Ajker Patrika

চিংড়ি মাছে জেলি

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ১০: ১৫
চিংড়ি মাছে জেলি

আর যা-ই হোক, মাছ ব্যবসায়ীদের ধোয়া তুলসী পাতা ভাবার কোনো কারণ নেই। রাতের দিকে একবার মাছ কিনতে গিয়ে দেখুন না! একেবারে ‘ফ্রেশ’ বলে যে মাছ গছিয়ে দেওয়া হবে সস্তায়,

তা নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে যখন বাড়ি ফিরবেন, তখনো বুঝতে পারবেন না কী সর্বনাশটা হলো! ব্যাগ থেকে অতি যত্নে যখন রান্নাঘর আলো করে মাছ বের হবে, তখন নিজের অলক্ষ্যেই নাক ঢাকতে হবে আপনার এবং বাড়ির লোকদের। তীব্র গন্ধটা আসলে পচে যাওয়া মাছের। এ রকম ‘ধরা’ খাওয়া মানুষের সংখ্যা কি কম?

ফলে ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু’ ধরনের কথার দাম অন্তত মাছ বাজারে নেই। না না, সব মাছ বিক্রেতাকে মিথ্যুক প্রমাণ করা হচ্ছে না, কিন্তু মাছের বাজারটি শুধু হইহল্লার জন্য বিখ্যাত এমন নয়, যে কেউ জানেন, তিন দিন আগের বরফে মৌজ করতে থাকা মাছটিও সদ্য নদী থেকে ধরে আনা মাছে রূপান্তরিত হতে বিলম্ব হয় না। সে মাছটি ‘তাজা মাছ’-এর পোস্টার হয়ে বাজার দাপিয়ে বেড়ায়।

ফরমালিন দিয়ে চিরযৌবনা করে রাখা মাছ নিয়ে ইদানীং হইচই কম। তাহলে কি মাছ ব্যবসায়ীরা সুবোধ হয়ে গেলেন? এখন আর ফরমালিনের ব্যবহার নেই? তাহলে যে বিশাল মাছটিকে প্রতিদিন দেখছেন কোনো মাছের ডালিতে, এক সপ্তাহ ধরে যা থাকছে সতেজ, সেই মাছটি কি ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে নদী থেকে উঠে এসেছে? কত অলৌকিক ঘটনার ওপরই তো বিশ্বাস রাখে মানুষ! কাউকে চাঁদে বসে রাজত্ব করতেও দেখে। যুক্তি দিয়ে ভাবার কোনো অবকাশই থাকে না—বিশ্বাস এমন এক ব্যাপার!

এই চালিয়াতেরা যখন রপ্তানির সময়ও মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে, তখন গন্ডগোলটা এসে দেশের সম্মানের ওপর এমন এক চড় কষিয়ে দেয়, যার পর সে মুখ আর জনসমক্ষে দেখাতে ইচ্ছে করে না। বিদেশের মানুষ জেনে যায়, ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’র দেশ থেকে যে মাছগুলো বাইরে যাচ্ছে, সেগুলো খাওয়া বিপজ্জনক এবং সে রকম কিছু হলে মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়। আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি, চিংড়ি মাছের মাথায় লোহা ঢুকিয়ে ওজন বাড়িয়ে রপ্তানি করে পয়সা কামিয়ে নেওয়ার ধান্দার বিষয়গুলো? ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো স্রেফ জানিয়ে দিয়েছিল, ‘নাহে! তোমাদের চিংড়িগুলো পাঠানো বন্ধ করো! ওর মাথায় লোহা পুরে দেওয়া হয়েছে!’ পরে কত হুজ্জত করে সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠানো হয়েছিল, মনে পড়ে?

কথাগুলো মনে এল চিংড়িতে জেলি ঢুকিয়ে ওজন বাড়ানোয় আবার জরিমানা করা হয়েছে দুই মাছ ব্যবসায়ীকে, সে খবরটি দেখার পর। আজকের পত্রিকার যশোর সংস্করণে প্রকাশিত খবরটিতে বলা হচ্ছে, ইনজেকশনের মাধ্যমে জেলি পুশ করা দেড় টন চিংড়ি জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। দুই ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

শুধু জরিমানায় আদতে কি কোনো পরিবর্তন আসে? এসেই যদি থাকে, তাহলে দিনের পর দিন একই খবরের পুনরাবৃত্তি হয় কী করে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত