Ajker Patrika

সরু ২ সেতুতে আটকে সুফল

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২২, ১৪: ১৬
সরু ২ সেতুতে আটকে সুফল

কীর্তিনাশা নদীতে নির্মিত ২টি সেতু এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোটাপাড়া ও কাজিরহাট সেতু দুটির অধিকাংশ স্থানের রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুর মূল অবকাঠামো ও পিলারের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে পণ্যবাহী যানবাহন ও যাত্রীবাহী। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কার করছেন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা।

সেতু দুটির প্রশস্ত মাত্র ১২ ফুট হওয়ায় যানজটে পড়তে হয় চালকদের। ফলে পদ্মা সেতু চালুর ১ মাস পর পুরো সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শরীয়তপুরবাসী।

জানা গেছে, পদ্মা সেতুর সুফল পেতে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে একনেকে অনুমোদন হয় শরীয়তপুর-নাওডোবা ২৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হবে কাজিরহাট ও কোটাপাড়ায় দুটি আরসিসি সেতু। এ ছাড়া ছোট বড় অন্তত ২৭টি কালভার্ট নির্মাণের কথা রয়েছে। ৩টি ধাপে এ প্রকল্পের কাজ হবে।

প্রথম ধাপে জেলা শহরের ফায়ার সার্ভিস থেকে জাজিরা কলেজ পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক, দ্বিতীয় ধাপে কোটাপাড়া ও কাজিরহাট আরসিসি সেতু ও তৃতীয় ধাপে জাজিরা কলেজ থেকে নাওডোবা পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। এ জন্য বরাদ্দ ৪৮২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সেতু দুটি নির্মাণের জন্য রাখা হয়েছে ৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া সড়ক ও সেতু নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ২১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ৪ লেনের ভূমি অধিগ্রহণ করা হলেও প্রাথমিকভাবে ৩৪ ফুট প্রশস্ত সড় নির্মাণ করবে সওজ।

চলতি বছরের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সবে শুরু হয়েছে প্রথম ধাপের সড়ক উন্নয়নের কাজ। কয়েক মাস ধরে কোটাপাড়া ও কাজিরহাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হলেও তা চলছে ধীর গতিতে। এখন পর্যন্ত ২টি সেতুর এক প্রান্তের একটি করে পিয়ার সম্পন্ন করা হয়েছে। অপর প্রান্তের পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সেতু দুটির কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৩৫ শতাংশ। ভূমি জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজও থেমে আছে দীর্ঘ দিন।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের কোটাপাড়া সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুতে দীর্ঘ যানজট। সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে অন্তত ৩৫টি যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনসহ দুটি অ্যাম্বুলেন্স। আর উত্তর প্রান্ত থেকে আসা যানবাহন সেতু পার হচ্ছে এক লেনে ধীর গতিতে।

সেতুটি মাত্র ১২ ফুট চওড়া হওয়ায় এক লেনে চলাচল করতে হয় যানবাহনকে। সেতুর উভয় পাশে দুজন গ্রাম পুলিশ সেতুতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন। সেতুর উভয় পাশের রেলিং ভাঙা। যানবাহন চলাচলের সময় সেতুতে কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে। সেতুর উভয় পাশেই ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে সড়ক বিভাগ। আর কাজিরহাট সেতুতে গিয়েও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। সেতুর পশ্চিম পাড়ে কাজিরহাট বন্দর হওয়ায় এই সেতুতে প্রায়ই যানজট লেগেই থাকে।

যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে সড়ক ও সেতু দুটির উন্নয়ন করা প্রয়োজন ছিল। আড়াই বছর আগে প্রকল্প অনুমোদন হলেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতি জন্য কাজ এগোয়নি।

অ্যাম্বুলেন্সে মাকে ঢাকায় আব্দুল হামিদ মাঝি বলেন, ‘সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে সেতুর ঢালে আটকা আছি। জানি না কখন এই জট থেকে বের হতে পারব।’

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদোয়ানুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি অনুমোদনের পর সব প্রক্রিয়া শেষ করে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণে কিছুটা ধীর গতি থাকায় কাজে কিছুটা দেরি হয়েছে। ২৭ কিলোমিটার সড়কে ২টি সেতু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেতু দুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। কাজের অগ্রগতি ৩৫ শতাংশ। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু দুটির নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত