Ajker Patrika

মোহময় আশুরার বিল

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ৪৮
মোহময় আশুরার বিল

দিনাজপুরের আশুরার বিল প্রকৃতির অপার দান, সৌন্দর্যের লীলাভূমি। শালবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আশুরার বিল হয়ে উঠেছে মোহময়। আর এই সৌন্দর্যের টানে ছুটে আসেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। বিলটির আয়তন ৮৫৭ একরেরও বেশি, যার প্রায় ৫৯০ একর পড়েছে নবাবগঞ্জ উপজেলায় আর বাকি অংশ বিরামপুর উপজেলায়।

আশুরার বিল নিয়ে রয়েছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। কথিত কাহিনিগুলোর একটি হলো, অতি প্রাচীনকালে আধিপত্য বিস্তারে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে লড়াই হয়। সেই লড়াইয়ে পরাজিত হয় অসুরেরা। দেবতাদের খঞ্জরের আঘাতে অসুরদের শরীর থেকে ঝরা রক্তে ভরে গিয়েছিল তাদেরই পায়ে দেবে যাওয়া গর্ত। অসুরদের সেই কাহিনি থেকে ধীরে ধীরে এটির নাম হয় আশুরার বিল।

উদ্ভিদ, বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং পর্যটন সুবিধাদির উন্নয়নের লক্ষ্যে সেই শালবনকে ২০১০ সালে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে সরকার, স্থানীয়ভাবে তা শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান নামে পরিচিত। আগে এটি শুধু শালবন হিসেবে থাকলেও এখন সেখানে রয়েছে ২০-৩০ প্রজাতির গাছ। ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বিলে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ। ঐতিহ্যবাহী বিলটি উত্তরাঞ্চলের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এখন অন্যতম দর্শনীয় স্থান। কিন্তু অবৈধ দখলদারদের কারণে অচিরেই বিলটি হারাতে পারে তার ঐতিহ্য।

স্থানীয় প্রভাবশালীরা অপার সম্ভাবনার এই জলাশয় বাঁশের বেড়া আর মাচা দিয়ে দখল করে নেন। শীতে ধান চাষ করে তাতে কীটনাশক ব্যবহার করায় হারিয়ে যেতে থাকে দেশীয় প্রজাতির মাছ। কচুরিপানা আর বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায় জরাজীর্ণ রূপ নেয় আশুরা। বিলটিকে কৃষিজমি হিসেবে ব্যবহার করায় আশঙ্কাজনকভাবে এর পানি কমতে থাকে। বিলের অধিকাংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে যেতে থাকে এর সৌন্দর্য।

উপজেলা প্রশাসন আশুরার বিলের হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আগের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে বিলের পূর্ব অংশে পানি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় একটি ক্রস ড্যাম। ফলস্বরূপ বিলটিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্ম আর শাপলা ফুল ফুটতে থাকে। বৃদ্ধি পেতে থাকে লাল খলশে, কাকিলা, ধেধলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

দীর্ঘ দুই দশক পর শীতের ঠিকানা খুঁজে নিতে আবারো আশুরার বিলে ছুটে এসেছে বালিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, শামুকখোল, হট্টিটি, সাদা মানিকজোড়, রাঙামুডিসহ অন্যান্য প্রজাতির হাজারো পাখি। বিল আর বনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে কাঠের আঁকাবাঁকা সেতু। বন আর বিলকে একই সুতোয় গেঁথে দেওয়া ইংরেজি জেড আকৃতির এই সেতুর নামকরণ করা হয় ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা কাঠের সেতু’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত