Ajker Patrika

সংস্কার নেই, যোগাযোগ বন্ধ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫৩
সংস্কার নেই, যোগাযোগ বন্ধ

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় কুমার নদের ভাঙনে চার মাসের বেশি সময় ধরে বিচ্ছিন্ন হওয়া সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সড়কপথে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে নিয়মিত চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষ।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে নদীভাঙন থেকে ফসলি জমি রক্ষা করার জন্য গোয়ালবাথান থেকে কালীবাড়ি বাজার পর্যন্ত ৪ দশমিক ২০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রথমে ৯ ও পরে ১৪ ফুটের একটি পাকা রাস্তা নির্মাণ করে এলজিইডি। গত বছরের অক্টোবরে কুমার নদের পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গোয়ালবাথান এলাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনে সড়কটির দুটি অংশে প্রায় ২০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ ছাড়া সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা যায়। ভাঙন থেকে সড়কটি রক্ষায় গত সেপ্টেম্বর মাসে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়। তারপরও সড়কটির বড় একটি অংশ ধীরে ধীরে কুমার নদে ধসে পড়ে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় সড়কের ওই অংশে নতুন করে ভাঙন দেখা না দিলেও সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

সরেজমিন দেখা যায়, রাজৈর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে গোয়ালবাথান-কালীবাড়ি সড়ক। এই সড়ক মূলত টেকেরহাট-কালীবাড়ি ফিডার সড়ক নামে পরিচিত। পাকা এই সড়ক দিয়ে ৩০০ মিটার এগোলেই পরপর দুটি স্থানে ভাঙন দেখা যাবে। কুমার নদের ভয়াবহ ভাঙনে গোয়ালবাথান এলাকার ওই দুটি স্থানে ১৫-২০ ফুট ধস নেমেছে। ভাঙনের স্থানে ১৪ ফুট সড়কের ১৩ ফুটই ধসে গেছে। বাকি অংশে সড়কটির কার্পেটিং, বিটুমিন, ইট, বালুসহ জমির মাটি খসে নদের পাড়ে পড়ছে।

সড়কটির অন্য পাশে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, উঁচু স্থানে রয়েছে বসতঘরও। সড়কটি দিয়ে দুই বা তিন চাকার কোনো যানবাহন চলতে পারছে না। উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাঁদের তিন থেকে চার কিলোমিটার পথ হেঁটে যানবাহনে উঠতে হয়। নয়তো উল্টো পথে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে যানবাহনে করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়।

সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ব্যবসায়ী আল-আমীন বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে আগে ভ্যানে মালামাল নিতাম, এখন মাথায় করে মালামাল টানতে হয়। ভ্যান বা অন্য গাড়ি এই পথে চলার কায়দা নাই।’

গোয়ালবাথান এলাকার কৃষক ভীম মণ্ডল বলেন, ‘সড়কটির এপারে আমার চার বিঘা ধানি জমি। এই শীতকালের মধ্যে রাস্তা ঠিক না হলে এই ধানি জমি আর টিকবে না। সামনের বর্ষায় আবার নদীভাঙনে রাস্তার সঙ্গে থাকা বাকি বাঁধটুকু ভেঙে পড়বে। রাস্তাটা পুরোপুরি ধসে গেলে আমাদের জমিজমা যা আছে সব শেষ।’

হরিদাসদী এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি শনি ও বুধবার হাটবার। এই দুদিন এই এলাকার বহু মানুষ কৃষিপণ্য হাটে নিয়ে যায়। রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় এসব পণ্য হাটে নিতে কৃষকদের খুব কষ্ট হয়। আমরা দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাই।’

ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘সড়কটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ। আমরা বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে রাস্তা করেছি। এখন তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করে দিলে সড়কটি আবার আগের মতো আমরা সংস্কার করে দেব।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা নকশার কাজ শেষ করে আবেদন পাঠিয়েছি। এখন বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত