Ajker Patrika

স্বামীকে হত্যার পর দাফনের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৫

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৮
স্বামীকে হত্যার পর  দাফনের চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৫

পোশাক শ্রমিক স্বামী প্রতীক হাসানকে হত্যা করে স্বাভাবিক মৃত্যু দাবি করে লাশ দাফন করার চেষ্টা করেন তাঁর স্ত্রী লিজা খাতুন (১৯)। পরে প্রতীকের পরিবার সন্দেহের বশে স্থানীয় থানা-পুলিশকে খবর দিলে বেরিয়ে আসে আসল কাহিনি। জানা যায়, প্রতীক হাসানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিজা, তাঁর প্রেমিক হাফিজুর মন্ডলসহ (৩৫) পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন লিজা।

এর আগে গত সোমবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রতীকের বাড়িতে তাঁর লাশ দাফনের চেষ্টা করেন লিজা ও তাঁর সহযোগীরা। পরে প্রতীক হাসানের পরিবারের সদস্যদের এ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। প্রতীকের বাবা বিল্লাল হোসেন ঘাটাইল থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাটাইল পুলিশের সন্দেহ হলে তারা আশুলিয়া থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পরে আশুলিয়া থানা-পুলিশ ঘাটাইলে গিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

লিজা ছাড়া গ্রেপ্তার বাকি আসামিরা হলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানার হাবিবর রহমানের ছেলে হাফিজুর মন্ডল, লিজার মা লাকী বেগম (৪০), হাফিজুরের বন্ধু সুজন মিয়া (২৪), লিজার দাদি ফুলজান (৫৮)। লিজার বাবা লেবু খান (৫০) এখনো পলাতক রয়েছেন। তাঁরা সবাই আশুলিয়ায় ভাড়া থাকতেন।

মামলার এজাহারে বিল্লাল হোসেন উল্লেখ করেন, ‘সোমবার ভোর রাতে আমাকে একজন জানায় আমার ছেলে মারা গেছে। পরে সকাল ১০টায় আমার ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসে লিজা ও তাঁর পরিবার। পরে ছেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা পুলিশে খবর দিই।’

বিল্লাল হোসেন আরও উল্লেখ করেন, ‘এর আগে গত ২০ নভেম্বর থেকে আমার ছেলের মোবাইল বন্ধ ছিল। লিজা ও লিজার বাবা-মাকে ফোন করা হলে তারাও রিসিভ করেননি। এ কারণে সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পায়।’

পুলিশ জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতীককে গলা চিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লিজা, লিজার বাবা, লিজার পরকীয়া প্রেমিক ও প্রেমিকের বন্ধু। এ হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনা দেন লিজার মা ও দাদি। পরে রাত আড়াইটার দিকে প্রতীককে আশুলিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। হাসপাতালে প্রতীক স্ট্রোক করেছে বলে জানান লিজা ও তাঁর সহযোগীরা। পরে লাশ গুম করার চেষ্টা চালান তাঁরা।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (এসআই) কায়সার হামিদ বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ঘাটাইল থানা-পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে প্রতীকের স্ত্রী লিজা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। লিজার বাবা পলাতক থাকলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

ঢাকা জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘লিজা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকিদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত