Ajker Patrika

দুই চোখে আলো নেই তবু থেমে নেই সজিব

সাগর খান, আদমদীঘি (বগুড়া)
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৪৬
দুই চোখে আলো নেই  তবু থেমে নেই সজিব

জন্মের পর এক চোখ দিয়ে ১০ বছর পর্যন্ত দেখেছেন। পড়েছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপরই দুর্ঘটনায় নষ্ট হয় আরেক চোখ। তারপরও থেমে থাকেননি তিনি। আট মাস আগে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন সান্তাহার ডিজিটাল পোস্ট অফিসে। এরপর করলেন কম্পিউটার মাল্টিমিডিয়ার দোকান।

বলা হচ্ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের শাহরিয়ার ইসলাম সজীবের কথা। বয়স ২৩ বছর। নতুন হাটখোলা মহল্লার বাসিন্দা তিনি। তিন ভাইবোনের মধ্যে সজীব দ্বিতীয়। সংসারের উপার্জনের দায়িত্ব তাঁর ওপরেই।

চোখে দেখতে না পারলেও অনায়াসে করতে পারেন কম্পিউটারের যেকোনো ধরনের কাজ। ‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, দৃষ্টিশক্তি কোনো বাধা নয়’—এমন প্রতিপাদ্যই সাহস জুগিয়েছে সজীবের মনে। অদম্য চেষ্টা, সাধনা আর একাগ্রতার কারণেই সম্ভব হয়েছে কম্পিউটার মাল্টিমিডিয়ার দোকান দেওয়ার।

শাহরিয়ার ইসলাম সজীব জন্মের পর এক চোখ দিয়ে ১০ বছর পর্যন্ত দেখেছেন। তখন লেখাপড়া করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত।

হাটখোলা মহল্লার বাসিন্দা মকবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও থেমে নেই শাহরিয়ারের প্রতিভা। অনায়াসে চালাতে পারেন কম্পিউটার। দিয়েছেন মাল্টিমিডিয়ার দোকান, কোরআন শরিফের পাঁচ পারার হাফেজও তিনি।’

পোস্ট অফিসপাড়ার মহল্লার বাসিন্দা গুড্ডু এহসান বলেন, সান্তাহার ডিজিটাল পোস্ট অফিস থেকে আট মাস আগে প্রশিক্ষণ নিয়ে অন্ধত্ব জীবনযাপনে চলাফেরা করে কম্পিউটার টাইপিং থেকে শুরু করে ফ্লেক্সিলোড, বিকাশ, অনলাইনে চাকরির আবেদনসহ নানা কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছেন শাহরিয়ার।

সজীবের বন্ধু নেহাল আহম্মেদ বলেন, ‘আশ্চর্যের বিষয় হলো, চোখে দেখতে না পেলেও নিজের আত্মিক শক্তিতে বিভিন্ন পরিচিতজনের মোবাইল কল রিসিভ এবং কল দিয়ে থাকেন। কারও কারও কণ্ঠ একটু শুনেই ওই পরিচিত ব্যক্তির নাম বলে দিতে পারেন সজীব।’

এ বিষয়ে শাহরিয়ার ইসলাম সজীব আজকের পত্রিকা বলেন, ‘প্রতি দুই মাসে যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই, তার পাশাপাশি সরকারি অনুদান বা সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে আরও বড় করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত