Ajker Patrika

তালগোলের গুচ্ছে আগ্রহ কমছে

রবিউল আলম, ঢাকা
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২২, ০৯: ০৮
তালগোলের গুচ্ছে  আগ্রহ কমছে

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব ও অর্থ সাশ্রয়ে সমন্বিতভাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছিল পরীক্ষা। কিন্তু অব্যবস্থাপনার তালগোলে পড়ে উল্টো ভুগতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ভুগছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। পরীক্ষার পর ছয় মাস হতে চললেও গুচ্ছভুক্ত কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রম শেষই করতে পারেনি, এখনো শূন্য রয়ে গেছে আসন। এই অবস্থায় আবার ভর্তির সময় এসে যাচ্ছে। আগের বিরূপ অভিজ্ঞতার কারণে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এবার আর গুচ্ছে থাকতে চাইছে না। তারা নিজেদের মতো করে পরীক্ষা নিতে চায়।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি মেধাতালিকা দিয়েও ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। অন্য বছরের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে মেধাতালিকা প্রকাশ করেও আসন পূরণ হচ্ছে না। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) আট ধাপে এবং কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ ধাপে মেধাতালিকা দেয়। এরপর এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ শতাধিক আসন ফাঁকা রয়েছে। দশটি মেধাতালিকা দিতে হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপরও কয়েকটি আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম সমাপ্তের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

এই অবস্থায় এবার গুচ্ছে না যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় শিক্ষকেরা তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, গুচ্ছে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রতি ধাপেই ছিল অব্যবস্থাপনা। তাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের মতো করে ভর্তি পরীক্ষায় যাওয়া উচিত।

একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হলেও গুচ্ছের বিষয়ে সামনের একাডেমিক কাউন্সিলে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব, অর্থ উপ-কমিটির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ বেশ কয়েকটি পদে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে গেলে নতুন করে আবারও এসব পদ সাজাতে হবে।

জগন্নাথের শিক্ষকদের মতো একই মত দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়টির একাধিক সিনিয়র শিক্ষক জানান, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারীর একক সিদ্ধান্তে গুচ্ছ পদ্ধতিতে যায় এই বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সামনের একাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছে না থাকার পক্ষে তাঁরা জোরালো অবস্থান নেবেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েরও শিক্ষকদের একটা অংশ আগের নিয়মে ভর্তি পরীক্ষায় চলে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

এই অবস্থায় চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ শুক্রবার বৈঠকে বসছে গুচ্ছের ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায়, গতবারের পরীক্ষা নিয়ে পর্যালোচনা এবং নতুন কী কী পরিবর্তন আনা হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হবে।

কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে গেলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নূর। তিনি আজকের পত্রিকাকে, গুচ্ছে থাকা না-থাকা নিয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। নেই কোনো বাধ্যবাধকতাও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ পদ্ধতিতে এসেছে। তাই কেউ চাইলে চলেও যেতে পারে। তবে তেমনটা হলে সামগ্রিক আয়োজনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত