Ajker Patrika

পণ্যমূল্যে দিশেহারা মানুষ

শাহীন রহমান, পাবনা
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১২: ২৯
পণ্যমূল্যে দিশেহারা মানুষ

সারা দেশের মতো ঝিনাইদহেও নিত্যপণ্যের দামে বেড়ে চলেছে। চাল থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস অবস্থা স্থানীয়দের।

গতকাল ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় সব জিনিসের। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিকন চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকায়। এই সপ্তাহে তা বেড়ে হয়েছে ৫৭ টাকা।

এ দিকে আকাশ ছুঁই ছুঁই আটার দাম। গত সপ্তাহে এক কেজি আটার দাম ৩৪ টাকা থাকলেও রোববার তা ৩৮ টাকা বিক্রি হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বেড়ে ৪২ টাকা হতে পারে বলছেন বিক্রেতারা। ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে নয় টাকা। কেজিতে তিন টাকা বেড়েছে চিনির দাম।

গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৫৪ টাকায়। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী পাঁচ দিনের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে চার শতাংশ।

এ দিকে প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। আদা ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা করে। আর রসুনের কেজি ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা।

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সবজির দামও এখন চড়া।

শরিফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাজার থেকে পণ্য কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। মানুষের আয়ের যে অবস্থা তার সঙ্গে বাজার দরের কোনো মিল নেই। এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছি। কিন্তু সব দোকানেই দাম বেশি। জিনিসপত্রের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে একটা সময় না খেয়ে থাকতে হবে আমাদের।

আব্দুল্লাহ নূর তুষার নামের এক দিনমজুর বলেন, ‘আমাদের আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হচ্ছে। দিনমজুরি করে সারা দিন যে টাকা আয় করি বাজার করতে গেলে তা সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। সংসারের অন্য খরচ তো আছেই। এমন হলে বেঁচে থাকাটাই কষ্ট হয়ে পড়বে।’

বাজার করতে করতে আসা সোহেল রানা বলেন, ‘সপ্তাহ ধরে ক্রমেই বাড়ছে মানুষের নিত্যপণ্যের দাম। পরিবার পরিজন নিয়ে দুবেলা দু মুঠো খেয়ে বাঁচার উপায় থাকছে না আর। একটু মুরগির মাংস, সবজি কিনব তার দামও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। মহামারির কারণে কপাল পুড়েছে মানুষের। মহামারির সময় যাদের চাকরি চলে গেছে, তাদের বেশির ভাগই চাকরি ফিরে পাননি। বিপুলসংখ্যক মানুষের বেতন ভাতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা বাড়ানোর কোনো আলোচনা কোথাও নেই। এই পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের বাজারের আগুন মানুষকে ভালোভাবেই ভোগাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা মার্কেটিং অফিসার গোলাম মারুফ খান জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনি ও তেলের দাম বেশি এজন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করছি। তিনি আরো জানান প্রতিদিন বাজার তদারকির কাজ চলছে। কেউ অতিরিক্ত দামে কোন জিনিস বিক্রি করতে না পারে এজন্য আমাদের টিম কাজ করছে। যারা অতিরিক্ত দামে জিনিস বিক্রি করছে তাদের বিভিন্ন অংকে জরিপানা করা হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত