Ajker Patrika

অপর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক শিক্ষার ওপর

আমিনুল হক, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) 
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৫০
অপর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক শিক্ষার ওপর

উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম গাইবান্ধা। ভৌগোলিক দিক থেকে রংপুর বিভাগের দক্ষিণ প্রান্তে এই জেলার অবস্থান। জেলার সাত উপজেলার মধ্যে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি—এই চার উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, যমুনাসহ ছোট ছোট নদী। এসব নদীর বুকে জেগে ওঠা ছোট-বড় মিলিয়ে ১৬৫টি চর রয়েছে। এই চার উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের 
মধ্যে এসব চরের বিস্তৃতি।

একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্যমতে, গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। সাক্ষরতার হার ৬৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। স্বাধীন বাংলাদেশে যেসব বিষয়ে অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম শিক্ষা। এর মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সম্প্রসারণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে শিক্ষার অবস্থা বেশ নাজুক। নদীবেষ্টিত এসব অঞ্চলে ১১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে মাত্র ১২টি। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের মাদ্রাসা আছে ৩টি। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারে অনিয়মিত। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য একটিও কলেজ বা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। ফলে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোতেই ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে জেলার সামগ্রিক শিক্ষা ও আর্থসামাজিক অবস্থার ওপর। অনেকে জড়িয়ে পড়ছে বাল্যবিবাহসহ শিশুশ্রমের মতো নেতিবাচক কাজে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার চরাঞ্চলের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না।

যারা ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারে না। এর পেছনে দারিদ্র্য, চর এলাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অপ্রতুলতা, অভিভাবকদের অসচেতনতা, দুর্গম যাতায়াতব্যবস্থা এবং বাল্যবিবাহ প্রধানতম।

চরাঞ্চলের অভিভাবকেরা জানান, প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষ করে আর পড়াশোনা করে না। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, বাড়ির কাছে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তান ভর্তি করিয়ে খরচ জোগান দেওয়া চরাঞ্চলের বেশির ভাগ পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। যেসব সচেতন অভিভাবকের সামর্থ্য আছে, শুধু তাঁরাই সন্তানদের শহরে আবাসিক হোস্টেল বা মেসে রেখে পড়াশোনা করাতে পারেন। অথচ চরের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনেক শিক্ষার্থী যথেষ্ট মেধাবী। গাইবান্ধার ১৬৫টি চরের শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে জন্য অভিভাবকেরা সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত