Ajker Patrika

বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মে ২০২২, ২০: ০৫
বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

ঝালকাঠি পৌর শহরে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিতভাবে নালা নির্মাণের কারণে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় পৌরবাসীকে।

পৌরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, যত্রতত্র ময়লা ফেলায় নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আর অর্থের অভাবে নালার নির্মাণকাজ অসমাপ্ত রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, একটু বৃষ্টি হলে শহরের বড় মাছবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি, টিনপট্টিসহ একাধিক এলাকায় পানি জমে যায়। পানি নিষ্কাশনে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে দুর্ভোগে পড়েন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। আগামী বর্ষা মৌসুমে এ জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করবে বলে পৌরবাসীর আশঙ্কা। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে পুরো শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।

পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি পৌর শহরের ৯টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১০০ টন বর্জ্য হয়। এর মধ্যে পলিথিন ও প্লাস্টিকজাত বর্জ্য থাকে প্রায় ২৫ টন। ঝালকাঠিতে কোনো ভাগাড় না থাকায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সুগন্ধা ও বাসন্ডা নদীতে এসব আবর্জনা ফেলছেন। এ ছাড়া আরও কয়েক টন গৃহস্থালি বর্জ্য বিচ্ছিন্নভাবে নালা-খালে ফেলা হচ্ছে। এতে শহরে প্রবাহিত ৭টি খাল ও অধিকাংশ নালা ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এদিকে পৌর কর্তৃপক্ষ জলবায়ু প্রকল্পের আওতায় শহরের ৭টি খালের মধ্যে নালা তৈরির কাজ শুরু করে। এর মধ্যে কোনো নালা ২০০ মিটার, আবার কোনোটি ৩০০ মিটার নির্মাণের পর বরাদ্দের অভাবে ফেলে রাখা হয়েছে। চলমান প্রকল্পের আওতায় খালের মধ্যে বাঁধ দেওয়ার কারণেও পানি প্রবাহিত হতে পারছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

শহরের বাসিন্দা ও বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর দাবি, নালাগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ধরনের নালা নির্মাণ না করে নিয়মিত খাল পরিষ্কারের পাশাপাশি খননের মাধ্যমে খালের গভীরতা বাড়ানোর দাবি তাঁদের।

বড় মাছবাজারের ব্যবসায়ী খবির হোসেন বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতে বাজারে পানি জমে যায়। পানি জমলে নালাগুলো থেকেও পানি সরানো যায় না। জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।’

কাপুড়িয়াপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, কাপুড়িয়াপট্টি এলাকার খালে প্রায় সময় পলিথিন-ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। এ জন্য বর্ষা মৌসুমে বাজারে পানি জমে থাকে। ওই সময় বাজারে বেচাকেনাও কমে যায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জানে আলম বলেন, নালা নির্মাণ না করে খালগুলো পুনরুদ্ধার করা প্রয়োজন। নালা নির্মাণ করা হলেও সেগুলো যদি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে জলাবদ্ধতার কোনো স্থায়ী সমাধান হবে না।

ঝালকাঠি সদরের সহকারী ভূমি কার্যালয় ও পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ আমল থেকে ঝালকাঠি পৌর শহরে প্রবাহিত ছোট-বড় ৭টি খালের প্রস্থ ৩০ থেকে ৪০ ফুট। জলবায়ু প্রকল্পের আওতায় এ খালগুলোর মধ্যে গত বছর শুরু হওয়া নির্মাণাধীন নালাগুলোর প্রস্থ ধরা হয়েছে ১০ ফুট প্রস্থ ও ৭ ফুট গভীর। জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের পাশের খাল, গোরস্থানের সামনের খাল, ফকিরবাড়ির খালের প্রায় ৫০০ মিটার নালার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব খালের ১০ ফুট প্রস্থ বাদ দিয়ে দুই পাশের বাসিন্দারা অবশিষ্ট জমি দখলে নিয়েছেন।

ঝালকাঠি পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা বিভাগের পরিদর্শক জাহিদ হোসেন জানান, ৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রতিদিন সড়ক ও নালা থেকে প্রায় ১০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করেন। নিজস্ব ভাগাড় নির্মাণ হলেই সুগন্ধা ও বাসন্ডা নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা হবে। তবে পৌর বাসিন্দারা সচেতন না হলে খাল-নালা পরিষ্কার রাখা কঠিন হবে।

ঝালকাঠি পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, প্রতি সপ্তাহে খাল-নালা পরিষ্কার করার পরও পৌরসভার বাসিন্দারা যত্রতত্র বর্জ্য ফেলছেন। এতে সেগুলো আবার ভরে যাচ্ছে। এদিকে অর্থ বরাদ্দের অভাবে জলবায়ু প্রকল্পের নালা নির্মাণের কাজ থেমে আছে। বরাদ্দ থাকলে চলতি বছরেই নালার নির্মাণকাজ শেষ হতো। কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতার নিরসন হবে। তবে পৌর শহর সুন্দর রাখতে সবার সহযোগিতা ও সচেতনতা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত