Ajker Patrika

দখল, দূষণে শ্রীহীন

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০২
দখল, দূষণে শ্রীহীন

বরিশাল নগরীর কোল ঘেঁষে বয়ে গেছে কীর্তনখোলা নদী। এই নদীকে ঘিরেই নগরবাসীর জীবন। কিন্তু অবৈধ দখল, অপরিচ্ছন্ন আর বিশৃঙ্খলায় একাকার হয়ে গেছে কীর্তনখোলা নদী, বরিশাল নৌবন্দর ও আশপাশের এলাকা। এতে দিন দিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে কীর্তনখোলা, ঘটছে দূষণ।

গোটা বরিশাল নৌবন্দর হয়ে পড়েছে শ্রীহীন। নদী তীর ঘেঁষে অবৈধ দোকানপাট আর ময়লা আবর্জনার স্তূপে যেন একাকার হয়ে গেছে নৌবন্দরের আশপাশ।

গৃহিণী নাদিয়া আফরিন প্রতি মাসে রাজধানী থেকে বাবার বাড়ি বরিশালে গ্রিন লাইনে আশা-যাওয়া করেন। নৌযান থেকে নেমেই সামনে ময়লা আবর্জনা আর যানজটে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাকে। এই গৃহিণী বলেন, গ্রিন লাইনসহ বিভিন্ন লঞ্চে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আশা-যাওয়া করেন। কিন্তু নৌবন্দর এই হাল দেখে যাত্রীরা বরিশালে নেমেই হোঁচট খান।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বন্দর সংলগ্ন নদীর সৌন্দর্য নেই। নদীর তীর পুরোটাই দখল। কয়েক দিন আগে উচ্ছেদ করা হলেও ফের দোকানপাট উঠেছে। খেয়াঘাটে অবৈধ বাজার, দোকান। সারা দেশ থেকে যাত্রীরা এসে বন্দরের এমন চিত্র দেখে হতাশ হন।

জানতে চাইলে নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু এ বছরও নগরীর চরকাউয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন ডিসি ঘাটের পাশের নদীর তীরে নদী দিবস পালন করে কীর্তনখোলাকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। নৌবন্দর সংলগ্ন নদী তীর অবৈধ দোকানপাটে ভরে গেছে। পাশের কাঁচাবাজারের ময়লায় দুর্গন্ধ ছড়ায় ওখানে। দখল আর দূষণে কীর্তনখোলাকে গিলে ফেলছে একটি শ্রেণি। বিআইডব্লিউটিএ এমন সুযোগ করে দিচ্ছে।

এদিকে বরিশাল নৌবন্দর ঘুরে দেখা গেছে এর পন্টুনও দখল হয়ে গেছে অবৈধ ভাসমান দোকান ও মোটরসাইকেলে। নৌবন্দরের একাধিক স্টাফ জানান, মন্ত্রী, সচিব এলে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়। পরদিন আগের মতোই শ্রীহীন। তারা বলেন, বিভিন্ন জাহাজে ভিআইপি এমনকি বিদেশিরাও আসেন। তারা নেমেই ঘাটে এবং তীরের অপরিচ্ছন্নতা দেখে ক্ষুব্ধ হন।

পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক মুনাওয়ারুল ইসলাম অলি বলেন, চরকাউয়ার মানুষ নগরীতে ঢুকতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। খেয়াঘাটের আশপাশ দখল হয়ে আছে। নদী তীর সৌন্দর্যবর্ধন না করে বরং দখলের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে

এ ব্যাপারে বিআইডব্লিটিএ বরিশালের যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কীর্তনখোলা নদীর তীর দখলমুক্ত করতে যৌথ জরিপ চলছে। নদী তীরে ৪ হাজার ২১৯টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ উচ্ছেদ অভিযান করা হবে তার কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, কীর্তনখোলা নদীর তীরের দখল ও সৌন্দর্য নষ্টের জন্য কেবল নৌবন্দরকে দায়ী করলে চলবে না। এর সঙ্গে জড়িত অনেকেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...