Ajker Patrika

সেচযন্ত্রের মালিক-কৃষক মুখোমুখি অবস্থানে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১৪: ৪৪
সেচযন্ত্রের মালিক-কৃষক মুখোমুখি অবস্থানে

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধানের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সেচযন্ত্র মালিক ও কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাঁরা মুখোমুখি। যে কোনো মুহূর্তে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে, উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকার কৃষকদের হুমকি দিয়েছেন সেচযন্ত্র মালিকেরা। কৃষকেরা বিষয়টি লিখিত আকারে অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। কৃষকেরা উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানালে সেচযন্ত্র মালিকেরা কৃষকদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে, সেচযন্ত্র মালিকেরা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে বিষয়টি তাঁদের জানালে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতেন। প্রশাসন তাঁদের কোনো কিছুই জানায়নি।

সেচযন্ত্র মালিকেরা উৎপাদিত ধানের ৪ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ সিকি ভাগ ধান দাবি করেছেন। যার প্রচলন দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। সেচ কমিটি বিঘা প্রতি ১ হাজার ৯০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তা ছাড়া স্থানীয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান নেওয়ার কথাও বলেছে। সেচযন্ত্র মালিকেরা এ সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাঁরা উৎপাদিত ধানের সিকি ভাগ চান।

কৃষকেরাও সিকি ভাগ দিতে নারাজ। তবে উপজেলার ফৈলজানা ও পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে উৎপাদিত ধানের ৫ ভাগের ১ ভাগ নিচ্ছেন সেচযন্ত্র মালিকেরা।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের দুই শতাধিক কৃষক সেচযন্ত্র মালিকদের বিরুদ্ধে সেচ কমিটির সভাপতি ইউএনও সৈকত ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষকেরা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন দেন। গত শুক্রবার উপজেলার সাইকোলা ইউনিয়নের প্রায় ৫০ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের জোড়দহ বিলের সেচযন্ত্র মালিকেরা গত বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত দিয়ে তাঁদের সঙ্গে কৃষকের বিরোধ সৃষ্টি করেছেন।

তাঁরা বলছেন, কৃষকের সঙ্গে তাঁদের মৌখিক চুক্তি রয়েছে সিকি ভাগ ধান দেওয়ার। তাঁরা সরকারি সিদ্ধান্ত মানবেন, তবে সেটা আগে জানাতে হবে। এখন ধান কাটার সময় এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অসম্ভব।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সেচযন্ত্র মালিকেরা তাঁদের শোষণ করে আসছেন। উৎপাদিত ধানের সিকিভাগ নিয়ে নিচ্ছেন। এতে চরম ক্ষতি হয় কৃষকের।

সাইকোলা গ্রামের কৃষক আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘ধান লাগানো থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত অনেক টাকা খরচ হয়। তারপরও যদি সেচ মালিকেরা এত ধান নিয়ে যায় তাহলে কৃষকেরা চলবেন কীভাবে?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি মো. সৈকত ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত সেচযন্ত্র মালিকদের মানতেই হবে। স্থানীয়ভাবে টাকার পরিবর্তে উৎপাদিত ধানের পাঁচ ভাগের এক ভাগ নিতে পারেন তাঁরা। এ নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে হচ্ছে নতুন আইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত