আবু তাহের খান

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাত।
আর তৈরি পোশাক খাতের বস্ত্র আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে নিট রপ্তানির পরিমাণ হিসাব করলে প্রকৃতপক্ষে প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বৃহত্তম উৎস। সুতরাং এই খাতের বিস্তৃততর অবদান দেখে আনন্দিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ রয়েছে। কিন্তু এ-সংক্রান্ত সামগ্রিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও তুলনামূলক তথ্য সামনে আনলে সেই আনন্দের অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় বৈকি!
সে তথ্যই তাহলে এখানে সামনে আনা যাক। বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়ে প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইনের অবস্থান চতুর্থ এবং এই পরিমাণ আয় দেশে পাঠাচ্ছেন মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি মিলে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে সপ্তম, যা মোট ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির আয়ের ফসল। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে বছরে যে পরিমাণ আয় করছেন, মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি (বাংলাদেশের এক-অষ্টমাংশ) মিলে আয় করছেন তার প্রায় দ্বিগুণ।
প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে এবং মোটামুটি একই দেশগুলোতে কাজ করে একজন ফিলিপাইনি কর্মী যখন একজন বাংলাদেশি কর্মীর তুলনায় ১৩ গুণ বেশি আয় করেন, তখন এর বিপরীতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর বার্ষিক উপার্জনের পরিমাণটি কেমন জবুথবু দেখায় নাকি? কিন্তু কেন এই বিশাল তফাত? জবাবটি খুবই স্পষ্ট—যিনি যাঁর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতাদিও সে অনুযায়ীই পাচ্ছেন।
আর এরই নিট ফলাফল হচ্ছে এটি এবং এই অবস্থা প্রায় ৫০ বছর ধরেই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এত এত প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যত ব্যাখ্যাই দিক না কেন, মোদ্দাকথা হলো, কাজটি প্রয়োজন অনুযায়ী হচ্ছে না; অর্থাৎ যেসব কাজ করে এবং যে পর্যায়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার কারণে একজন ফিলিপাইনি প্রবাসী কর্মী একজন বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর চেয়ে ১৩ গুণ বেশি উপার্জন করছেন, সেই সব ক্ষেত্র বাছাই করে, সেই স্তরের দক্ষতা ও যোগ্যতাটুকু বাংলাদেশ তার কর্মীদের আজও এনে দিতে পারেনি।
এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবে, আমাদের কর্মীরা কষ্ট করে এসব শিখতে চান না। এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জীবিকা তথা পেটের তাগিদ এমনই নিরন্তর যে এ জন্য মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেও কুণ্ঠা বোধ করে না। ফলে কাজের জন্য বিদেশে যেতে চাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট ট্রেডে ও মানে দক্ষতা অর্জনকে যদি বাধ্যতামূলক করা যায়, তাহলে জীবিকার প্রয়োজনে এখন তিনি যেমন ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও বাইরে যেতে চান, তখন একই প্রয়োজনে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতেও বিন্দুমাত্র অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।
কিন্তু আদম ব্যবসায়ীদের দেখানো শর্টকাট পথেই হাঁটছেন আমাদের নীতিনির্ধারকেরা। প্রায় কোনো লেখাপড়া না জানা কিংবা সামান্য জানা এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাবিহীন তরুণ-যুবাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কৃষিশ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি হিসেবে।
অন্যদিকে ফিলিপাইন তার কর্মীদের পাঠাচ্ছে শিল্প-কারখানা ও জাহাজের প্রকৌশলী ও মেকানিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স, শিক্ষক, বিলাসবহুল হোটেলের কর্মী ও পাচক, বিদেশি ভাষা জানা পরিচর্যাকারী ইত্যাদি হিসেবে। এ ধরনের পেশায় বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদেরও ব্যাপক সংখ্যায় গড়ে তোলা সম্ভব।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় হলো, বৈশ্বিক কর্মবাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কারিগরি শিক্ষার পথে আমরা হাঁটছি না। আমরা এগোচ্ছি লাখ লাখ বেকার সৃষ্টির শত শত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দিকে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই কোনো মান নেই। আর সেই সব মানহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেশে কোনো কাজ তো পাচ্ছেনই না, বিদেশে গিয়েও সনদসর্বস্ব শিক্ষা তাঁর কোনো উপকারে আসছে না।
ওই যে লাখ লাখ তরুণ ইদানীং শ্রাবণের স্রোতের মতো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, ওখানে গিয়ে তাঁরা কী করছেন বা কোন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন, সে-সংক্রান্ত কোনো তথ্য কি কোনো রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে? থাকলে বোঝা যেত, এসব সনদ বিদেশের বাজারে কোনো কাজে আসছে কি না। তবে সে তথ্য না থাকলেও কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেখে বোঝা যায়, তাঁদের উপার্জন সনদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়; অর্থাৎ ওই সব সনদ বিদেশের মাটিতেও কোনো কাজে আসছে না।
এমনি পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যার বিপরীতে অন্য দেশের তুলনায় অতিনগণ্য পরিমাণ উপার্জনের বিষয়টি সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনার জন্য কয়েকটি প্রস্তাব এখানে তুলে ধরা হলো। ১. বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিসহ যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুদ্রপ্রকৌশল ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তাদের সেই সব শিক্ষাক্রমকে বৈশ্বিক চাহিদা ও মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঢেলে সাজাতে হবে এবং এসব শিক্ষাদান কার্যক্রমের তাত্ত্বিক অংশের সঙ্গে হাতেকলমের শিক্ষাকে আরও অধিক মাত্রায় যোগ করতে হবে।
সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী সক্ষমতাও। ২. বিদ্যমান নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকে বর্ধিত গুরুত্ব দিতে হবে; বিশেষ করে এ পেশায় চাকরি পাওয়ার জন্য যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁদের জন্য ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তদুপরি নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষাভিত্তিক হাউস গভর্ন্যান্স বা কেয়ার গিভার (পরিচর্যাসেবা) বিষয়ক কোর্স চালু করতে হবে। ৩. তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের স্নাতকদের জন্য জাপানে উচ্চ বেতনে কাজ পাওয়ার যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে কাজে লাগানোর জন্য মানসম্মত উপায়ে জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে। ৪. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সনাতনী ট্রেডের পরিবর্তে বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নতুন ট্রেড প্রবর্তন করতে হবে এবং সেগুলো মানসম্মতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ৫. সর্বোপরি বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে আদম ব্যবসায়ীদের হীন আচরণ ও খপ্পর থেকে মুক্ত করতে হবে।
উল্লিখিত সুপারিশের বাইরে আরও বহুসংখ্যক সুপারিশ যুক্ত হতে পারে। কিন্তু তার চেয়েও অধিক জরুরি হচ্ছে, এই সব প্রয়োজন পূরণ করার কোনো সদিচ্ছা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া এবং সেই লক্ষ্যে উপরোল্লিখিত ৫ নম্বর সুপারিশ অনুযায়ী জনশক্তি রপ্তানি-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আদম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত করা, যার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।
কিন্তু সেইরূপ সদিচ্ছা প্রদর্শনের মতো রাজনৈতিক বাস্তবতা কি দেশে আছে? বিত্তবান রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা, নগদ ভর্তুকি, নিম্ন সুদের ঋণ, ঋণ ও সুদমুক্তি, করমুক্তি ইত্যাদি নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক কম অর্থ বিনিয়োগ করে লাখ লাখ তরুণকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিদেশে কর্মী হিসেবে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আমাদের নীতিনির্ধারক ও সিদ্ধান্ত প্রণেতারা কি সেটি করতে সম্মত হবেন, যা করলে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরাও ফিলিপাইনের সমপর্যায়ের না হোক, কাছাকাছি পর্যায়ের মজুরি লাভের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিকে বহুলাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারবেন?
আবু তাহের খান, সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাত।
আর তৈরি পোশাক খাতের বস্ত্র আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে নিট রপ্তানির পরিমাণ হিসাব করলে প্রকৃতপক্ষে প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বৃহত্তম উৎস। সুতরাং এই খাতের বিস্তৃততর অবদান দেখে আনন্দিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ রয়েছে। কিন্তু এ-সংক্রান্ত সামগ্রিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও তুলনামূলক তথ্য সামনে আনলে সেই আনন্দের অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় বৈকি!
সে তথ্যই তাহলে এখানে সামনে আনা যাক। বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়ে প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইনের অবস্থান চতুর্থ এবং এই পরিমাণ আয় দেশে পাঠাচ্ছেন মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি মিলে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে সপ্তম, যা মোট ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির আয়ের ফসল। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে বছরে যে পরিমাণ আয় করছেন, মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি (বাংলাদেশের এক-অষ্টমাংশ) মিলে আয় করছেন তার প্রায় দ্বিগুণ।
প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে এবং মোটামুটি একই দেশগুলোতে কাজ করে একজন ফিলিপাইনি কর্মী যখন একজন বাংলাদেশি কর্মীর তুলনায় ১৩ গুণ বেশি আয় করেন, তখন এর বিপরীতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর বার্ষিক উপার্জনের পরিমাণটি কেমন জবুথবু দেখায় নাকি? কিন্তু কেন এই বিশাল তফাত? জবাবটি খুবই স্পষ্ট—যিনি যাঁর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতাদিও সে অনুযায়ীই পাচ্ছেন।
আর এরই নিট ফলাফল হচ্ছে এটি এবং এই অবস্থা প্রায় ৫০ বছর ধরেই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এত এত প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যত ব্যাখ্যাই দিক না কেন, মোদ্দাকথা হলো, কাজটি প্রয়োজন অনুযায়ী হচ্ছে না; অর্থাৎ যেসব কাজ করে এবং যে পর্যায়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার কারণে একজন ফিলিপাইনি প্রবাসী কর্মী একজন বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর চেয়ে ১৩ গুণ বেশি উপার্জন করছেন, সেই সব ক্ষেত্র বাছাই করে, সেই স্তরের দক্ষতা ও যোগ্যতাটুকু বাংলাদেশ তার কর্মীদের আজও এনে দিতে পারেনি।
এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবে, আমাদের কর্মীরা কষ্ট করে এসব শিখতে চান না। এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জীবিকা তথা পেটের তাগিদ এমনই নিরন্তর যে এ জন্য মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেও কুণ্ঠা বোধ করে না। ফলে কাজের জন্য বিদেশে যেতে চাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট ট্রেডে ও মানে দক্ষতা অর্জনকে যদি বাধ্যতামূলক করা যায়, তাহলে জীবিকার প্রয়োজনে এখন তিনি যেমন ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও বাইরে যেতে চান, তখন একই প্রয়োজনে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতেও বিন্দুমাত্র অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।
কিন্তু আদম ব্যবসায়ীদের দেখানো শর্টকাট পথেই হাঁটছেন আমাদের নীতিনির্ধারকেরা। প্রায় কোনো লেখাপড়া না জানা কিংবা সামান্য জানা এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাবিহীন তরুণ-যুবাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কৃষিশ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি হিসেবে।
অন্যদিকে ফিলিপাইন তার কর্মীদের পাঠাচ্ছে শিল্প-কারখানা ও জাহাজের প্রকৌশলী ও মেকানিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স, শিক্ষক, বিলাসবহুল হোটেলের কর্মী ও পাচক, বিদেশি ভাষা জানা পরিচর্যাকারী ইত্যাদি হিসেবে। এ ধরনের পেশায় বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদেরও ব্যাপক সংখ্যায় গড়ে তোলা সম্ভব।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় হলো, বৈশ্বিক কর্মবাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কারিগরি শিক্ষার পথে আমরা হাঁটছি না। আমরা এগোচ্ছি লাখ লাখ বেকার সৃষ্টির শত শত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দিকে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই কোনো মান নেই। আর সেই সব মানহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেশে কোনো কাজ তো পাচ্ছেনই না, বিদেশে গিয়েও সনদসর্বস্ব শিক্ষা তাঁর কোনো উপকারে আসছে না।
ওই যে লাখ লাখ তরুণ ইদানীং শ্রাবণের স্রোতের মতো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, ওখানে গিয়ে তাঁরা কী করছেন বা কোন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন, সে-সংক্রান্ত কোনো তথ্য কি কোনো রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে? থাকলে বোঝা যেত, এসব সনদ বিদেশের বাজারে কোনো কাজে আসছে কি না। তবে সে তথ্য না থাকলেও কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেখে বোঝা যায়, তাঁদের উপার্জন সনদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়; অর্থাৎ ওই সব সনদ বিদেশের মাটিতেও কোনো কাজে আসছে না।
এমনি পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যার বিপরীতে অন্য দেশের তুলনায় অতিনগণ্য পরিমাণ উপার্জনের বিষয়টি সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনার জন্য কয়েকটি প্রস্তাব এখানে তুলে ধরা হলো। ১. বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিসহ যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুদ্রপ্রকৌশল ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তাদের সেই সব শিক্ষাক্রমকে বৈশ্বিক চাহিদা ও মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঢেলে সাজাতে হবে এবং এসব শিক্ষাদান কার্যক্রমের তাত্ত্বিক অংশের সঙ্গে হাতেকলমের শিক্ষাকে আরও অধিক মাত্রায় যোগ করতে হবে।
সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী সক্ষমতাও। ২. বিদ্যমান নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকে বর্ধিত গুরুত্ব দিতে হবে; বিশেষ করে এ পেশায় চাকরি পাওয়ার জন্য যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁদের জন্য ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তদুপরি নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষাভিত্তিক হাউস গভর্ন্যান্স বা কেয়ার গিভার (পরিচর্যাসেবা) বিষয়ক কোর্স চালু করতে হবে। ৩. তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের স্নাতকদের জন্য জাপানে উচ্চ বেতনে কাজ পাওয়ার যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে কাজে লাগানোর জন্য মানসম্মত উপায়ে জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে। ৪. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সনাতনী ট্রেডের পরিবর্তে বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নতুন ট্রেড প্রবর্তন করতে হবে এবং সেগুলো মানসম্মতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ৫. সর্বোপরি বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে আদম ব্যবসায়ীদের হীন আচরণ ও খপ্পর থেকে মুক্ত করতে হবে।
উল্লিখিত সুপারিশের বাইরে আরও বহুসংখ্যক সুপারিশ যুক্ত হতে পারে। কিন্তু তার চেয়েও অধিক জরুরি হচ্ছে, এই সব প্রয়োজন পূরণ করার কোনো সদিচ্ছা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া এবং সেই লক্ষ্যে উপরোল্লিখিত ৫ নম্বর সুপারিশ অনুযায়ী জনশক্তি রপ্তানি-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আদম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত করা, যার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।
কিন্তু সেইরূপ সদিচ্ছা প্রদর্শনের মতো রাজনৈতিক বাস্তবতা কি দেশে আছে? বিত্তবান রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা, নগদ ভর্তুকি, নিম্ন সুদের ঋণ, ঋণ ও সুদমুক্তি, করমুক্তি ইত্যাদি নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক কম অর্থ বিনিয়োগ করে লাখ লাখ তরুণকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিদেশে কর্মী হিসেবে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আমাদের নীতিনির্ধারক ও সিদ্ধান্ত প্রণেতারা কি সেটি করতে সম্মত হবেন, যা করলে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরাও ফিলিপাইনের সমপর্যায়ের না হোক, কাছাকাছি পর্যায়ের মজুরি লাভের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিকে বহুলাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারবেন?
আবু তাহের খান, সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়
আবু তাহের খান

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাত।
আর তৈরি পোশাক খাতের বস্ত্র আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে নিট রপ্তানির পরিমাণ হিসাব করলে প্রকৃতপক্ষে প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বৃহত্তম উৎস। সুতরাং এই খাতের বিস্তৃততর অবদান দেখে আনন্দিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ রয়েছে। কিন্তু এ-সংক্রান্ত সামগ্রিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও তুলনামূলক তথ্য সামনে আনলে সেই আনন্দের অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় বৈকি!
সে তথ্যই তাহলে এখানে সামনে আনা যাক। বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়ে প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইনের অবস্থান চতুর্থ এবং এই পরিমাণ আয় দেশে পাঠাচ্ছেন মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি মিলে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে সপ্তম, যা মোট ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির আয়ের ফসল। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে বছরে যে পরিমাণ আয় করছেন, মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি (বাংলাদেশের এক-অষ্টমাংশ) মিলে আয় করছেন তার প্রায় দ্বিগুণ।
প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে এবং মোটামুটি একই দেশগুলোতে কাজ করে একজন ফিলিপাইনি কর্মী যখন একজন বাংলাদেশি কর্মীর তুলনায় ১৩ গুণ বেশি আয় করেন, তখন এর বিপরীতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর বার্ষিক উপার্জনের পরিমাণটি কেমন জবুথবু দেখায় নাকি? কিন্তু কেন এই বিশাল তফাত? জবাবটি খুবই স্পষ্ট—যিনি যাঁর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতাদিও সে অনুযায়ীই পাচ্ছেন।
আর এরই নিট ফলাফল হচ্ছে এটি এবং এই অবস্থা প্রায় ৫০ বছর ধরেই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এত এত প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যত ব্যাখ্যাই দিক না কেন, মোদ্দাকথা হলো, কাজটি প্রয়োজন অনুযায়ী হচ্ছে না; অর্থাৎ যেসব কাজ করে এবং যে পর্যায়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার কারণে একজন ফিলিপাইনি প্রবাসী কর্মী একজন বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর চেয়ে ১৩ গুণ বেশি উপার্জন করছেন, সেই সব ক্ষেত্র বাছাই করে, সেই স্তরের দক্ষতা ও যোগ্যতাটুকু বাংলাদেশ তার কর্মীদের আজও এনে দিতে পারেনি।
এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবে, আমাদের কর্মীরা কষ্ট করে এসব শিখতে চান না। এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জীবিকা তথা পেটের তাগিদ এমনই নিরন্তর যে এ জন্য মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেও কুণ্ঠা বোধ করে না। ফলে কাজের জন্য বিদেশে যেতে চাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট ট্রেডে ও মানে দক্ষতা অর্জনকে যদি বাধ্যতামূলক করা যায়, তাহলে জীবিকার প্রয়োজনে এখন তিনি যেমন ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও বাইরে যেতে চান, তখন একই প্রয়োজনে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতেও বিন্দুমাত্র অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।
কিন্তু আদম ব্যবসায়ীদের দেখানো শর্টকাট পথেই হাঁটছেন আমাদের নীতিনির্ধারকেরা। প্রায় কোনো লেখাপড়া না জানা কিংবা সামান্য জানা এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাবিহীন তরুণ-যুবাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কৃষিশ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি হিসেবে।
অন্যদিকে ফিলিপাইন তার কর্মীদের পাঠাচ্ছে শিল্প-কারখানা ও জাহাজের প্রকৌশলী ও মেকানিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স, শিক্ষক, বিলাসবহুল হোটেলের কর্মী ও পাচক, বিদেশি ভাষা জানা পরিচর্যাকারী ইত্যাদি হিসেবে। এ ধরনের পেশায় বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদেরও ব্যাপক সংখ্যায় গড়ে তোলা সম্ভব।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় হলো, বৈশ্বিক কর্মবাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কারিগরি শিক্ষার পথে আমরা হাঁটছি না। আমরা এগোচ্ছি লাখ লাখ বেকার সৃষ্টির শত শত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দিকে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই কোনো মান নেই। আর সেই সব মানহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেশে কোনো কাজ তো পাচ্ছেনই না, বিদেশে গিয়েও সনদসর্বস্ব শিক্ষা তাঁর কোনো উপকারে আসছে না।
ওই যে লাখ লাখ তরুণ ইদানীং শ্রাবণের স্রোতের মতো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, ওখানে গিয়ে তাঁরা কী করছেন বা কোন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন, সে-সংক্রান্ত কোনো তথ্য কি কোনো রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে? থাকলে বোঝা যেত, এসব সনদ বিদেশের বাজারে কোনো কাজে আসছে কি না। তবে সে তথ্য না থাকলেও কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেখে বোঝা যায়, তাঁদের উপার্জন সনদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়; অর্থাৎ ওই সব সনদ বিদেশের মাটিতেও কোনো কাজে আসছে না।
এমনি পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যার বিপরীতে অন্য দেশের তুলনায় অতিনগণ্য পরিমাণ উপার্জনের বিষয়টি সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনার জন্য কয়েকটি প্রস্তাব এখানে তুলে ধরা হলো। ১. বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিসহ যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুদ্রপ্রকৌশল ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তাদের সেই সব শিক্ষাক্রমকে বৈশ্বিক চাহিদা ও মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঢেলে সাজাতে হবে এবং এসব শিক্ষাদান কার্যক্রমের তাত্ত্বিক অংশের সঙ্গে হাতেকলমের শিক্ষাকে আরও অধিক মাত্রায় যোগ করতে হবে।
সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী সক্ষমতাও। ২. বিদ্যমান নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকে বর্ধিত গুরুত্ব দিতে হবে; বিশেষ করে এ পেশায় চাকরি পাওয়ার জন্য যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁদের জন্য ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তদুপরি নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষাভিত্তিক হাউস গভর্ন্যান্স বা কেয়ার গিভার (পরিচর্যাসেবা) বিষয়ক কোর্স চালু করতে হবে। ৩. তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের স্নাতকদের জন্য জাপানে উচ্চ বেতনে কাজ পাওয়ার যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে কাজে লাগানোর জন্য মানসম্মত উপায়ে জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে। ৪. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সনাতনী ট্রেডের পরিবর্তে বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নতুন ট্রেড প্রবর্তন করতে হবে এবং সেগুলো মানসম্মতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ৫. সর্বোপরি বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে আদম ব্যবসায়ীদের হীন আচরণ ও খপ্পর থেকে মুক্ত করতে হবে।
উল্লিখিত সুপারিশের বাইরে আরও বহুসংখ্যক সুপারিশ যুক্ত হতে পারে। কিন্তু তার চেয়েও অধিক জরুরি হচ্ছে, এই সব প্রয়োজন পূরণ করার কোনো সদিচ্ছা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া এবং সেই লক্ষ্যে উপরোল্লিখিত ৫ নম্বর সুপারিশ অনুযায়ী জনশক্তি রপ্তানি-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আদম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত করা, যার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।
কিন্তু সেইরূপ সদিচ্ছা প্রদর্শনের মতো রাজনৈতিক বাস্তবতা কি দেশে আছে? বিত্তবান রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা, নগদ ভর্তুকি, নিম্ন সুদের ঋণ, ঋণ ও সুদমুক্তি, করমুক্তি ইত্যাদি নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক কম অর্থ বিনিয়োগ করে লাখ লাখ তরুণকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিদেশে কর্মী হিসেবে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আমাদের নীতিনির্ধারক ও সিদ্ধান্ত প্রণেতারা কি সেটি করতে সম্মত হবেন, যা করলে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরাও ফিলিপাইনের সমপর্যায়ের না হোক, কাছাকাছি পর্যায়ের মজুরি লাভের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিকে বহুলাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারবেন?
আবু তাহের খান, সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাত।
আর তৈরি পোশাক খাতের বস্ত্র আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে নিট রপ্তানির পরিমাণ হিসাব করলে প্রকৃতপক্ষে প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বৃহত্তম উৎস। সুতরাং এই খাতের বিস্তৃততর অবদান দেখে আনন্দিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ রয়েছে। কিন্তু এ-সংক্রান্ত সামগ্রিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও তুলনামূলক তথ্য সামনে আনলে সেই আনন্দের অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় বৈকি!
সে তথ্যই তাহলে এখানে সামনে আনা যাক। বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়ে প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইনের অবস্থান চতুর্থ এবং এই পরিমাণ আয় দেশে পাঠাচ্ছেন মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি মিলে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে সপ্তম, যা মোট ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির আয়ের ফসল। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে বছরে যে পরিমাণ আয় করছেন, মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি (বাংলাদেশের এক-অষ্টমাংশ) মিলে আয় করছেন তার প্রায় দ্বিগুণ।
প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে এবং মোটামুটি একই দেশগুলোতে কাজ করে একজন ফিলিপাইনি কর্মী যখন একজন বাংলাদেশি কর্মীর তুলনায় ১৩ গুণ বেশি আয় করেন, তখন এর বিপরীতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর বার্ষিক উপার্জনের পরিমাণটি কেমন জবুথবু দেখায় নাকি? কিন্তু কেন এই বিশাল তফাত? জবাবটি খুবই স্পষ্ট—যিনি যাঁর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতাদিও সে অনুযায়ীই পাচ্ছেন।
আর এরই নিট ফলাফল হচ্ছে এটি এবং এই অবস্থা প্রায় ৫০ বছর ধরেই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এত এত প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যত ব্যাখ্যাই দিক না কেন, মোদ্দাকথা হলো, কাজটি প্রয়োজন অনুযায়ী হচ্ছে না; অর্থাৎ যেসব কাজ করে এবং যে পর্যায়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার কারণে একজন ফিলিপাইনি প্রবাসী কর্মী একজন বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর চেয়ে ১৩ গুণ বেশি উপার্জন করছেন, সেই সব ক্ষেত্র বাছাই করে, সেই স্তরের দক্ষতা ও যোগ্যতাটুকু বাংলাদেশ তার কর্মীদের আজও এনে দিতে পারেনি।
এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবে, আমাদের কর্মীরা কষ্ট করে এসব শিখতে চান না। এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জীবিকা তথা পেটের তাগিদ এমনই নিরন্তর যে এ জন্য মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেও কুণ্ঠা বোধ করে না। ফলে কাজের জন্য বিদেশে যেতে চাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট ট্রেডে ও মানে দক্ষতা অর্জনকে যদি বাধ্যতামূলক করা যায়, তাহলে জীবিকার প্রয়োজনে এখন তিনি যেমন ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও বাইরে যেতে চান, তখন একই প্রয়োজনে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতেও বিন্দুমাত্র অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।
কিন্তু আদম ব্যবসায়ীদের দেখানো শর্টকাট পথেই হাঁটছেন আমাদের নীতিনির্ধারকেরা। প্রায় কোনো লেখাপড়া না জানা কিংবা সামান্য জানা এবং কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাবিহীন তরুণ-যুবাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কৃষিশ্রমিক, নির্মাণশ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, গৃহকর্মী ইত্যাদি হিসেবে।
অন্যদিকে ফিলিপাইন তার কর্মীদের পাঠাচ্ছে শিল্প-কারখানা ও জাহাজের প্রকৌশলী ও মেকানিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স, শিক্ষক, বিলাসবহুল হোটেলের কর্মী ও পাচক, বিদেশি ভাষা জানা পরিচর্যাকারী ইত্যাদি হিসেবে। এ ধরনের পেশায় বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদেরও ব্যাপক সংখ্যায় গড়ে তোলা সম্ভব।
কিন্তু দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় হলো, বৈশ্বিক কর্মবাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কারিগরি শিক্ষার পথে আমরা হাঁটছি না। আমরা এগোচ্ছি লাখ লাখ বেকার সৃষ্টির শত শত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দিকে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই কোনো মান নেই। আর সেই সব মানহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে তাঁরা দেশে কোনো কাজ তো পাচ্ছেনই না, বিদেশে গিয়েও সনদসর্বস্ব শিক্ষা তাঁর কোনো উপকারে আসছে না।
ওই যে লাখ লাখ তরুণ ইদানীং শ্রাবণের স্রোতের মতো বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, ওখানে গিয়ে তাঁরা কী করছেন বা কোন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন, সে-সংক্রান্ত কোনো তথ্য কি কোনো রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে? থাকলে বোঝা যেত, এসব সনদ বিদেশের বাজারে কোনো কাজে আসছে কি না। তবে সে তথ্য না থাকলেও কর্মীর তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ দেখে বোঝা যায়, তাঁদের উপার্জন সনদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়; অর্থাৎ ওই সব সনদ বিদেশের মাটিতেও কোনো কাজে আসছে না।
এমনি পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপুল সংখ্যার বিপরীতে অন্য দেশের তুলনায় অতিনগণ্য পরিমাণ উপার্জনের বিষয়টি সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনার জন্য কয়েকটি প্রস্তাব এখানে তুলে ধরা হলো। ১. বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিসহ যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুদ্রপ্রকৌশল ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তাদের সেই সব শিক্ষাক্রমকে বৈশ্বিক চাহিদা ও মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঢেলে সাজাতে হবে এবং এসব শিক্ষাদান কার্যক্রমের তাত্ত্বিক অংশের সঙ্গে হাতেকলমের শিক্ষাকে আরও অধিক মাত্রায় যোগ করতে হবে।
সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থী সক্ষমতাও। ২. বিদ্যমান নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকে বর্ধিত গুরুত্ব দিতে হবে; বিশেষ করে এ পেশায় চাকরি পাওয়ার জন্য যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁদের জন্য ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তদুপরি নার্সিং ইনস্টিটিউটগুলোতে ইংরেজি ভাষাভিত্তিক হাউস গভর্ন্যান্স বা কেয়ার গিভার (পরিচর্যাসেবা) বিষয়ক কোর্স চালু করতে হবে। ৩. তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের স্নাতকদের জন্য জাপানে উচ্চ বেতনে কাজ পাওয়ার যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তাকে কাজে লাগানোর জন্য মানসম্মত উপায়ে জাপানি ভাষা শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে। ৪. কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সনাতনী ট্রেডের পরিবর্তে বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নতুন ট্রেড প্রবর্তন করতে হবে এবং সেগুলো মানসম্মতভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ৫. সর্বোপরি বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে আদম ব্যবসায়ীদের হীন আচরণ ও খপ্পর থেকে মুক্ত করতে হবে।
উল্লিখিত সুপারিশের বাইরে আরও বহুসংখ্যক সুপারিশ যুক্ত হতে পারে। কিন্তু তার চেয়েও অধিক জরুরি হচ্ছে, এই সব প্রয়োজন পূরণ করার কোনো সদিচ্ছা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া এবং সেই লক্ষ্যে উপরোল্লিখিত ৫ নম্বর সুপারিশ অনুযায়ী জনশক্তি রপ্তানি-সংক্রান্ত কার্যক্রমকে আদম ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত করা, যার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।
কিন্তু সেইরূপ সদিচ্ছা প্রদর্শনের মতো রাজনৈতিক বাস্তবতা কি দেশে আছে? বিত্তবান রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা, নগদ ভর্তুকি, নিম্ন সুদের ঋণ, ঋণ ও সুদমুক্তি, করমুক্তি ইত্যাদি নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক কম অর্থ বিনিয়োগ করে লাখ লাখ তরুণকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিদেশে কর্মী হিসেবে পাঠানো সম্ভব। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আমাদের নীতিনির্ধারক ও সিদ্ধান্ত প্রণেতারা কি সেটি করতে সম্মত হবেন, যা করলে বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরাও ফিলিপাইনের সমপর্যায়ের না হোক, কাছাকাছি পর্যায়ের মজুরি লাভের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিকে বহুলাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারবেন?
আবু তাহের খান, সাবেক পরিচালক, বিসিক, শিল্প মন্ত্রণালয়

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প
০২ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প
০২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প
০২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প
০২ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫