Ajker Patrika

কোয়েলে ঘুচল বেকারত্ব

মেহেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৭: ৪৯
কোয়েলে ঘুচল বেকারত্ব

স্বল্প পুঁজিতে বেকারত্ব ঘুচাতে কোয়েল পাখি পালনে ঝুঁকছেন মেহেরপুরের অনেক বেকার যুবক। পাখি ও ডিমের চাহিদা ভালো থাকায় লাভবানও হচ্ছেন তাঁরা। তবে সম্প্রতি খাবার ও আনুষঙ্গিক জিনিসের দাম বাড়ায় কমেছে লাভের অঙ্ক।

প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, জেলায় কোয়েলের খামার রয়েছে ৩৫টি। এসব খামারে পাখির স্যখ্যা প্রায় ২০ হাজার।

মেহেরপুর শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার আবু তাহের। চালাতেন একটি রাইচ মিল। কিন্তু অব্যাহত লোকসানের মুখে পড়ে ২০১৭ সালে বন্ধ করে দেন মিলটি। খুঁজতে থাকেন নতুন একটি ব্যবসার। ২০১৮ সালে ইউটিউব থেকে তিনি খোঁজ পান কোয়েল পাখি পালন। ওই বছর বগুড়া থেকে সংগ্রহ করেন ১০০ কোয়েল পাখি। বাড়িতেই একটি রুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সেখানে শুরু করেন কোয়েল পাখি পালন। পরের বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজারে। চলতি বছরে তাহেরের খামারে পাখির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ হাজার। প্রতিদিন দুই হাজার ডিম পান খামার থেকে। প্রতিটি ডিম বিক্রি করেন ২ টাকা দরে। এতে প্রতিদিন খরচবাদে তাঁর আয় হয় দেড় হাজার টাকা। তবে এখন বাজার থেকে প্রতি বস্তা কোয়েলের খাবার কিনতে হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। ৫ মাস আগেও এ খাবারের দাম ছিল বস্তাপ্রতি ১ হাজার ৮০০ টাকা। বেড়েছে অন্যান্য ব্যয়ও। ফলে কমেছে লাভের অঙ্ক। এরপরও ডিম ও পাখি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন তিনি।

গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের ‘মা’ কোয়েল খামারের স্বত্বাধিকারী নাসির উদ্দীন জানান, কয়েক বছর আগেও তিনি ট্রাক্টর চালাতেন। বগুড়া জেলায় জমি চাষ করতে গিয়ে পরিচয় হয় এক কোয়েল পাখির খামারির সঙ্গে। সেখান থেকে ২০০ কোয়েল সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন খামার। এখন নিজ জেলা ছাড়াও কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা থেকে পাখি কিনতে আসে তাঁর কাছ থেকে। তিনি বগুড়ার একটি হ্যাচারি থেকে পাখি কিনে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করেন। এতে পাখি প্রতি এক টাকা লাভ থাকে। এ ছাড়া এখন তাঁর খামারে পাখি রয়েছে ১ হাজার ৪০০ টি।

সদর উপজেলার দফরপুর গ্রামের কোয়েল খামারি হিরক জানান, কোয়েলের রোগব্যাধি কম। তবে শীত ও বর্ষা মৌসুমে কিছু রোগ দেখা যায়। কোয়েল পাখির থাকার জায়গা সুন্দর করে ঘিরতে হবে। যাতে কোনোভাবেই বাইরের বাতাস ঢুকতে না পারে। তাহলেই রোগব্যাধি থেকে পাখিকে মুক্ত রাখা যাবে। খামারে অ্যামোনিয়া গ্যাস সৃষ্টি হলে পাখি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ ছাড়া পাখির খাবারের পাত্রগুলোও সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোয়েল পালনে শীত ও বর্ষার সময় খামারিদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, খাবারের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তাঁদের হাতে নেই। আর রোগব্যাধি দূর করতে খামারিদের শীতের আগেই অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যেই পাখিকে রানীক্ষেত ও বসন্ত রোগের টিকা দিতে হবে। ছোট বাচ্চার বসন্ত রোগের টিকা আর বড় পাখিদের রানীক্ষেত রোগের ভ্যাকসিন দিতে হবে। এ ছাড়াও পাখির ঘর শীতের সময় চট দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। আর রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। এ সময় পাখিদের প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়ানোর পরামর্শ তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত