Ajker Patrika

নির্মাণকাজ নিয়ে অসন্তোষ

হোসাইন আহমদ, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ)
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১১
নির্মাণকাজ নিয়ে অসন্তোষ

দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা-বীরগাঁও সড়ক। তবে সড়ক নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া, মাটিমিশ্রিত পাথর ও নিম্নমানের বিটমাটি ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর এ রাস্তার প্রশস্তকরণ ও নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্তমানে যাঁরা কাজ করাচ্ছেন, তাঁরা কাজে গাফিলতি করছেন। নির্মাণকাজে যেন গাফিলতি বা অনিয়ম না হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি চান তাঁরা।

তাঁরা জানান, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইট খুবই নিম্নমানের। পাথরের স্তূপে পাথর কম, মাটি বেশি। এলাকাবাসী একাধিকবার ঢালাইয়ের কাজে মাটিসহ পাথর ব্যবহারে নিষেধ করেছেন। তারপরও কোনো কাজে আসেনি।

এ ছাড়া রাস্তা বাড়াতে মাটি খুঁড়ে যে অংশে বালুর ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বালু না বিটমাটি, সেটি বোঝার উপায় নেই। ঢালাইয়ের কাজে সিমেন্টের সঙ্গে অনুপাতের তুলনায় বালু বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা বাজার অংশ থেকে বীরগাঁও বাজার পর্যন্ত আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়কটির পাগলা বাজার অংশের শুরু থেকে ১৭০ মিটার দুপাশেই বাড়ানো হবে। বাজারের প্রথম অংশে প্রশস্ত ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ মিটার।

এদিকে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে দুই অংশে। প্রথম অংশ পাগলা বাজারের বীরগাঁও রোডের মুখ থেকে ৭ কিলোমিটার। এখানে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। দ্বিতীয় ভাগে বীরগাঁও খালপাড় থেকে গুইড়াখালের সেতু হয়ে বীরগাঁও বাজার পর্যন্ত। এখানেও প্রায় একই পরিমাণ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় ভাগে এখন পুরোদমে চলছে মাটি ভরাটের কাজ।

কান্দিগাঁও গ্রামের মো. কামাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন জানান, সড়ক নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। বিটমাটি, নাকি বালুর ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বোঝার উপায় নেই। অনেক দিনের প্রত্যাশার সড়ক এটি। অথচ এ সড়ক নির্মাণে চলছে গাফিলতি।

তাঁরা জানান, ঢালাইয়ের কাজে যে পরিমাণ সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, সে তুলনায় বালুর ব্যবহার হচ্ছে বেশি। কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

পাগলা-বীরগাঁও সড়কের প্রথম অংশের ৭ কিলোমিটার কাজ করার অনুমোদন পেয়েছে ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালেহ্ অ্যান্ড ব্রাদার্স। ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার এ কাজের গাফিলতির ব্যাপারে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. সালেহ্ আহমদের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো অনিয়মের অতীত রেকর্ড নেই। আমি এ রকম ছোট কাজ করিও না। নির্মাণকাজে ব্যবহারের ইটের ব্যাপারে যাঁরা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ইট সম্পর্কে ধারণা কম।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দুই নম্বর কোনো ইট ব্যবহার করা হয়নি। পাথরে মাটি থাকতে পারে। আমি কথা বলব কন্ট্রাক্টর ও ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। পাথর ধুয়ে ব্যবহারের জন্য। বালু ও বিটমাটির ব্যাপারে এক্ষুনি কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আল নূর তারেক বলেন, ‘নির্মাণকাজে ব্যবহার করা ইট, বালু, বিটমাটিসহ—সবকিছু দেখব। কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেব। ইট-পাথর ভালো না হলে এগুলো দিয়ে কাজ করতে দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত