চয়ন বিকাশ ভদ্র
প্রকৃতি কী এক অদ্ভুত খেলা খেলে আমাদের সঙ্গে! ধরুন, একদিন শুনলেন সুন্দর হলুদ হলুদ ফুলের জন্য পরিচিত যে শিয়ালকাঁটা, সেটি একই সঙ্গে বিষাক্ত ও ঔষধিগুণসম্পন্ন! অর্থাৎ এটি খেলে আপনি মারাও যেতে পারেন, আবার এটির অনেক গুণ আপনাকে ভালো রাখতে পারে। জেনে অবাক হবেন, এর কাণ্ড কোথাও কোথাও খাওয়া হয়!
শিয়ালকাঁটা জন্মায় কোনো যত্ন ছাড়া। এটি অল্প শাখাবিশিষ্ট গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। কাণ্ড ভাঙলে হলদে কষ বের হয়। এই কষ গবাদিপশুর জন্য বিষাক্ত। ফল অনেকটা ডিম্বাকার ও লম্বায় ১ থেকে ১২ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এর মধ্যে সরিষার মতো কালো রঙের বীজ থাকে। শিয়ালকাঁটা গ্রীষ্মকালে মারা যায়, শরৎকালে মাটিতে পড়ে থাকা কালো রঙের বীজ থেকে নতুন গাছ জন্মায়। এর সংস্কৃত নাম শৃগাল কণ্টক। গাছটির অন্যান্য নাম স্বর্ণক্ষীরা, স্বর্ণমুদ্রা, রুক্সিণী, সুবর্ণা, হেমদুগ্ধী, কাঞ্চনী ইত্যাদি। ইংরেজিতে শিয়ালকাঁটা মেক্সিকান পপি, মেক্সিকান প্রিকলি পপি, কারডো ইত্যাদি নামে পরিচিত।
এই গাছের কাণ্ড দেখতে কিছুটা শিয়ালের লেজের মতো এবং এর গা-ভর্তি কাঁটা। এ জন্যই এর নাম শিয়ালকাঁটা। বেলেমাটিতে ভালো জন্মায়। এর ডাঁটা রান্না করে খাওয়া যায়।
এর বৈজ্ঞানিক নাম আর্জিমোন মেক্সিকানা, এটি প্যাপেভারেসি গোত্রের গাছ। এর কাণ্ড, পাতা ও ফলে কাঁটা থাকে। এর ফুলে পাপড়ি থাকে ৬টি। এর বীজ ও মূলের নির্যাস থেকে তেল আহরণ করা যায়। এই তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালানো যায়। এর নির্যাসকে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
এই গাছ মেক্সিকো থেকে সারা বিশ্বে আগাছা হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় আর্জিমা মানে চোখের ছানি। এই গাছের রস চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হতো বলে এর গণের নাম আর্জিমোন এবং মেক্সিকোয় পাওয়া যায় বলে প্রজাতিক পদ মেক্সিকানা। এর গাঢ় সবুজ কাণ্ড ও পাতায় সাদাটে ছিট থাকে। এর পাতা ঢেউখেলানো ও খণ্ডিত। প্রতিটি খণ্ডের মাথায় কাঁটা থাকে। এই গাছ দেখতে অনেকটা পপিগাছের মতো। তাই একে মেক্সিকান পপিও বলা হয়।
মেক্সিকো থেকে হন্ডুরাস পর্যন্ত বিস্তৃত জায়গার স্থানীয় এই বুনোফুল প্রায় ৫০০ বছর আগে আমাদের দেশের প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ষোড়শ শতকের দিকে স্প্যানিশ বাণিজ্যিক জাহাজে আলুর বস্তা ও মাটির সঙ্গে এই গাছের সরিষার মতো ছোট ছোট বীজ চলে এসেছিল এ দেশে। এভাবেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটি।
কলকাতা ও দিল্লির আশপাশে এর বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৬৫ জন মানুষ মারা যায়। এই বিষক্রিয়ার লক্ষণ শরীরে পানি জমে যাওয়া। এ গাছের রসে আছে কয়েক ধরনের অ্যালকালয়েডস।
শিয়ালকাঁটা ভেষজগুণে পরিপূর্ণ। এই গাছ কৃমি, পিত্ত ও কফনাশক। জ্বর ও মূত্রকৃচ্ছ্র রোগে কার্যকর। মূলের রস কুষ্ঠরোগ নিরাময়ে কাজে লাগে। গাছের পীত বর্ণের নির্যাস গনোরিয়া ও উপদংশ রোগে বেশ উপকারী। রক্তের ক্ষমতা তৈরিতে, নতুন রক্ত তৈরিতে, দেহের ক্ষয়পূরণে, পেটের যাবতীয় রোগ নিরাময়ে শিয়ালকাঁটা ব্যবহৃত হয়।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ
প্রকৃতি কী এক অদ্ভুত খেলা খেলে আমাদের সঙ্গে! ধরুন, একদিন শুনলেন সুন্দর হলুদ হলুদ ফুলের জন্য পরিচিত যে শিয়ালকাঁটা, সেটি একই সঙ্গে বিষাক্ত ও ঔষধিগুণসম্পন্ন! অর্থাৎ এটি খেলে আপনি মারাও যেতে পারেন, আবার এটির অনেক গুণ আপনাকে ভালো রাখতে পারে। জেনে অবাক হবেন, এর কাণ্ড কোথাও কোথাও খাওয়া হয়!
শিয়ালকাঁটা জন্মায় কোনো যত্ন ছাড়া। এটি অল্প শাখাবিশিষ্ট গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। কাণ্ড ভাঙলে হলদে কষ বের হয়। এই কষ গবাদিপশুর জন্য বিষাক্ত। ফল অনেকটা ডিম্বাকার ও লম্বায় ১ থেকে ১২ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এর মধ্যে সরিষার মতো কালো রঙের বীজ থাকে। শিয়ালকাঁটা গ্রীষ্মকালে মারা যায়, শরৎকালে মাটিতে পড়ে থাকা কালো রঙের বীজ থেকে নতুন গাছ জন্মায়। এর সংস্কৃত নাম শৃগাল কণ্টক। গাছটির অন্যান্য নাম স্বর্ণক্ষীরা, স্বর্ণমুদ্রা, রুক্সিণী, সুবর্ণা, হেমদুগ্ধী, কাঞ্চনী ইত্যাদি। ইংরেজিতে শিয়ালকাঁটা মেক্সিকান পপি, মেক্সিকান প্রিকলি পপি, কারডো ইত্যাদি নামে পরিচিত।
এই গাছের কাণ্ড দেখতে কিছুটা শিয়ালের লেজের মতো এবং এর গা-ভর্তি কাঁটা। এ জন্যই এর নাম শিয়ালকাঁটা। বেলেমাটিতে ভালো জন্মায়। এর ডাঁটা রান্না করে খাওয়া যায়।
এর বৈজ্ঞানিক নাম আর্জিমোন মেক্সিকানা, এটি প্যাপেভারেসি গোত্রের গাছ। এর কাণ্ড, পাতা ও ফলে কাঁটা থাকে। এর ফুলে পাপড়ি থাকে ৬টি। এর বীজ ও মূলের নির্যাস থেকে তেল আহরণ করা যায়। এই তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালানো যায়। এর নির্যাসকে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
এই গাছ মেক্সিকো থেকে সারা বিশ্বে আগাছা হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাচীন গ্রিক ভাষায় আর্জিমা মানে চোখের ছানি। এই গাছের রস চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হতো বলে এর গণের নাম আর্জিমোন এবং মেক্সিকোয় পাওয়া যায় বলে প্রজাতিক পদ মেক্সিকানা। এর গাঢ় সবুজ কাণ্ড ও পাতায় সাদাটে ছিট থাকে। এর পাতা ঢেউখেলানো ও খণ্ডিত। প্রতিটি খণ্ডের মাথায় কাঁটা থাকে। এই গাছ দেখতে অনেকটা পপিগাছের মতো। তাই একে মেক্সিকান পপিও বলা হয়।
মেক্সিকো থেকে হন্ডুরাস পর্যন্ত বিস্তৃত জায়গার স্থানীয় এই বুনোফুল প্রায় ৫০০ বছর আগে আমাদের দেশের প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ষোড়শ শতকের দিকে স্প্যানিশ বাণিজ্যিক জাহাজে আলুর বস্তা ও মাটির সঙ্গে এই গাছের সরিষার মতো ছোট ছোট বীজ চলে এসেছিল এ দেশে। এভাবেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটি।
কলকাতা ও দিল্লির আশপাশে এর বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৬৫ জন মানুষ মারা যায়। এই বিষক্রিয়ার লক্ষণ শরীরে পানি জমে যাওয়া। এ গাছের রসে আছে কয়েক ধরনের অ্যালকালয়েডস।
শিয়ালকাঁটা ভেষজগুণে পরিপূর্ণ। এই গাছ কৃমি, পিত্ত ও কফনাশক। জ্বর ও মূত্রকৃচ্ছ্র রোগে কার্যকর। মূলের রস কুষ্ঠরোগ নিরাময়ে কাজে লাগে। গাছের পীত বর্ণের নির্যাস গনোরিয়া ও উপদংশ রোগে বেশ উপকারী। রক্তের ক্ষমতা তৈরিতে, নতুন রক্ত তৈরিতে, দেহের ক্ষয়পূরণে, পেটের যাবতীয় রোগ নিরাময়ে শিয়ালকাঁটা ব্যবহৃত হয়।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫