা ও রত্নপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান অতি বর্ষণের কারণে তলিয়ে গেছে।

গৈলা গ্রামের কৃষক দুলাল সরদার জানান, সবজির খেত তলিয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অতি বর্ষণে গ্রামীণ রাস্তাঘাটে চলাফেরায় মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে।  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, সাগরে ফের লঘুচাপের কারণে গত দুই দিন থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মুষলধারে ঝরছে বৃষ্টি। যে কারণে অনেক স্থানে সবজি ও পান বরজের ক্ষতি হয়েছে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ