Ajker Patrika

শুঁটকির খটিতে পুড়ছে কাঠ ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ০৮
শুঁটকির খটিতে পুড়ছে কাঠ ধোঁয়ায় বিপন্ন পরিবেশ

শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মীরগাং, মহিন্দ্রশীল ও বিলাটি এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে শুঁটকি তৈরির খটি। আর এসব খটিতে দেদারসে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অনুমোদনহীন এসব শুঁটকির খটিতে কাঠ পোড়ানোর কারণে কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে।

স্থানীয়রা খটিতে কাঠ পোড়ানো বন্ধ করতে বারবার অনুরোধ করে আসলেও মালিকেরা তা শুনছেন না। কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনেরও নেই কোনো নজরদারি। ফলে কাঠ পোড়ানো অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিবেশের ক্ষতি করে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে এসব মাছ শুকানোর খটি। সেখানে প্রতিনিয়ত কাঠ জ্বালিয়ে কাঁচা মাছ শুকানোর কাজ চলছে। কাঠ জ্বালিয়ে মাছ শুকানোর কারণে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। একই সঙ্গে পথচারীরা অভিযোগ করেছেন কাঠের ধোঁয়ায় রাস্তা দিয়ে চলাচল করা রীতিমতো দুষ্কর হয়ে উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের মহিন্দ্রশীল এলাকায় রাস্তার পাশে ৪টি, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের বিলাটি গ্রামে ৩টিসহ মীরগাং এলাকায় আরও ২টি শুঁটকির খটি গড়ে তোলা হয়েছে।

খটিগুলোতে পার্শ্ববর্তী সুন্দরবন থেকে শিকার করে নিয়ে আসা মাছ শুকানো হচ্ছে। মূলত খটির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় মাচা তৈরি করে দিয়ে তার নিচে কাঠে আগুন ধরিয়ে ওই তাপে মাছ শুকানো হচ্ছে। আর মাছ শুকানোর কাজে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাঠের পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুন্দরবনের কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরও জানা গেছে, পাইকগাছার অসীম বিশ্বাস ও ঝাঁপা গ্রামের বাবুল মণ্ডলসহ স্থানীয় কয়েকজন এসব খটি পরিচালনা করছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত প্রতিটি খটি চলছে। অবৈধভাবে এসব খটিতে প্রতিদিন শত শত মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, খটিগুলোতে প্রতি গোণে প্রায় ৩-৪ হাজার কেজি চিংড়ি মাছ শুকানো হয় কাঁচা কাঠ পুড়িয়ে। অথচ পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি নেই তাঁদের।

আবুল হাসান নামের এক গ্রামবাসী বলেন, ‘বাড়ির পাশে প্রতিদিন কাঠের ধোঁয়া দিয়ে মাছ শুকানোয় বসবাস করা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। পথচারীরা পর্যন্ত ধোয়ার তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে নানা অভিযোগ তোলে।’

আমেনা বেগমের নামের স্থানীয় এক গৃহবধূ বলেন, ‘খটিতে হাজার হাজার মণ কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকানোর সময়ে সৃষ্ট ধোঁয়ায় বড়দের থেকে শিশুরা বেশি সমস্যায় পড়ছে।’

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা লির্ডাসের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘প্রতিদিন যেভাবে কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকাচ্ছে, এতে করে এলাকায় পরিবেশের খুব সমস্যা দেখা দেবে। এখন বিভিন্ন প্রযুক্তি এসেছে সেগুলো দিয়ে মাছ শুকানো যায়। তা না করে কাঠ পোড়ানোর কারণে জলবায়ুর বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’

মাছের খুঁটির মালিক অসীম বিশ্বাসের কাছে কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকানোর কোনো অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে মাছ শুকানো হয়। এর বাইরে কোনো কাগজপত্র নেই।

শ্যামনগর উপজেলার সরকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। এ ব্যাপারে নেওয়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত