সিলেট, গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা প্রতিনিধি

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ শুরু করেছে।
ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। ডুবে গেছে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনস্বার্থে ও নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি ও পান্থুমাই পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বার্তায় এ ঘোষণা দেন উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের কয়েকটি উপজেলা। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির এ অবস্থা দেখা দেয়। সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ড ও জেলার ১৩টি উপজেলার ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের দিন যেখানে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩০০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আর জেলার ১৩টি উপজেলার ১১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮৩টি ইউনিয়নের ৮৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যেখানে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন ৩ হাজার ৬২৪ জন।
এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৯৮ হাজার ৪০০ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯৬ জন মানুষ রয়েছেন, আর ৮৬টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ১ হাজার ৭৫০ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট থেকে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত সব সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং, গোয়াইনঘাট-ফতেহপুর-সিলেট সদর ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোর আঞ্চলিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলোই পানিতে নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মানুষের বাড়িঘর। যাঁদের ঘরে বেশি পানি উঠেছে, তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ওই উপজেলার ৭৮ হাজার ১১৫ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সকালের দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে পানি উঠলেও বিকেলের দিকে নেমে যায়। তবে উপজেলার অন্যান্য আঞ্চলিক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে রাস্তার দুই ধারে পানি রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলাজুড়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে মানুষজন ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না। প্রবাসে থাকা লোকজন বাড়িতে যোগাযোগ করতে না পেরে ফেসবুকে পোস্ট করে এলাকার খবরাখবর জানার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘পানি যেভাবে কাল থেকে বাড়তেছে, না জানি ’২২-এর বন্যা চলে আসে কি না। এই আতঙ্ক উপজেলার সব মানুষের মাঝে। বাড়ির উঠোনে পানি উঠে গেছে। অর্ধহাত বাড়লেই ঘরে ঢুকে যাবে। আপাতত পানি স্থির দেখা যাচ্ছে। যদি না পানি বাড়ে, তাহলে আর আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না।’
আমিনুর রহমান নামে কোম্পানীগঞ্জের এক সৌদিপ্রবাসী ফেসবুকে লিখেন, ‘বর্তমানে আমাদের ৬ নম্বর দক্ষিণ রনিখাইয়ের বন্যার পানির কী অবস্থা, কারও জানা থাকলে প্লিজ একটু জানান?’
উপজেলার টুকের বাজারের কুটিরশিল্প ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, ‘সকালে আমার দোকানে পানি উঠে। ঘুমে থেকে উঠেই দৌড়ে দোকানে আসি। পরে মালামাল ওপরে তুলি। পানি সকালে দোকানের মধ্যে থাকলেও বিকেলে নেমে গেছে। পানি কমলেই বেঁচে যাই।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় সিলেটের ৪টি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বেলা ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেমি ও সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেমি, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ৪৭ সেমি ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেমি, সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ৩৩ সেমি, সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ২৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বাকি নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা খুবই খারাপ। ওই সব উপজেলায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। বন্যার্ত মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সভা রয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম আমরা তখন জানাতে পারব।’
এদিকে ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জ পৌর শহর। বন্যাকবলিত জেলার সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জসহ অন্তত পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে তাঁরা। অন্যত্র আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা।
নেত্রকোনায় বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্রধান চারটি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে কলমাকান্দার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ বেলা ৩টায় জেলার কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় উপদাখালী নদীর একই স্থানে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে লোকালয়ে এখনো পানি না ঢুকলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার শঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার প্রধান চার নদী—উপদাখালী, কংশ, সোমেশ্বরী ও ধনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। কংশ নদের পানিও জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধনু নদের পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানি বেড়ে দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বিজয়পুর পয়েন্টে ৪ দশমিক ৪ মিটার নিচ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাড়িঘরে পানি ঢোকেনি। তেমনভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর নেই। তবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় তা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
আজ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মনু-খোয়াই ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী, জাদুকাটা, ঝালুখালি, পুরাতন-সুরমা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার নদীবিধৌত আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল ও মৌলভীবাজার জেলার কুশিয়ারা নদীবিধৌত নিমাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ শুরু করেছে।
ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। ডুবে গেছে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনস্বার্থে ও নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি ও পান্থুমাই পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বার্তায় এ ঘোষণা দেন উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের কয়েকটি উপজেলা। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির এ অবস্থা দেখা দেয়। সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ড ও জেলার ১৩টি উপজেলার ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের দিন যেখানে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩০০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আর জেলার ১৩টি উপজেলার ১১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮৩টি ইউনিয়নের ৮৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যেখানে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন ৩ হাজার ৬২৪ জন।
এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৯৮ হাজার ৪০০ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯৬ জন মানুষ রয়েছেন, আর ৮৬টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ১ হাজার ৭৫০ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট থেকে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত সব সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং, গোয়াইনঘাট-ফতেহপুর-সিলেট সদর ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোর আঞ্চলিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলোই পানিতে নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মানুষের বাড়িঘর। যাঁদের ঘরে বেশি পানি উঠেছে, তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ওই উপজেলার ৭৮ হাজার ১১৫ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সকালের দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে পানি উঠলেও বিকেলের দিকে নেমে যায়। তবে উপজেলার অন্যান্য আঞ্চলিক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে রাস্তার দুই ধারে পানি রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলাজুড়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে মানুষজন ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না। প্রবাসে থাকা লোকজন বাড়িতে যোগাযোগ করতে না পেরে ফেসবুকে পোস্ট করে এলাকার খবরাখবর জানার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘পানি যেভাবে কাল থেকে বাড়তেছে, না জানি ’২২-এর বন্যা চলে আসে কি না। এই আতঙ্ক উপজেলার সব মানুষের মাঝে। বাড়ির উঠোনে পানি উঠে গেছে। অর্ধহাত বাড়লেই ঘরে ঢুকে যাবে। আপাতত পানি স্থির দেখা যাচ্ছে। যদি না পানি বাড়ে, তাহলে আর আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না।’
আমিনুর রহমান নামে কোম্পানীগঞ্জের এক সৌদিপ্রবাসী ফেসবুকে লিখেন, ‘বর্তমানে আমাদের ৬ নম্বর দক্ষিণ রনিখাইয়ের বন্যার পানির কী অবস্থা, কারও জানা থাকলে প্লিজ একটু জানান?’
উপজেলার টুকের বাজারের কুটিরশিল্প ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, ‘সকালে আমার দোকানে পানি উঠে। ঘুমে থেকে উঠেই দৌড়ে দোকানে আসি। পরে মালামাল ওপরে তুলি। পানি সকালে দোকানের মধ্যে থাকলেও বিকেলে নেমে গেছে। পানি কমলেই বেঁচে যাই।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় সিলেটের ৪টি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বেলা ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেমি ও সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেমি, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ৪৭ সেমি ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেমি, সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ৩৩ সেমি, সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ২৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বাকি নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা খুবই খারাপ। ওই সব উপজেলায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। বন্যার্ত মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সভা রয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম আমরা তখন জানাতে পারব।’
এদিকে ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জ পৌর শহর। বন্যাকবলিত জেলার সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জসহ অন্তত পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে তাঁরা। অন্যত্র আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা।
নেত্রকোনায় বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্রধান চারটি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে কলমাকান্দার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ বেলা ৩টায় জেলার কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় উপদাখালী নদীর একই স্থানে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে লোকালয়ে এখনো পানি না ঢুকলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার শঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার প্রধান চার নদী—উপদাখালী, কংশ, সোমেশ্বরী ও ধনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। কংশ নদের পানিও জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধনু নদের পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানি বেড়ে দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বিজয়পুর পয়েন্টে ৪ দশমিক ৪ মিটার নিচ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাড়িঘরে পানি ঢোকেনি। তেমনভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর নেই। তবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় তা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
আজ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মনু-খোয়াই ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী, জাদুকাটা, ঝালুখালি, পুরাতন-সুরমা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার নদীবিধৌত আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল ও মৌলভীবাজার জেলার কুশিয়ারা নদীবিধৌত নিমাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
সিলেট, গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা প্রতিনিধি

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ শুরু করেছে।
ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। ডুবে গেছে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনস্বার্থে ও নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি ও পান্থুমাই পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বার্তায় এ ঘোষণা দেন উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের কয়েকটি উপজেলা। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির এ অবস্থা দেখা দেয়। সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ড ও জেলার ১৩টি উপজেলার ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের দিন যেখানে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩০০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আর জেলার ১৩টি উপজেলার ১১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮৩টি ইউনিয়নের ৮৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যেখানে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন ৩ হাজার ৬২৪ জন।
এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৯৮ হাজার ৪০০ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯৬ জন মানুষ রয়েছেন, আর ৮৬টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ১ হাজার ৭৫০ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট থেকে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত সব সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং, গোয়াইনঘাট-ফতেহপুর-সিলেট সদর ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোর আঞ্চলিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলোই পানিতে নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মানুষের বাড়িঘর। যাঁদের ঘরে বেশি পানি উঠেছে, তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ওই উপজেলার ৭৮ হাজার ১১৫ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সকালের দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে পানি উঠলেও বিকেলের দিকে নেমে যায়। তবে উপজেলার অন্যান্য আঞ্চলিক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে রাস্তার দুই ধারে পানি রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলাজুড়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে মানুষজন ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না। প্রবাসে থাকা লোকজন বাড়িতে যোগাযোগ করতে না পেরে ফেসবুকে পোস্ট করে এলাকার খবরাখবর জানার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘পানি যেভাবে কাল থেকে বাড়তেছে, না জানি ’২২-এর বন্যা চলে আসে কি না। এই আতঙ্ক উপজেলার সব মানুষের মাঝে। বাড়ির উঠোনে পানি উঠে গেছে। অর্ধহাত বাড়লেই ঘরে ঢুকে যাবে। আপাতত পানি স্থির দেখা যাচ্ছে। যদি না পানি বাড়ে, তাহলে আর আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না।’
আমিনুর রহমান নামে কোম্পানীগঞ্জের এক সৌদিপ্রবাসী ফেসবুকে লিখেন, ‘বর্তমানে আমাদের ৬ নম্বর দক্ষিণ রনিখাইয়ের বন্যার পানির কী অবস্থা, কারও জানা থাকলে প্লিজ একটু জানান?’
উপজেলার টুকের বাজারের কুটিরশিল্প ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, ‘সকালে আমার দোকানে পানি উঠে। ঘুমে থেকে উঠেই দৌড়ে দোকানে আসি। পরে মালামাল ওপরে তুলি। পানি সকালে দোকানের মধ্যে থাকলেও বিকেলে নেমে গেছে। পানি কমলেই বেঁচে যাই।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় সিলেটের ৪টি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বেলা ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেমি ও সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেমি, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ৪৭ সেমি ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেমি, সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ৩৩ সেমি, সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ২৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বাকি নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা খুবই খারাপ। ওই সব উপজেলায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। বন্যার্ত মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সভা রয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম আমরা তখন জানাতে পারব।’
এদিকে ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জ পৌর শহর। বন্যাকবলিত জেলার সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জসহ অন্তত পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে তাঁরা। অন্যত্র আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা।
নেত্রকোনায় বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্রধান চারটি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে কলমাকান্দার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ বেলা ৩টায় জেলার কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় উপদাখালী নদীর একই স্থানে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে লোকালয়ে এখনো পানি না ঢুকলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার শঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার প্রধান চার নদী—উপদাখালী, কংশ, সোমেশ্বরী ও ধনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। কংশ নদের পানিও জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধনু নদের পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানি বেড়ে দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বিজয়পুর পয়েন্টে ৪ দশমিক ৪ মিটার নিচ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাড়িঘরে পানি ঢোকেনি। তেমনভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর নেই। তবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় তা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
আজ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মনু-খোয়াই ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী, জাদুকাটা, ঝালুখালি, পুরাতন-সুরমা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার নদীবিধৌত আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল ও মৌলভীবাজার জেলার কুশিয়ারা নদীবিধৌত নিমাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ শুরু করেছে।
ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। ডুবে গেছে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনস্বার্থে ও নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি ও পান্থুমাই পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এক বার্তায় এ ঘোষণা দেন উপজেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিলেটের কয়েকটি উপজেলা। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির এ অবস্থা দেখা দেয়। সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ড ও জেলার ১৩টি উপজেলার ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগের দিন যেখানে ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেখানে এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের চারটি ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩০০ জন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আর জেলার ১৩টি উপজেলার ১১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮৩টি ইউনিয়নের ৮৬৪টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যেখানে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫০৭ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন ৩ হাজার ৬২৪ জন।
এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৯৮ হাজার ৪০০ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সবগুলোতেই মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৯৬ জন মানুষ রয়েছেন, আর ৮৬টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের ১ হাজার ৭৫০ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট থেকে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত সব সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং, গোয়াইনঘাট-ফতেহপুর-সিলেট সদর ও গোয়াইনঘাট-সালুটিকর সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোর আঞ্চলিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলোই পানিতে নিমজ্জিত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মানুষের বাড়িঘর। যাঁদের ঘরে বেশি পানি উঠেছে, তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। তাঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ওই উপজেলার ৭৮ হাজার ১১৫ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সকালের দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে পানি উঠলেও বিকেলের দিকে নেমে যায়। তবে উপজেলার অন্যান্য আঞ্চলিক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে রাস্তার দুই ধারে পানি রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় উপজেলাজুড়ে নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে মানুষজন ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না। প্রবাসে থাকা লোকজন বাড়িতে যোগাযোগ করতে না পেরে ফেসবুকে পোস্ট করে এলাকার খবরাখবর জানার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘পানি যেভাবে কাল থেকে বাড়তেছে, না জানি ’২২-এর বন্যা চলে আসে কি না। এই আতঙ্ক উপজেলার সব মানুষের মাঝে। বাড়ির উঠোনে পানি উঠে গেছে। অর্ধহাত বাড়লেই ঘরে ঢুকে যাবে। আপাতত পানি স্থির দেখা যাচ্ছে। যদি না পানি বাড়ে, তাহলে আর আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না।’
আমিনুর রহমান নামে কোম্পানীগঞ্জের এক সৌদিপ্রবাসী ফেসবুকে লিখেন, ‘বর্তমানে আমাদের ৬ নম্বর দক্ষিণ রনিখাইয়ের বন্যার পানির কী অবস্থা, কারও জানা থাকলে প্লিজ একটু জানান?’
উপজেলার টুকের বাজারের কুটিরশিল্প ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, ‘সকালে আমার দোকানে পানি উঠে। ঘুমে থেকে উঠেই দৌড়ে দোকানে আসি। পরে মালামাল ওপরে তুলি। পানি সকালে দোকানের মধ্যে থাকলেও বিকেলে নেমে গেছে। পানি কমলেই বেঁচে যাই।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় সিলেটের ৪টি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ বেলা ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেমি ও সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেমি, কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে ৪৭ সেমি ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮৮ সেমি, সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ৩৩ সেমি, সারি-গোয়াইনের গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ২৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর বাকি নদীগুলোর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবস্থা খুবই খারাপ। ওই সব উপজেলায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। বন্যার্ত মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সভা রয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম আমরা তখন জানাতে পারব।’
এদিকে ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জ পৌর শহর। বন্যাকবলিত জেলার সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জসহ অন্তত পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে তাঁরা। অন্যত্র আশ্রয়ের খোঁজে বন্যার্তরা।
নেত্রকোনায় বৃষ্টি আর উজানের ঢলে প্রধান চারটি নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে কলমাকান্দার উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
আজ বেলা ৩টায় জেলার কলমাকান্দা উপজেলার উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় উপদাখালী নদীর একই স্থানে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে লোকালয়ে এখনো পানি না ঢুকলেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার শঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে জেলার প্রধান চার নদী—উপদাখালী, কংশ, সোমেশ্বরী ও ধনু নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে উপদাখালী নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। কংশ নদের পানিও জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এ ছাড়া জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধনু নদের পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানি বেড়ে দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং বিজয়পুর পয়েন্টে ৪ দশমিক ৪ মিটার নিচ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেছেন, এখন পর্যন্ত বাড়িঘরে পানি ঢোকেনি। তেমনভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর নেই। তবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় তা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।
আজ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মনু-খোয়াই ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী, জাদুকাটা, ঝালুখালি, পুরাতন-সুরমা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার নদীবিধৌত আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং নেত্রকোনা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল ও মৌলভীবাজার জেলার কুশিয়ারা নদীবিধৌত নিমাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কতিপয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
৩৮ মিনিট আগে
রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফ
৮ ঘণ্টা আগে
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক এবং আকাশ পরিষ্কার থাকতে পারে। সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ। দুপুর পর্যন্ত এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৪ মিনিটে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আগামী ৭২ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্য
১৮ জুন ২০২৪
রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফ
৮ ঘণ্টা আগে
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফল্য ও সংকট।
বইটি লেখার প্রেক্ষাপট নিয়ে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সিএনএন লিখেছে—২৫ বছরের বন্ধুত্বে সহকর্মী ডেল মিকুয়েলের মুখে ‘একদিন এ নিয়ে বই লিখব’ কথাটি বহুবার শুনেছিলেন স্ল্যাগট। কিন্তু সেই বই আর লেখা হয়নি। অবশেষে ২০২১ সালে স্ল্যাগট নিজেই উদ্যোগ নেন। চার বছর পর ৫১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমুর বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ায় প্রায় তিন হাজার বাঘ থাকলেও ১৯৩০-এর দশকে সেই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৩০ টিতে। পরে শিকার নিষেধাজ্ঞা ও সংরক্ষিত এলাকা গড়ে ওঠায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দারিদ্র্য ও অবৈধ শিকারের কারণে আবারও বাঘের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। ঠিক সেই সময় শুরু হয় সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট।
এই প্রকল্পে মার্কিন বিজ্ঞানীরা অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা দেন, আর রুশ সংরক্ষণবিদেরা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান। রেডিও ও জিপিএস কলার ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বাঘের চলাচল, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনচক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। প্রকল্প চলাকালে ১১৪টি বাঘ ধরা ও ছাড়া হয়। এর মধ্যে ‘ওলগা’ নামের একটি বাঘকে ১৩ বছর ধরে অনুসরণ করা হয়—যা গবেষকদের কাছে তাকে শুধু গবেষণার নম্বর নয়, এক জীবন্ত চরিত্রে পরিণত করে।
দেখা গিয়েছিল—প্রকল্পটির প্রথম এক দশকে যতগুলো বাঘ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তার ৭৫ শতাংশই ছিল চোরাশিকারের ফল। স্ল্যাগট লিখেছেন, বাঘের জীবন মোটেও শান্ত বা রোমান্টিক নয়—বরং সহিংস জীবন তাদের।
ওই প্রকল্পের গবেষণার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছিল নতুন সংরক্ষিত এলাকা। এর ফলে সুরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়। তবে ২০১০ সালের পর বিদেশি সংস্থার ওপর রুশ সরকারের সন্দেহ বাড়তে থাকে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর অনেক আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা দেশটিতে নিষিদ্ধ হয়।
রাশিয়ার সরকার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করলেও আইইউসিএন-এর হিসাব অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক বাঘের সংখ্যা এখন ২৬৫ থেকে ৪৮৬-এর মধ্যে, যা স্থিতিশীল হলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। স্ল্যাগটের মতে, পুরোপুরি সমাধান হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়। তবে এটি একটি সাফল্য, যা টিকিয়ে রাখতে হলে নিয়মিত নজরদারি ও আন্তর্দেশীয় সহযোগিতা অপরিহার্য।

রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফল্য ও সংকট।
বইটি লেখার প্রেক্ষাপট নিয়ে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সিএনএন লিখেছে—২৫ বছরের বন্ধুত্বে সহকর্মী ডেল মিকুয়েলের মুখে ‘একদিন এ নিয়ে বই লিখব’ কথাটি বহুবার শুনেছিলেন স্ল্যাগট। কিন্তু সেই বই আর লেখা হয়নি। অবশেষে ২০২১ সালে স্ল্যাগট নিজেই উদ্যোগ নেন। চার বছর পর ৫১২ পৃষ্ঠার এই বইয়ে তিনি তুলে ধরেন কীভাবে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমুর বাঘকে বিলুপ্তির হাত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ায় প্রায় তিন হাজার বাঘ থাকলেও ১৯৩০-এর দশকে সেই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৩০ টিতে। পরে শিকার নিষেধাজ্ঞা ও সংরক্ষিত এলাকা গড়ে ওঠায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দারিদ্র্য ও অবৈধ শিকারের কারণে আবারও বাঘের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। ঠিক সেই সময় শুরু হয় সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট।
এই প্রকল্পে মার্কিন বিজ্ঞানীরা অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা দেন, আর রুশ সংরক্ষণবিদেরা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান। রেডিও ও জিপিএস কলার ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বাঘের চলাচল, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনচক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। প্রকল্প চলাকালে ১১৪টি বাঘ ধরা ও ছাড়া হয়। এর মধ্যে ‘ওলগা’ নামের একটি বাঘকে ১৩ বছর ধরে অনুসরণ করা হয়—যা গবেষকদের কাছে তাকে শুধু গবেষণার নম্বর নয়, এক জীবন্ত চরিত্রে পরিণত করে।
দেখা গিয়েছিল—প্রকল্পটির প্রথম এক দশকে যতগুলো বাঘ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল, তার ৭৫ শতাংশই ছিল চোরাশিকারের ফল। স্ল্যাগট লিখেছেন, বাঘের জীবন মোটেও শান্ত বা রোমান্টিক নয়—বরং সহিংস জীবন তাদের।
ওই প্রকল্পের গবেষণার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছিল নতুন সংরক্ষিত এলাকা। এর ফলে সুরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়। তবে ২০১০ সালের পর বিদেশি সংস্থার ওপর রুশ সরকারের সন্দেহ বাড়তে থাকে। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর অনেক আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা দেশটিতে নিষিদ্ধ হয়।
রাশিয়ার সরকার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করলেও আইইউসিএন-এর হিসাব অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক বাঘের সংখ্যা এখন ২৬৫ থেকে ৪৮৬-এর মধ্যে, যা স্থিতিশীল হলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। স্ল্যাগটের মতে, পুরোপুরি সমাধান হয়ে গেছে, বিষয়টি এমন নয়। তবে এটি একটি সাফল্য, যা টিকিয়ে রাখতে হলে নিয়মিত নজরদারি ও আন্তর্দেশীয় সহযোগিতা অপরিহার্য।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আগামী ৭২ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্য
১৮ জুন ২০২৪
অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
৩৮ মিনিট আগে
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগে
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এই কর্মশালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৬০ জন ট্রাফিক সার্জেন্ট, বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচজন কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা অংশ নেন।
কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান (এনডিসি)।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ট্রাফিক সার্জেন্টদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাথে নিয়ে ভলান্টিয়ারদের সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পেইন শুরু করব। কয়েকটি নীরব এলাকাকে এবার আমরা শব্দ দূষণমুক্ত করতে চাই।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে চলেন আমরা হর্নের বিরুদ্ধে অভিযান এবং সচেতনতা একসাথে পরিচালনা করি এবং এটা চলমান রাখতে হবে। কারণ, আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে—সেটা এক দিনে হবে না, কিন্তু চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে।’ এই বিধিমালা বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। তিনি জানান, হালনাগাদ বিধিমালায় প্রথমবারের মতো পুলিশকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ১০৫ জন। এই জনবল দিয়ে দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরকে ট্রাফিকিং করা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু তারপরও ডিএমপির ট্রাফিক সদস্যগণ নিরলসভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।’
আনিছুর রহমান আরও বলেন, এই বিধিমালায় যেহেতু ট্রাফিক সার্জেন্টদের ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোতে ৯৮০ জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছেন—তাঁদের দিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ট্রাফিক সার্জেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। এই যে উনারা রাত-দিন, ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগটুকু যেহেতু পেয়েছি, কাজেই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
নিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ‘পরিবেশর সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিকে আমাদের সবার চর্চার মধ্যে আনতে হবে। একটু একটু করে করতে থাকলে একদিন নিশ্চয়ই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এনডিসি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানমও বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় বিগত থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকার জন্য উপাচার্যকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে ৫০টি সাউন্ড লেভেল মিটার দেওয়া হয়, যার একটি ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের হাতে তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত এই কর্মশালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৬০ জন ট্রাফিক সার্জেন্ট, বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচজন কর্মকর্তা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট, পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা অংশ নেন।
কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান (এনডিসি)।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ট্রাফিক সার্জেন্টদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের সাথে নিয়ে ভলান্টিয়ারদের সম্পৃক্ত করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পেইন শুরু করব। কয়েকটি নীরব এলাকাকে এবার আমরা শব্দ দূষণমুক্ত করতে চাই।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে চলেন আমরা হর্নের বিরুদ্ধে অভিযান এবং সচেতনতা একসাথে পরিচালনা করি এবং এটা চলমান রাখতে হবে। কারণ, আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে—সেটা এক দিনে হবে না, কিন্তু চেষ্টাটা চালিয়ে যেতে হবে।’ এই বিধিমালা বাস্তবায়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালায় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। তিনি জানান, হালনাগাদ বিধিমালায় প্রথমবারের মতো পুলিশকে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত আছেন ৪ হাজার ১০৫ জন। এই জনবল দিয়ে দুই কোটি মানুষের ঢাকা শহরকে ট্রাফিকিং করা খুবই চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু তারপরও ডিএমপির ট্রাফিক সদস্যগণ নিরলসভাবে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।’
আনিছুর রহমান আরও বলেন, এই বিধিমালায় যেহেতু ট্রাফিক সার্জেন্টদের ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোতে ৯৮০ জন ট্রাফিক পুলিশ রয়েছেন—তাঁদের দিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ট্রাফিক সার্জেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। এই যে উনারা রাত-দিন, ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করেন, তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানোর সুযোগটুকু যেহেতু পেয়েছি, কাজেই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
নিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ‘পরিবেশর সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিকে আমাদের সবার চর্চার মধ্যে আনতে হবে। একটু একটু করে করতে থাকলে একদিন নিশ্চয়ই একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।’
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এনডিসি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিধিমালা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানমও বক্তব্য দেন।
কর্মশালায় বিগত থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকার জন্য উপাচার্যকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে ৫০টি সাউন্ড লেভেল মিটার দেওয়া হয়, যার একটি ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনারের হাতে তুলে দেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আগামী ৭২ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্য
১৮ জুন ২০২৪
অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
৩৮ মিনিট আগে
রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফ
৮ ঘণ্টা আগে
দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। আইকিউএয়ারের সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৫৪। যা নির্দেশ করে, ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেচারাম দেউরি, কল্যাণপুর, দক্ষিণ পল্লবী, শান্তা ফোরাম, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে থাকা দিল্লির একিউআই স্কোর ৫০৭। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (১৯১), পাকিস্তানের লাহোর (১৯১), ভারতের কলকাতা (১৮১) ও মুম্বাই (১৬৫)।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

দিল্লির বাতাসের অবস্থা আবারও দুর্যোগপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ রোববার দূষিত শহর তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। আইকিউএয়ারের সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৫৪। যা নির্দেশ করে, ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, পেয়ারাবাগ রেল লাইন, বেচারাম দেউরি, কল্যাণপুর, দক্ষিণ পল্লবী, শান্তা ফোরাম, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে থাকা দিল্লির একিউআই স্কোর ৫০৭। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (১৯১), পাকিস্তানের লাহোর (১৯১), ভারতের কলকাতা (১৮১) ও মুম্বাই (১৬৫)।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আগামী ৭২ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয়কেন্দ্র চালুর পাশাপাশি বন্য
১৮ জুন ২০২৪
অগ্রহায়ণের বিদায়বেলায় আজ সোমবার সকালবেলা রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন রোববার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকাল ৬টায় সেটি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
৩৮ মিনিট আগে
রাশিয়ার আমুর বা সাইবেরিয়ান বাঘ রক্ষার দীর্ঘ ও নাটকীয় সংগ্রামের ভেতরের গল্পটি তুলে ধরেছে নতুন একটি বই। ‘টাইগার্স বিটুইন এম্পায়ার্স’ নামের এই বইটি লিখেছেন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী জনাথন স্ল্যাগট। এতে উঠে এসেছে বিশ্বের দীর্ঘতম বাঘ গবেষণা কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত ‘সাইবেরিয়ান টাইগার প্রজেক্ট’–এর ইতিহাস, সাফ
৮ ঘণ্টা আগে
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন জারি করা শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এক দিকনির্দেশনামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর অডিটরিয়ামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
১২ ঘণ্টা আগে