Ajker Patrika

কাজ শেষ করার আগেই উঠে যাচ্ছে সিলকোট

শেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ১১
কাজ শেষ করার আগেই উঠে যাচ্ছে সিলকোট

শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের সীমান্ত সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংস্কারকাজে নিম্নমানের নুড়ি পাথর দিয়ে সিলকোট করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই সিলকোট উঠে যাচ্ছে। জেলা সড়ক বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, যদি কোনো সমস্যা থাকে আমরা দেখব।

জানা গেছে, উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের রাংটিয়া মোড় থেকে কাংশা ইউনিয়নের ছোট গজনী পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ লাখ টাকা। সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, নওগাঁ জেলার ঠিকাদার আমিনুল হক কাজটি করেছেন। কিন্তু সড়কে কাজ করা শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, সড়ক বিভাগ নিজেদের তত্ত্বাবধানে কাজটি করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সিলকোটের নামে ওই সড়কের ৬ কিলোমিটার এলাকায় নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। যে মানের পাথর দিয়ে সিলকোট করার কথা তা করা হয়নি। কোনরকম স্থানীয় মোটা বালু দিয়ে সনাতনী পদ্ধতিতে বিটুমিন লাগিয়ে সড়কের ওপরের অংশে দেওয়া হয়েছে।

ফলে সংস্কারের কাজ করতে না করতেই উঠে পড়ছে সিলকোট। শুধু তাই নয়, ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কের মাঝখানে নামমাত্র সিলকোট দেওয়া হলেও দুপাশে মোটা বালুর সঙ্গে সামান্য বিটুমিন মিশিয়ে রুলিং না করে সড়কে সিলকোট ফেলে বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফলে তা সঙ্গে সঙ্গেই উঠে যাচ্ছে।

এদিকে সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীদের কাছে ওই সড়কে কত মিলি সিলকোট করা হয়েছে এমন তথ্য জানতে চাওয়া হলে সওজর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরীফুল আলম বলেছেন, ১২ মিলি সিলকোট হবে। তবে কাজের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ৮ মিলি সিলকোট ধরা আছে। ১২ মিলি সিলকোটের কাজ করা হলে মূল সড়কের ওপরে কমপক্ষে ১৬ মিলি সিলকোট ফেলে রোলার করলে ১২ মিলি হবে। উচ্চতা হবে হাফ ইঞ্চি।

তবে সরেজমিন ওই সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, হাফ ইঞ্চি তো দূরের কথা, তার অর্ধেকও কাজ হয়নি। ছোটগজনী থেকে নকশি বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের নামে যা খুশি তাই করা হয়েছে। সড়কের সিলকোট ইতিমধ্যে উঠে গেছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে মোটা বালু দিয়ে সিলকোট জ্বাল দেওয়ার সময় তা পুড়ে গেছে। সেই পোড়া সিলকোট টেককোট ছাড়াই সড়কে ঢেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে কয়েক দিনের মধ্যেই সিলকোটের অস্তিত্ব নেই। সড়কের দুপাশের অবস্থা আরও ভয়াবহ।

কত মিলি সিলকোট দরপত্রে ধরা আছে এবং কাজের তথ্য জানতে চাইলে শেরপুর সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন- যতটুকু মাপার ছিল, কাজ যা ধরা ছিল সঠিক ভাবেই করা হয়েছে। আপনারা মেপে দেখুন।’

সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. লিটন হোসেন বলেন, সিলকোট কাজে থিকনেস ধরা থাকে না। গর্তে যে রাফ সারফেস থাকে সেখানেই ৮-১০ মিলি চলে যায়। আমরা টেককোট দিয়ে ওপরে বালু দিয়ে রোলার করে দেই। তিনি আরও বলেন রাংটিয়া থেকে নকশি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক খুব ভালো আছে। তারপরে ১৫০ মিটার উঠে গেছে। সম্ভবত সিলকোট পুড়ে ফেলেছে। মিস্ত্রিকে বলেছি। ঠিক করে দেবে।

এ ব্যাপারে শেরপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মো. শরীফুল আলম বলেন, সিলকোট করতে গেলে অনেক গর্ত বন্ধ করতে হয়। ফলে ১২ মিলি ধরা থাকলেও অনেক জায়গায় বেশি সিলকোট ফেলতে হয়। যদি কোনো সমস্যা থাকে আমি দেখবো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত