Ajker Patrika

পুলিশের মামলায় এলাকাছাড়া ১১ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫৬
পুলিশের মামলায় এলাকাছাড়া  ১১ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী

যশোরের ঝিকরগাছায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপুসহ ৩৪ জনের নামে নাশকতার মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় আসামি করা হয়েছে পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১১ কাউন্সিলর প্রার্থী।

গত শুক্রবার দিবাগত রাতে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। ওই রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যুবদল নেতা নাইম হোসেন ডনি, পুরন্দপুর গ্রামের হাসানুজ্জামান হাসান ও হাজির আলী মইনুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত শুক্রবার রাতে উপজেলার পায়রাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য শতাধিক মানুষ একত্র হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় তাঁদের মধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়। তখন তাঁদের কাছ থেকে পেট্রলবোমা, হাঁসুয়া, লাঠি ও কাচের বোতল উদ্ধার করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।

মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, উপজেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাত কল্লোল, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আরাফাত হোসেন কোমল ও সদস্যসচিব মইনুল ইসলাম জনিকে।

এ ছাড়া পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আরমান হোসেন কাকন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সরদার শহিদুল ইসলাম বুদো, মিজানুর রহমান কালু, নুরুজ্জামান বাবু, পিয়াল হাসান ও মশিয়ার রহমান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম কাদের বাবলু, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুজ্জামান বাবলা, মতিয়ার রহমান ও আব্দুর রশিদকে আসামি করা হয়।

মামলার পর থেকে এসব কাউন্সিলর প্রার্থী এলাকা ছেড়েছেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডগুলোতে তাঁদের নির্বাচনী প্রচার বন্ধের উপক্রম। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন কাউন্সিলর প্রার্থী মামলায় আসামি হওয়ায় এ ওয়ার্ডে গত তিন দিন ধরে ভোটের উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে না।

৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল প্রার্থী আরমান হোসেন কাকনের স্ত্রী সুমাইয়া ইয়াসমিন গত রোববার যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী ভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের লোক হওয়ায় ষড়যন্ত্র মামলায় আসামি করা হয়েছে। সে যেন নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারে সে জন্যই এই মামলা করা হয়েছে।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মতিয়ার রহমানের স্ত্রী রেবেকা রহমান বলেন, ‘প্রতি রাতে বাড়িতে পুলিশ এসে আমার স্বামীকে খুঁজছে। মামলার কারণে সে এলাকা ছাড়া হয়েছে। নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখতে এ ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।’

৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী গোলাম কাদের বাবলু বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতি করি তাই আমাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার জন্য এই ষড়যন্ত্র মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলার স্পট দেখানো হয়েছে পায়রাডাঙ্গা। যা আমার ওয়ার্ড থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। এ ছাড়া সে সময় আমি গণসংযোগে ব্যস্ত ছিলাম।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু বলেন, ‘যাদের নামে মামলা হয়েছে তাঁরা সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ১১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এসব প্রার্থী যেন নির্বাচিত হতে না পারেন তাই ক্ষমতাসীন দলের প্রেসক্রিপশনে তাঁদের নামে আজগুবি মামলা দেওয়া হয়েছে।’

ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিতে মামলার এজাহার করা হয়েছে। মামলায় যদি কোনো অসংগতি থেকে থাকে, তাহলে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত