Ajker Patrika

আইসিসিআর স্কলারশিপ

একটি মানসম্পন্ন প্রবন্ধ লেখার কৌশল

রাজীব চন্দ্র দাস
একটি মানসম্পন্ন প্রবন্ধ লেখার কৌশল

বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কাছে আন্তর্জাতিক শিক্ষাবৃত্তি একটি বড় আকর্ষণ। এর মধ্যে ভারতের আইসিসিআর (ICCR) বৃত্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই স্কলারশিপে আবেদন করার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো প্রবন্ধ বা ‘Essay’ লেখা। এটি কেবল আপনার প্রাতিষ্ঠানিক যোগ্যতা নয়, বরং আপনার চিন্তাভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। কীভাবে একটি প্রভাবশালী ও মানসম্পন্ন প্রবন্ধ লেখা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন আইসিসিআর স্কলারশিপপ্রাপ্ত এবং বর্তমানে নালসার ইউনিভার্সিটি অব ল, হায়দরাবাদে এলএলবি অধ্যয়নরত রাজীব চন্দ্র দাস।

টপিক বেছে নেওয়া

প্রথমেই প্রম্পটটি ভালোভাবে পড়ুন এবং এমন একটি বিষয় বেছে নিন, যা আপনার জীবনের অভিজ্ঞতা, আগ্রহ অথবা দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। একাধিক বিষয়ের ওপর লিখলে আবেদন বাতিল হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি কোনো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কিছু শিখে থাকেন, তবে ‘The lessons we take from obstacles...’ ধরনের প্রম্পট আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে।

প্রবন্ধের কাঠামো

একটি মানসম্পন্ন প্রবন্ধ সাধারণত তিনটি অংশে বিভক্ত হয়:

(ক) ভূমিকা: একটি আকর্ষণীয় উক্তি বা বাক্য দিয়ে শুরু করুন, যা পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এরপর লেখার উদ্দেশ্য ও থিসিস স্টেটমেন্ট দিন।

  • উদাহরণ: ‘Failure is not the opposite of success; it is a part of success.’

(খ) মূল অংশ: এখানে আপনার অভিজ্ঞতা, উপলব্ধি ও শিক্ষা ব্যাখ্যা করুন। প্রতিটি অনুচ্ছেদে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট তুলে

  • ধরুন এবং সেটি বাস্তব উদাহরণ
  • ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে
  • উপস্থাপন করুন।

(গ) উপসংহার: প্রবন্ধের মূল বার্তাগুলো সংক্ষেপে পুনরায় তুলে ধরুন এবং ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি বা মানবিক উপলব্ধির মাধ্যমে লেখা শেষ করুন।

প্রবন্ধ লেখার কার্যকর কৌশল

ব্যক্তিগত কিন্তু সর্বজনীন চিন্তা উপস্থাপন করুন: আপনার অভিজ্ঞতা হয়তো একান্ত ব্যক্তিগত, তবে তা থেকে উঠে আসা শিক্ষা যেন সকলের কাছে প্রাসঙ্গিক হয়।

‘বলবেন না, দেখান’ কৌশল

ব্যবহার করুন: ‘I am confident’ না বলে এমন একটি পরিস্থিতি তুলে ধরুন, যেখানে আপনার আত্মবিশ্বাস প্রকট হয়েছে।

আত্মবিশ্লেষণ ও শেখা তুলে ধরুন: শুধু অভিজ্ঞতা নয়, আপনি তা থেকে কী শিখেছেন এবং কীভাবে তা আপনাকে গড়ে তুলেছে—এই দিকটি তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।

সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার করুন: অতিনির্বচনীয় শব্দ বা জটিল বাক্য পরিহার করুন। স্পষ্ট, আন্তরিক ও সংক্ষিপ্ত লেখাই সবচেয়ে কার্যকর।

শব্দসংখ্যা ও প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখুন: প্রবন্ধটি ৫০০ শব্দের মধ্যে সীমিত রাখার চেষ্টা করুন।

অপ্রাসঙ্গিক বিবরণ পরিহার করুন। কম লেখা গ্রহণযোগ্য, কিন্তু অতিরিক্ত নয়।

সম্পাদনা ও সংশোধন করুন: লেখা শেষ করার পর বানান ও ব্যাকরণ ভালোভাবে যাচাই করুন। প্রয়োজনে কারও সাহায্যে রিভিউ করান। নিখুঁত ও পরিশীলিত লেখা পাঠকের কাছে আপনার যত্ন ও নিষ্ঠা প্রকাশ করে।

সততা ও মৌলিকতা বজায় রাখুন: প্রবন্ধ অবশ্যই প্ল্যাজিয়ারিজমমুক্ত হতে হবে। অনুপ্রেরণা নিতে পারেন, তবে লেখা হতে হবে আপনার নিজস্ব চিন্তার প্রকাশ। অনুকরণ বা কৃত্রিমতা খুব সহজেই ধরা পড়ে।

আত্মবিশ্বাস ও মানবিকতা প্রকাশ করুন: আপনার লেখা যেন আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ হয়, তবে অহংকারমুক্ত। মানবিক অনুভব, দায়বদ্ধতা ও উপলব্ধির প্রকাশ একটি ভালো প্রবন্ধকে আরও স্মরণীয় করে তোলে।

অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত