Ajker Patrika

স্কুলের অফিসকক্ষে কলাগাছ

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
স্কুলের অফিসকক্ষে কলাগাছ

অর্থ বরাদ্দের অভাবে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে থমকে ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যালয় কক্ষের নির্মাণকাজ। কক্ষটির চারপাশে দেয়াল নির্মাণের কাজ করা হলেও বরাদ্দ না থাকায় কক্ষের ভেতরে আস্তরণ ও ওপরের ছাউনি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে দীর্ঘদিন নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় কক্ষের ভেতরের একপাশ কলাগাছ ও বিভিন্ন ধরনের আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয় পড়লে বিদ্যালয়ের কার্যালয়ের কক্ষ সংস্কারের ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন। তিনি কক্ষটি সংস্কারে টিনের পাশাপাশি নগদ অর্থের ব্যবস্থা করেন।

শিক্ষকেরা জানান, অপর্যাপ্ত বরাদ্দের কারণে গত বছর মাঝপথে বিদ্যালয়ের কার্যালয় কক্ষের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে একাধিকবার জানালেও বরাদ্দ না থাকায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের একটিতে দাপ্তরিক কাজ সারছেন, শিক্ষকেরা বিশ্রাম নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার পর কক্ষ সংস্কারে এগিয়ে আসেন ইউএনও। তিনি উপজেলা থেকে লোক পাঠিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের পাশাপাশি কক্ষ সংস্কারে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের হিসাব নেন। এরপর গত বুধবার তিনি ওই কক্ষ সংস্কারে দুই বান টিন ও নগদ টাকা দেন করেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরজুমান বানু বলেন, ‘দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইউএনওর আন্তরিকতায় অফিস কক্ষ সংস্কারের ব্যবস্থা হয়েছে। আমরা খুবই আনন্দিত। এতে শ্রেণি কক্ষের সংকটের সমাধানের পাশাপাশি পাঠদানে গতিশীলতা ফিরে আসবে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুচ্ছোফা বলেন, ‘কক্ষটি সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, তবে বরাদ্দ না থাকায় করা সম্ভব হয়নি। তবে অফিস কক্ষের অভাবে শিক্ষকদের অসুবিধা ও পাঠদান ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ছাউনি নির্মাণসহ কক্ষটি সংস্কারে এগিয়ে আসেন ইউএনও। ওনার আন্তরিকতার কারণে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হয়েছে।’

নুরুচ্ছোফা আরও বলেন, ‘শুধু এবার নন, সীতাকুণ্ডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের শুরু থেকে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন শাহাদাত হোসেন। ইতিমধ্যে তিনি সাংসদের বরাদ্দ থেকে ৫০ লাখ ব্যয়ে উপজেলার ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবকেদের জন্য অপেক্ষমাণ কক্ষ ও ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ তৈরি করেছেন। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং এডিপি বরাদ্দ থেকে রুটিন কাজের বাইরে পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়ে বেঞ্চ ও গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। পাশাপাশি সরকারি একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পল্লিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছিল। গত এক বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বেতন পাচ্ছিলেন না। তিনি বেতন চালুর ব্যবস্থা করেছেন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম দিয়ে বিদ্যালয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্তভাবে পড়ে থাকা বিদ্যালয়ের কার্যালয় কক্ষের বিষয়টি ফেসবুক ও স্থানীয় সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পারি। এরপর আমি কক্ষ সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপের পর লোক পাঠিয়ে বরাদ্দের হিসাব আনি। কক্ষটির ছাউনি নির্মাণে উপজেলার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বরাদ্দ থেকে দুই বান টিন ও ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কক্ষটি সংস্কারে আরও কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তাও দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত