Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র কোন পথে এগোচ্ছে, জানালেন আবহাওয়াবিদেরা

সৌগত বসু, ঢাকা
আপডেট : ২৭ মে ২০২৪, ০৮: ৪৪
ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র কোন পথে এগোচ্ছে, জানালেন আবহাওয়াবিদেরা

কয়েক দিন ধরেই ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র ভাগ (আই বা চোখ) বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়া দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করার কথা বলা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন স্যাটেলাইট ও পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে, ঝড়ের কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন (ভারতীয় অংশ), কলকাতা হয়ে দেশের খুলনা, মেহেরপুর–কুষ্টিয়া অঞ্চল দিয়ে স্থলভাগ অতিক্রম করবে। এ ক্ষেত্রে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে বেশি প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে কেন্দ্রের চারপাশের প্রভাব পড়বে পটুয়াখালী থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত।

ঘূর্ণিঝড়ে রিমালের সর্বশেষ হালনাগাদের বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. শামীম হাসান ভুইয়া জানান, উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। 

রিমালের প্রভাব উপকূলে পড়তে শুরু করেছে। কোন পথে অতিক্রম করবে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। ছবি: ড. বিশ্বজিৎ নাথপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও খেপুপাড়ার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ১ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করে পরবর্তী পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। 

রিমালের কেন্দ্র কোন দিক দিয়ে অতিক্রম করবে সে ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কিন্তু মোংলার কাছে সাগরদ্বীপ দিয়ে খেপুপাড়ার মধ্যে যেকোনো জায়গা দিয়ে (রিমাল) পার হবে এমনটা বলেছি। একটা ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র বরাবর উপকূল অতিক্রম করলে তাকে বলা হয় উপকূল অতিক্রম।’ 

পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানিতে ২৪টি গ্রাম প্লাবিত, পানিতে ভেসে গিয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকাকালাম মল্লিক বলেন, ‘একটা ঝড়ের চোখের ব্যাস ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার অথবা ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার হয়ে থাকে। মোংলা থেকে সাগরদ্বীপের দূরত্ব দেখলেই বোঝা যাবে। সাইক্লোনের ব্যাস এদিক–সেদিক হবেই। এটি একটা পয়েন্ট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে না। একটা এরিয়া নিয়ে করে। একে বলে সাইক্লোনের মট এরিয়া। মট এরিয়া একটু এদিক–সেদিক হবেই। সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মট এরিয়াকে বিশ্লেষণ করি। বৈজ্ঞানিক ভাবে উপকূল অতিক্রম করা মানে সেটির কেন্দ্রের উপকূল অতিক্রম করা বোঝায়।’ 

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তৈরি মানচিত্র। ছবি: সংগৃহীতজাপানি স্যাটেলাইট দিয়ে রিমাল পর্যবেক্ষণ করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ নাথ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ঝড়ের কেন্দ্র কখনো পটুয়াখালীর খেপুপাড়া দিয়ে পার হবে না। তবে সেখানে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। এটির কেন্দ্র ভাগ মূলত ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে পার হবে। সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, হলদিবাড়ি ও সুন্দরবন অংশ দিয়ে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশ ঢুকবে। আর এতে করে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে সাতক্ষীরা ও খুলনা অঞ্চল।’ 

ড. বিশ্বজিৎ নাথ জানান, রিমাল রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশ পার করবে। পুরো রাত এটি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হয়ে অগ্রসর হবে। এ সময় এর গতিবেগ ১৫০ কিলোমিটারের কাছাকাছি থাকতে পারে। এই অঞ্চলে স্থলভাগের তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে সে এই শক্তি পাবে। আর কেন্দ্রের ডান অংশ তাণ্ডব চালাবে সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর অংশে। আর রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে এটি কলকাতা পার হবে। এরপর কুষ্টিয়া, মেহেরপুর হয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে আগামীকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এ সময় এর গতিবেগ থাকতে পারে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটারের মধ্যে। তবে যখন এটি স্থলে প্রবেশ করবে তখন থেকেই এর প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলগুলোতে পড়বে। এরই মধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। 
 
এই আবহাওয়া গবেষক আরও বলেন, ‘ফরিদপুর, পাবনা ও রাজশাহী অঞ্চল রিমালের তাণ্ডব মোকাবিলা করবে। ২৮ তারিখ পুরোটা সময় অবস্থান করে এটি মিলিয়ে যাবে।’ 
 
রিমালের কারণে ১০ থেকে ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে জানিয়ে বিশ্বজিৎ নাথ বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে আঘাত করার সময় এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ১২০ থেকে ১২৫ কিলোমিটার থাকতে পারে। কিছু সময়ের জন্য ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। সাতক্ষীরা ও শ্যামনগর রিমালের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ 

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের হলদিবাড়ি দিয়ে রিমালের কেন্দ্র অতিক্রম করার কথা। এটির নিচের অংশ যখন স্থলভাগে ঢুকবে তখন এর গতিবেগ বেশি হবে। এটি তখন সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে তাণ্ডব চালাবে। আর রিমালের সমস্ত অংশ যখন স্থলভাগ অতিক্রম করতে থাকবে তখন এর গতি কমতে থাকবে। কলকাতা হয়ে এটি যশোর, খুলনা এই অংশ দিয়ে বাংলাদেশের ওপরের দিকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে কমবে তাপমাত্রা, পড়বে কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৬
সারা দেশে কমবে তাপমাত্রা, পড়বে কুয়াশা

কার্তিক মাস বিদায় নিতে আর মাত্র দিন সাতেক বাকি। এরপর আসবে হেমন্তকাল। প্রকৃতিতেও লেগেছে হেমন্তের ছোঁয়া। দেশের কোথাও কোথাও পড়ছে হালকা শীত। কোথাওবা পড়েছে হালকা কুয়াশা। আজ শুক্রবারের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসেও সারা দেশে কুয়াশা পড়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মধ্যরাত থেকে ভোরের দিকে সারা দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এদিকে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আজ সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা দিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে গরমের অনুভূতিও আগের মতো থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৩ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৬ মিনিটে এবং আগামীকাল শনিবার সূর্যোদয় হবে ৬টা ৯ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, ঢাকার অবস্থা অস্বাস্থ্যকর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার এ তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির অবস্থা আজ দুর্যোগপূর্ণ। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ১১টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৭৭, যা গতকাল ছিল ১১১। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ৮ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ১৭তম স্থানে।

বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৫৯৭, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের কলকাতা, চীনের বেইজিং, ইরাকের বাগদাদ ও চীনের উহান। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২২৮, ২১৩, ১৯৪ ও ১৮৭।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক, কমবে তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৫
সারা দেশে আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক, কমবে তাপমাত্রা

রাজধানী ঢাকার আকাশে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সূর্যের দেখা নেই। আকাশ হালকা মেঘে ঢাকা। আজ দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া এমনই মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে তাপমাত্রা কমবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ১৬ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৮ মিনিটে।

এদিকে সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে কলকাতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ শিশু ও বৃদ্ধদের মতো সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১১১, যা গতকাল ছিল ১০৫। দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় আজ ১৭তম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ১১তম স্থানে।

বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের কলকাতা শহরটির বায়ুমান আজ ২৬৭, যা অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ভারতের দিল্লি, চীনের বেইজিং ও মিসরের কায়রো। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২১৪, ২০৭, ১৯৩ ও ১৮১।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত