Ajker Patrika

কৃষিতে স্বপ্ন বুনছেন নিশিতা নাজনীন নীলা

মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঝিকরগাছা (যশোর)
নাজনীন নীলা
নাজনীন নীলা

ঘরের ভেতর সাজানো দৃষ্টিনন্দন নানা পুরস্কার। এর কোনোটিতে লেখা ইংরেজি, আবার কোনোটিতে হিন্দি। স্মারকের গায়ে ঝলমল করছে সোনালি অক্ষরে লেখা একটি নাম—নিশিতা নাজনীন নীলা। কৃষিতে সম্পৃক্ত থাকার অংশ হিসেবে নীলার হাতে উঠেছে এসব পুরস্কার।

ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি প্রেম

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার পানিকাউরিয়া গ্রামের মেয়ে নীলা এখন কলারোয়া সরকারি মহিলা কলেজের বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে স্নাতক শেষ করে বর্তমানে তিনি স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন করছেন। মা-বাবা দুজনই কলেজশিক্ষক হলেও নীলার স্বপ্ন ভিন্ন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে স্কাউটসে যোগ দিয়ে শেখেন সেবা, শৃঙ্খলা আর নেতৃত্ব। সেখান থেকে জন্ম নেয় প্রকৃতি ও কৃষির প্রতি ভালোবাসা। মাধ্যমিকে স্কাউটস, পরে কলেজে রোভার স্কাউটসে অংশ নিয়ে জিতেছেন নানা পুরস্কার। ২০২২ সালে খুলনা রেলওয়ে মুক্ত স্কাউটস গ্রুপের হয়ে পাঁচ দিনব্যাপী ১৭০ কিলোমিটার পথ হেঁটে অর্জন করেন ‘পরিভ্রমণ ব্যাজ’।

দেশ-বিদেশে সম্মানিত

এ পর্যন্ত দেশ-বিদেশের ১০টির বেশি পুরস্কার জিতেছেন নিশিতা নাজনীন নীলা। এগুলোর মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ ইংল্যান্ড, ভারত ও নেপালের অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন তিনি। ২০২২ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট তাঁকে উদীয়মান বিজ্ঞানীর সম্মাননা এবং সঙ্গে অর্থমূল্য লক্ষাধিক টাকা পুরস্কৃত করে। ২০২৪ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল হর্টিকালচার সোসাইটি তাঁকে ‘গার্ডেন মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ এবং আড়াই লাখ টাকা অর্থমূল্যের পুরস্কার দেয়। সবশেষে, ২০২৫ সালে নেপালের কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ তাঁকে সম্মানিত করে ‘গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে। দেশেও তিনি পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি সম্মাননা। এসব তাঁর কৃষির প্রতি অবিচল নিষ্ঠারই স্বীকৃতি।

খামারেই সুখ, কৃষিতেই জীবন

নীলার বাড়িতে প্রবেশ করলে বোঝা যায়, কৃষি তাঁর নিছক আগ্রহ নয়, ভালোবাসা। তাঁর বাড়ির খামারে রয়েছে অর্ধশতাধিক গরু, ছাগল, ভেড়া, খরগোশ। দেশীয় হাঁস-মুরগির সঙ্গে পালিত হচ্ছে বিদেশি প্রজাতির পাখি ও কবুতর।

এক একর জমিতে আমবাগান, এক বিঘা জমিতে বাঁশঝাড় আর মেহগনিগাছের বাগান, জলাশয়ে মিশ্র মাছ চাষ এবং দেড় শ প্রজাতির উদ্ভিদের সমাহার রয়েছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছও রয়েছে তাঁর বাগানে। ‘দিনের পর দিন আমি গাছের সঙ্গে থাকি। তাদের যত্ন নিতে নিতে মনে হয়, এরা আমারই সন্তান,’—হাসিমুখে বললেন নীলা।

মানবতার পরশ

নিশিতা নাজনীন নীলা কৃষি উদ্যোগের বাইরেও আছে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সাতক্ষীরা শহরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিনি আশ্রয় দিয়েছেন পাঁচজন অসহায়, স্বজনহীন বৃদ্ধাকে। নিজেই তাঁদের সেবাযত্ন করেন, চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করেন। কোনো সংগঠন নয়, শুধু নিজের ভালোবাসা থেকে নীলা এই কাজ করছেন কয়েক বছর ধরে। নীলা মনে করেন, ‘মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারাটাই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।’

কৃষিতেই স্বপ্ন বোনেন

নীলার বাবা মো. আবদুল ওহাব এবং মা মোছা. বদরুন্নেছা মেয়ের কৃষিপ্রেমে গর্বিত। নীলা চাকরি নয়, কৃষিকেই জীবনের পথ হিসেবে বেছে নিতে চান। নীলা বলেন, ‘আমার দাদা-চাচারা কৃষিকাজ করতেন। আমি তাঁদের পথ ধরেই হাঁটতে চাই। লেখাপড়া শেষে কোনো চাকরি করব না, বরং কৃষির মাধ্যমে মানুষকে কাজের সুযোগ করে দিতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা প্রত্যাখ্যান, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষকদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ অথবা সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা করেছে সরকার। এদিকে এই বাড়িয়ে দেওয়া ভাতা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকেরা।

আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়ম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, ‘সরকারের বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার) প্রদান করা হলো।’

আদেশে আরও বলা হয়, ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সব ধরনের আর্থিক বিধিবিধান মানতে হবে এবং অনিয়ম ঘটলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

এই আদেশ প্রসঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার সময়ই আমরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি।’

দুপুর ১২টায় শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ভুখা মিছিল করার কথা ছিল। মিছিল হবে কি না জানতে চাইলে সদস্যসচিব জানান, দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। এ কারণে ভুখা মিছিল বেলা ৩টায় শুরু হবে।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে সরকার। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেয় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট। এই সংগঠনের ডাকে ১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ মোড় অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছেন।

গত বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি শিক্ষক-কর্মচারীদের।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রত্যাশা

নতুন ক্যাম্পাস, উন্নত সুযোগ ও বিশ্বমানের শিক্ষা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম
অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম

এ বছর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্ন জয়ে অটল প্রাণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণার নতুন দিগন্তে পা বাড়াচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৮৫৮ সালে পুরান ঢাকায় ‘ব্রাহ্ম স্কুল’ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ১৮৭২ সালে নাম পরিবর্তনের পর হয় জগন্নাথ স্কুল। ১৮৮৪ সালে দ্বিতীয় মানের কলেজে উন্নীত হয়। ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভের পর থেকে জবি দেশের উচ্চশিক্ষা ও জ্ঞানচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপাচার্য ও শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রত্যাশা, অনুভূতি ও স্বপ্ন ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের বিভিন্ন মত তুলে ধরেছেন রাকিবুল ইসলাম

শীর্ষ গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার অঙ্গীকার

অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম

উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩৮টি বিভাগে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উন্নয়ন প্রকল্প মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবং ভবিষ্যতে আবাসিক হল নির্মাণ, নতুন কোর্স চালু এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হয়েছে স্কিল ডেভেলপমেন্ট, মেন্টরশিপ ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম। বিশেষ বৃত্তি, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ক্যাম্পাস উন্নয়নও দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়িত হবে। সবার সহযোগিতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশের শীর্ষ গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি, যাতে দেশের উন্নয়নে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

ইমরান হুসাইন
ইমরান হুসাইন

স্বপ্ন এখন নতুন ক্যাম্পাস

ইমরান হুসাইন

সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি

কলেজ থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দীর্ঘ পথচলা আমাদের সংগ্রাম এবং তারুণ্যের শক্তি ও সংগ্রামের প্রতীক। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই মহান মানুষদের, যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আমাদের এখন স্বপ্ন হলো কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাসের বাস্তবায়ন। এটি দ্রুত সম্পন্ন হলে আবাসন ও পরিবহন সমস্যা দূর হবে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের প্রত্যাশা, প্রশাসন দ্রুত নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের উন্নত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে।

মো. কামরুল হাসান
মো. কামরুল হাসান

জবি যেখানে অনন্য

মো. কামরুল হাসান

শিক্ষার্থী, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ

সুপ্রাচীন ঐতিহ্য, অর্জন ও সম্ভাবনার সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে এই প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক আন্দোলনে জবির অংশগ্রহণ বীরত্বের প্রমাণ। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত হওয়ার পর ১৯ বছরের ইতিহাসে আন্দোলন, সংগ্রাম আর সংকটের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের অর্জন অনন্য; বিশেষ করে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সব মত-পথের ঐক্য, শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহাবস্থান বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মেধা, দেশপ্রেম এবং ত্যাগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জীবন-ব্যক্তিত্বের বিকাশে জবির অবদান অনন্য। প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণে মুখর এই ক্যাম্পাস আমাদের আবেগ ও স্মৃতিতে অমলিন।

মোছা. রাতিয়া খাতুন
মোছা. রাতিয়া খাতুন

একবিংশ শতাব্দীর পথে রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা

মোছা. রাতিয়া খাতুন

শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস শুধু একটি তারিখ নয়, এটি জ্ঞানচর্চার গৌরবগাথা। প্রবীণ শিক্ষাবিদ থেকে নবীনতম শিক্ষার্থী—সবার হৃদয়ে একই সুর বাজে। আমরা চাই, ক্লাসরুম থেকে লাইব্রেরি পর্যন্ত সর্বত্র প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার হোক। প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেন্টার শক্তিশালী হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সুস্থ মনই সেরা জ্ঞানের সূত্র। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শুধু অতীতের গৌরব নয়, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া জরুরি। জগন্নাথ হোক জ্ঞানান্বেষণের অনন্য প্রতীক।

সুরাইয়া বিনতে হাসান
সুরাইয়া বিনতে হাসান

আমার স্বপ্নের প্রথম গন্তব্য

সুরাইয়া বিনতে হাসান

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার স্বপ্নের গন্তব্য। ভেবেছিলাম, এখানে পাব জ্ঞানের আলো, মুক্ত চিন্তার আকাশ এবং নতুন বন্ধুত্বের জগৎ। কিন্তু বাস্তবতা জানাল, বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শুধু আনন্দ কিংবা ক্লাস নয়, এটি এক কঠিন যাত্রা। সীমিত সুযোগ, অনিশ্চয়তা, প্রতিযোগিতা ও রাজনীতি মাঝেমধ্যে ক্লান্ত করেছে। তবু এখানে শিখেছি ধৈর্য, অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাস। জগন্নাথ আমাকে কেবল শিক্ষা দেয়নি, শিখিয়েছে জীবনে আসা ঝড়েও টিকে থাকার কৌশল। এটি আমার সাহসের ঠিকানা এবং নিজের গড়ে ওঠার গল্পের শুরু।

মো. কায়েস মাহমুদ সৌরভ
মো. কায়েস মাহমুদ সৌরভ

যেখানে সবাই একে অপরের স্বপ্নকে উৎসাহ দেয়

মো. কায়েস মাহমুদ সৌরভ

শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে প্রথম দিন পা রাখার অনুভূতি আজও হৃদয়ে অমলিন। চারপাশের শিক্ষার্থীদের হাসি, আলোচনা ও উদ্যম বারবার মনে করিয়ে দেয়, আমরা এক পরিবার, যেখানে সবাই একে অপরের স্বপ্নকে উৎসাহ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমার জন্য বিশেষ; কারণ, এই দিনে আমি শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা ও গর্ব অনুভব করি। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় এমন পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে আমরা বই পড়ার পাশাপাশি সৃজনশীলতা, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্বও শিখব। এই অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের স্বপ্নকে শক্তি দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্দোলনের মধ্যেই ফের বাড়ল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

টানা আন্দোলন করে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। আজ রোববার তাঁদের শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালাবাটি নিয়ে ‘ভুখা কর্মসূচি’ রয়েছে। এরই মধ্যে তাঁদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ অথবা সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা করেছে সরকার।

আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের উপসচিব মিতু মরিয়ম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এই তথ্য জানা যায়।

অফিস আদেশে বলা হয়, সরকারের বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার) প্রদান করা হলো।

আরও বলা হয়, ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সব ধরনের আর্থিক বিধিবিধান মানতে হবে এবং অনিয়ম ঘটলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে সরকার। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেয় এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট। এই সংগঠনের ডাকে ১২ অক্টোবর থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় প্রেসক্লাব ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান, সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ মোড় অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করছেন।

গত বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ নির্ধারণের দাবি শিক্ষক-কর্মচারীদের।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএইচটি ও ম্যাটস ভর্তি পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর, প্রবেশপত্র সংগ্রহ শুরু

শিক্ষা ডেস্ক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ও মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলগুলোর (ম্যাটস) ভর্তি পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ১৯-২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডেরওয়েব পোর্টাল থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

এবারে ৯টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) ২ হাজার ৩৭৯ জন এবং ৭টি মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে (ম্যাটস) ৬৬৪টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন রয়েছে।

এসএসসি সিলেবাস অনুযায়ী, এমসিকিউ পদ্ধতিতে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় বিষয় ও নম্বর থাকবে বাংলায় ১৫, ইংরেজিতে ১৫, গণিতে ১৫, পদার্থবিজ্ঞানে ১৫, রসায়নে ১৫, জীববিজ্ঞানে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর। আর পরীক্ষার সময় থাকবে এক ঘণ্টা। পরীক্ষায় পাস নম্বর নির্ধারিত করা হয়েছে ৪০।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-৫ এর গুণিতক দ্বিগুণ হিসেবে ১০ নম্বর এবং ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের যোগফল থেকে জাতীয় মেধা অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। কোনো মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত