মহিউদ্দিন খান মোহন

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর গদি রক্ষার জন্য আইয়ুব খান আন্দোলনের শেষদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করলেন। প্রস্তাব করলেন শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেবেন সে বৈঠকে অংশ নিতে। শেখ মুজিবও প্রথমদিকে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আপসনামায় স্বাক্ষর করার ঠিক আগমুহূর্তে বেগম মুজিবের আগমন ও পরামর্শ সবকিছু পাল্টে দেয়। প্যারোলে মুক্তি নিতে অস্বীকার করেন তিনি। (সূত্র: বাংলাদেশ: স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা, মওদুদ আহমদ)
উপায় না দেখে আইয়ুব খান তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) গণসংবর্ধনায় তৎকালীন ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদ (বর্তমানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী) তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। আওয়ামী লীগসহ ডানপন্থী দলগুলো গোলটেবিল বৈঠকের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলেও মওলানা ভাসানীর ন্যাপ ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর পিপলস পার্টি গোলটেবিল বৈঠকের নামে আপসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছিল সোচ্চার। মওলানা ভাসানী শেখ মুজিবকে গোলটেবিলে যেতে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন, এ থেকে পূর্ব বাংলার মানুষের মুক্তি আসবে না। মওলানার গোলটেবিল বৈঠক বিরোধিতাকে আমলে নেননি বঙ্গবন্ধু। তবে গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ঢাকা প্রত্যাবর্তন করলে তেজগাঁও বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শেখ মুজিব ‘পূর্ব পাকিস্তানের আচকান-পাঞ্জাবি পরা’ রাজনৈতিক নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মওলানা ভাসানীকে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। (সূত্র: আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৭-১৯৭০, মহিউদ্দিন আহমদ, পৃষ্ঠা-১৯৮)
শেখ মুজিবুর রহমান মওলানা ভাসানীকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর কথাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল। গোলটেবিল বৈঠক কোনো সাফল্য বয়ে আনেনি। তবে মওলানা হুজুরকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন শেখ মুজিব। তিনি বৈঠকে যাওয়ার আগে হুজুরকে কথা দিয়েছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের দাবির প্রশ্নে কোনো আপস করবেন না, করেনওনি। তো গোলটেবিল বৈঠক নিয়ে যখন পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়, তখন এর বিরোধীরা স্লোগান দিত, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’। ‘গোলটেবিল না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’। উল্লেখ্য, কিশোরকাল থেকে বামপন্থী রাজনীতিতে দীক্ষা নেওয়া আমিও এই স্লোগান দিয়েছি বড় ভাইদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে।
রাজনীতিতে সংগ্রাম এবং আপসের অবস্থান খুব কাছাকাছি, মানবদেহের দুই চোখের মতো। দুই ইঞ্চি দূরত্বের মধ্যে তাদের অবস্থান হলেও একে অপরের দর্শন পায় না আরশির সামনে না দাঁড়ানো পর্যন্ত। রাজনীতিতে আন্দোলন-সংগ্রাম যেমন অনেক সময় লক্ষ্য অর্জনের জন্য মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার নজির আছে, পাশাপাশি আপস বা সমঝোতার গুরুত্বও কম নয়। কখনো কখনো চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপসের রাস্তায় হাঁটতে হয়। চিরকাল আপসহীন থাকা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে নীতির প্রশ্নে কেউ কেউ নিরাপদ থেকে লক্ষ্য অর্জনে সফলও হন। যেমন হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। স্বৈরশাসক এরশাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসা তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছিল। তিনি অভিষিক্ত হয়েছিলেন ‘আপসহীন নেত্রী’র অভিধায়। তবে রাজনীতিতে সব সময় আপসহীন থাকা চলে না; বিশেষ করে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তো আরও নয়। এখানে যিনি যত কৌশল অবলম্বন করতে পারেন, তিনি তত সাফল্য পান। গণতন্ত্রকে বলা হয় ‘আর্ট অব কম্প্রোমাইজিং’।
এখানে নীতির প্রশ্নে আপসহীনতা যেমন সাফল্যের অন্যতম নিয়ামক, তেমনি বৃহত্তর স্বার্থে সমঝোতারও বিকল্প থাকে না। এই সমঝোতাকে অবশ্য অনেকে ‘আপস’ বলে অভিহিত করে থাকেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ‘আপস’সংক্রান্ত একটি উক্তি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সামাজিক মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়েছে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। ৩ অক্টোবর ঢাকা জেলার সাভারের আমিনবাজারে দলীয় এক শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারসাম্য করে ফেলেছেন’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘কোথায় নিষেধাজ্ঞা? কোথায় ভিসা নীতি? তলে তলে আপস হয়ে গেছে। আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, আমরা আছি, দিল্লি আছে, আমরা আছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এমন ভারসাম্য সবার সঙ্গে করে ফেলেছেন, আর কোনো চিন্তা নাই। নির্বাচন হবে।’ (আজকের পত্রিকা, ৪ আগস্ট, ২০২৩)।
ওবায়দুল কাদেরের কথাগুলো পত্রিকায় পাঠ করে মনে হলো, বিপদ কেটে যাওয়ায় উল্লসিত কোনো ব্যক্তি তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। একটি সরকারকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় ডিল করতে হয়। এসব করতে গিয়ে কখনো কখনো নিজের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে গিয়ে সমঝোতা করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। সেটাকে ‘আপস’ না বলে সমঝোতা বলাই শ্রেয়। কেননা, আপস কথাটির মধ্যে ‘আত্মসমর্পণ’ জাতীয় একটি নেতিবাচক গন্ধ আছে, যা একটি দল বা সরকার সম্বন্ধে জনমনে ভিন্ন রকম ধারণা সৃষ্টি করতে পারে। আমি জানি না, বক্তব্য-বিবৃতির জন্য সরকারের মন্ত্রী বা দলীয় নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করতে হয় কি না। হলে অবশ্যই তাঁরা বাকসংযমী হতেন, কথা বলার সময় আগপিছ ভাবতেন।
ওবায়দুল কাদের যে আপসের কথা বলেছেন, তা কার কার সঙ্গে হয়েছে, সেটা পরিষ্কার করেননি। কোন ইস্যুতে এবং কিসের বিনিময়ে এই আপস তা-ও খোলাসা করেননি। অবশ্য কারও কারও ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে খবরদারি এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছিল, তাঁদের আশ্বস্ত ও উদ্দীপ্ত করতেই কাদের সাহেব ওই কথা বলেছেন। আর এখানেই মূল প্রশ্নটি এসে যায়। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলে থাকেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাঁদের সঙ্গে আছেন। যদি তা-ই হয়, তাহলে ব্যাপক ‘জনসমর্থনপুষ্ট’ একটি রাজনৈতিক দল কেন ভিনদেশি কোনো সরকারের চাপে চিন্তিত হবে? অবশ্য তারা সব সময়ই বলে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি বা স্যাংশনকে পরোয়া করেন না। নীতির প্রশ্নে স্বচ্ছ অবস্থানে থাকা একটি সরকারের পক্ষে সেটাই স্বাভাবিক। কেননা, একটি দল বা সরকারের মূল শক্তি জনগণ। তারা যখন সরকারের পক্ষে থাকে, তখন কোনো শক্তিরই সাধ্য নেই সেই সরকারকে চাপে ফেলার।
এটা এখন সর্বজনবিদিত যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি বৃহৎ শক্তির চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। এই পরিস্থিতিতে ‘আপস’ হয়ে গেছে বলে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী যখন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, তখন প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক—কিসের বিনিময়ে হলো এই আপস? তা ছাড়া কাদের সাহেবের ‘আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, আমরা আছি, দিল্লি আছে, আর চিন্তা নাই’ কথাগুলো একটি দল বা সরকারের জন্য কতটুকু সম্মানজনক তা-ও ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। এ থেকে এই ধারণার সৃষ্টি হতে পারে যে, মুখে তাঁরা যতই জনসমর্থনের কথা বলুন, তাঁদের ভরসাস্থল সীমান্তের বাইরে। কথায় আছে ‘ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা যখন’। রাজনীতিতে তা হওয়া উচিত ‘ভাবিতে উচিত ছিল বলিবে যখন’।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার পর গদি রক্ষার জন্য আইয়ুব খান আন্দোলনের শেষদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করলেন। প্রস্তাব করলেন শেখ মুজিবুর রহমানকে প্যারোলে মুক্তি দেবেন সে বৈঠকে অংশ নিতে। শেখ মুজিবও প্রথমদিকে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আপসনামায় স্বাক্ষর করার ঠিক আগমুহূর্তে বেগম মুজিবের আগমন ও পরামর্শ সবকিছু পাল্টে দেয়। প্যারোলে মুক্তি নিতে অস্বীকার করেন তিনি। (সূত্র: বাংলাদেশ: স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা, মওদুদ আহমদ)
উপায় না দেখে আইয়ুব খান তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন। ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) গণসংবর্ধনায় তৎকালীন ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদ (বর্তমানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী) তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। আওয়ামী লীগসহ ডানপন্থী দলগুলো গোলটেবিল বৈঠকের ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলেও মওলানা ভাসানীর ন্যাপ ও জুলফিকার আলী ভুট্টোর পিপলস পার্টি গোলটেবিল বৈঠকের নামে আপসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছিল সোচ্চার। মওলানা ভাসানী শেখ মুজিবকে গোলটেবিলে যেতে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন, এ থেকে পূর্ব বাংলার মানুষের মুক্তি আসবে না। মওলানার গোলটেবিল বৈঠক বিরোধিতাকে আমলে নেননি বঙ্গবন্ধু। তবে গোলটেবিল বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ঢাকা প্রত্যাবর্তন করলে তেজগাঁও বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শেখ মুজিব ‘পূর্ব পাকিস্তানের আচকান-পাঞ্জাবি পরা’ রাজনৈতিক নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মওলানা ভাসানীকে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। (সূত্র: আওয়ামী লীগ: উত্থানপর্ব ১৯৪৭-১৯৭০, মহিউদ্দিন আহমদ, পৃষ্ঠা-১৯৮)
শেখ মুজিবুর রহমান মওলানা ভাসানীকে অবসরে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর কথাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল। গোলটেবিল বৈঠক কোনো সাফল্য বয়ে আনেনি। তবে মওলানা হুজুরকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন শেখ মুজিব। তিনি বৈঠকে যাওয়ার আগে হুজুরকে কথা দিয়েছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের দাবির প্রশ্নে কোনো আপস করবেন না, করেনওনি। তো গোলটেবিল বৈঠক নিয়ে যখন পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়, তখন এর বিরোধীরা স্লোগান দিত, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’। ‘গোলটেবিল না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’। উল্লেখ্য, কিশোরকাল থেকে বামপন্থী রাজনীতিতে দীক্ষা নেওয়া আমিও এই স্লোগান দিয়েছি বড় ভাইদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে।
রাজনীতিতে সংগ্রাম এবং আপসের অবস্থান খুব কাছাকাছি, মানবদেহের দুই চোখের মতো। দুই ইঞ্চি দূরত্বের মধ্যে তাদের অবস্থান হলেও একে অপরের দর্শন পায় না আরশির সামনে না দাঁড়ানো পর্যন্ত। রাজনীতিতে আন্দোলন-সংগ্রাম যেমন অনেক সময় লক্ষ্য অর্জনের জন্য মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার নজির আছে, পাশাপাশি আপস বা সমঝোতার গুরুত্বও কম নয়। কখনো কখনো চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপসের রাস্তায় হাঁটতে হয়। চিরকাল আপসহীন থাকা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে নীতির প্রশ্নে কেউ কেউ নিরাপদ থেকে লক্ষ্য অর্জনে সফলও হন। যেমন হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। স্বৈরশাসক এরশাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসা তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছিল। তিনি অভিষিক্ত হয়েছিলেন ‘আপসহীন নেত্রী’র অভিধায়। তবে রাজনীতিতে সব সময় আপসহীন থাকা চলে না; বিশেষ করে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তো আরও নয়। এখানে যিনি যত কৌশল অবলম্বন করতে পারেন, তিনি তত সাফল্য পান। গণতন্ত্রকে বলা হয় ‘আর্ট অব কম্প্রোমাইজিং’।
এখানে নীতির প্রশ্নে আপসহীনতা যেমন সাফল্যের অন্যতম নিয়ামক, তেমনি বৃহত্তর স্বার্থে সমঝোতারও বিকল্প থাকে না। এই সমঝোতাকে অবশ্য অনেকে ‘আপস’ বলে অভিহিত করে থাকেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ‘আপস’সংক্রান্ত একটি উক্তি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সামাজিক মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়েছে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। ৩ অক্টোবর ঢাকা জেলার সাভারের আমিনবাজারে দলীয় এক শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারসাম্য করে ফেলেছেন’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘কোথায় নিষেধাজ্ঞা? কোথায় ভিসা নীতি? তলে তলে আপস হয়ে গেছে। আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, আমরা আছি, দিল্লি আছে, আমরা আছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এমন ভারসাম্য সবার সঙ্গে করে ফেলেছেন, আর কোনো চিন্তা নাই। নির্বাচন হবে।’ (আজকের পত্রিকা, ৪ আগস্ট, ২০২৩)।
ওবায়দুল কাদেরের কথাগুলো পত্রিকায় পাঠ করে মনে হলো, বিপদ কেটে যাওয়ায় উল্লসিত কোনো ব্যক্তি তাঁর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। একটি সরকারকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় ডিল করতে হয়। এসব করতে গিয়ে কখনো কখনো নিজের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে গিয়ে সমঝোতা করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। সেটাকে ‘আপস’ না বলে সমঝোতা বলাই শ্রেয়। কেননা, আপস কথাটির মধ্যে ‘আত্মসমর্পণ’ জাতীয় একটি নেতিবাচক গন্ধ আছে, যা একটি দল বা সরকার সম্বন্ধে জনমনে ভিন্ন রকম ধারণা সৃষ্টি করতে পারে। আমি জানি না, বক্তব্য-বিবৃতির জন্য সরকারের মন্ত্রী বা দলীয় নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করতে হয় কি না। হলে অবশ্যই তাঁরা বাকসংযমী হতেন, কথা বলার সময় আগপিছ ভাবতেন।
ওবায়দুল কাদের যে আপসের কথা বলেছেন, তা কার কার সঙ্গে হয়েছে, সেটা পরিষ্কার করেননি। কোন ইস্যুতে এবং কিসের বিনিময়ে এই আপস তা-ও খোলাসা করেননি। অবশ্য কারও কারও ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে খবরদারি এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছিল, তাঁদের আশ্বস্ত ও উদ্দীপ্ত করতেই কাদের সাহেব ওই কথা বলেছেন। আর এখানেই মূল প্রশ্নটি এসে যায়। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলে থাকেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাঁদের সঙ্গে আছেন। যদি তা-ই হয়, তাহলে ব্যাপক ‘জনসমর্থনপুষ্ট’ একটি রাজনৈতিক দল কেন ভিনদেশি কোনো সরকারের চাপে চিন্তিত হবে? অবশ্য তারা সব সময়ই বলে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি বা স্যাংশনকে পরোয়া করেন না। নীতির প্রশ্নে স্বচ্ছ অবস্থানে থাকা একটি সরকারের পক্ষে সেটাই স্বাভাবিক। কেননা, একটি দল বা সরকারের মূল শক্তি জনগণ। তারা যখন সরকারের পক্ষে থাকে, তখন কোনো শক্তিরই সাধ্য নেই সেই সরকারকে চাপে ফেলার।
এটা এখন সর্বজনবিদিত যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি বৃহৎ শক্তির চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। এই পরিস্থিতিতে ‘আপস’ হয়ে গেছে বলে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী যখন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, তখন প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক—কিসের বিনিময়ে হলো এই আপস? তা ছাড়া কাদের সাহেবের ‘আমেরিকার দিল্লিকে দরকার, আমরা আছি, দিল্লি আছে, আর চিন্তা নাই’ কথাগুলো একটি দল বা সরকারের জন্য কতটুকু সম্মানজনক তা-ও ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। এ থেকে এই ধারণার সৃষ্টি হতে পারে যে, মুখে তাঁরা যতই জনসমর্থনের কথা বলুন, তাঁদের ভরসাস্থল সীমান্তের বাইরে। কথায় আছে ‘ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা যখন’। রাজনীতিতে তা হওয়া উচিত ‘ভাবিতে উচিত ছিল বলিবে যখন’।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্প
০৮ অক্টোবর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্প
০৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্প
০৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

উনসত্তরে আমি ছিলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের স্কুলটি ছিল থানা সদর শ্রীনগরে। সে সময় আমাদের দেশ, অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল আইয়ুববিরোধী গণ-আন্দোলনে উত্তাল। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি—আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। শেখ মুজিবকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্প
০৮ অক্টোবর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫