Ajker Patrika

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

আব্দুল্লাহ সাদমান জামী
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪: ৩৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। ইতিমধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছ, তবে যারা এখনো পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি কীভাবে নিলে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়া যাবে, সেটি নিয়ে দ্বিধায় ভুগছ, তাদের জন্য আমার ভর্তি পরীক্ষার আলোকে এবং বিগত বছরগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক প্রার্থীদের পড়ানোর অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু কথা শেয়ার করব তোমাদের সঙ্গে। 

মান বণ্টন আগের মতোই
এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা বিভাগ এবং বিভাগ পরিবর্তন, অর্থাৎ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা প্রথমবারের মতো একসঙ্গে হবে। তবে উভয় অনুষদেই যেহেতু বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষাই নেওয়া হয়ে থাকে, তাই প্রশ্নপত্রে খুব বেশি পরিবর্তন হয়তো আসবে না। মান বণ্টন বিগত বছরগুলোর মতোই আছে; অর্থাৎ ৬০ মার্কের এমসিকিউ পরীক্ষা এবং ৪০ মার্কের লিখিত পরীক্ষা হবে, বাকি ২০ পরীক্ষার ফলাফলের ওপরে। তবে এমসিকিউ পরীক্ষায় নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি মার্ক পেলে তবেই সেই শিক্ষার্থীর লিখিত খাতা মূল্যায়ন করা হয়। তাই ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশে ভালো করাটা প্রথম শর্ত। দ্বিতীয়ত, ভালো সাবজেক্ট পেতে গেলে বাংলা ও ইংরেজিতে বেশ ভালো নম্বর পেতে হয়। লিখিত অংশে ভালো করাটা জরুরি হয়ে ওঠে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকার জন্য, কারণ শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার প্রথম দিকের সাবজেক্টগুলো খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। 

বহুনির্বাচনি পরীক্ষার প্রস্তুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত তিন থেকে চার বছরের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পাঠ্যবইভিত্তিক প্রশ্ন অনেক বেশি আসছে। যেমন ইংরেজিতে গ্রামারের চেয়ে পাঠ্যবইয়ের ভেতরের প্রশ্নকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের বলব, বাংলা ও ইংরেজি পাঠ্যবই লাইন বাই লাইন পড়তে, গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলো দাগিয়ে রাখতে। কারণ শর্ট সিলেবাস হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ছে কি না, সেটি বিগত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নপত্রে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রথমেই বলি ইংরেজির কথা। ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসের চাপ্টারগুলোর শব্দার্থ এবং সেগুলোর পার্টস অব স্পিচ, এমনকি গ্রামাটিক্যাল প্রশ্ন বইয়ের ভেতর থেকে করার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। গ্রামারের মধ্যে Identification of Parts of Speech, Voice, Narration, right form of verbs, subject verb agreement এগুলোর ওপরে খুবই ভালো দখল থাকতে হবে। এগুলো থেকে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন এলে সমাধান করার দক্ষতা যেন শিক্ষার্থীর থাকে। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কত কম সময়ে কত বেশি প্রশ্নের উত্তর করতে পারছ, মূলত সেটিই ঠিক করে দেয় ভর্তি পরীক্ষায় তোমার অবস্থান। তাই যে টপিক পড়বে, সে বিষয়ের বিগত বছরের প্রশ্নগুলো তুমি কত দ্রুত সময়ে সলভ করতে পারছ, সেটি ঘড়ি ধরে নিজে মূল্যায়ন করবে। সাধারণ জ্ঞানে আমরা দেখছি মানবিকের মৌলিক বিষয়গুলো থেকে অনেক বেশি প্রশ্ন আসছে, যেমন—অর্থনীতি ও পৌরনীতির পাঠ্যবই থেকে বিগত বছরের পরীক্ষায় অনেকগুলো প্রশ্ন এসেছে, যা মূলত আগের বছরগুলোতে দেখা যায়নি। তাই বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির বিষয়গুলো, সাম্প্রতিকের তথ্য পড়ার পাশাপাশি মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়াটা খুবই জরুরি। 

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি যেটি থাকে সেটি হচ্ছে, পরীক্ষায় বোধ হয় পূর্ণাঙ্গ মার্কস পাওয়া সম্ভব না। লিখিত পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বিষয়টি হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করে আসতে পারা।

বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন কমন পাওয়ার পরেও সব লিখে আসতে পারেনি শুধু সময়ের অভাবে। তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল সার্কুলার অনুযায়ী ইংরেজি ও বাংলার লিখিত অংশগুলো টপিক ধরে ধরে প্রতিদিন বেশ সময় নিয়ে প্র্যাকটিস করা উচিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় লিখিতর জন্য যতটুকু জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং যতটুকু সময় দেওয়া হয়, সেটিকেই মডেল হিসেবে ধরে নিয়ে প্র্যাকটিস করলে লিখিত পরীক্ষায় পূর্ণাঙ্গ মার্কস অর্জন অবশ্যই সম্ভব।

তুমি পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিশ্রম করলে পরীক্ষার হলে ভালো না করার কোনো কারণই নেই। যারা নিজেদের স্বপ্নের পেছনে শক্তভাবে লেগে থাকে, বিজয়ীদের দলে তাদের অবস্থান সুনিশ্চিত

ইংরেজি অংশের ক্ষেত্রে ট্রান্সলেশন, সেনটেন্স মেকিং, প্যারাগ্রাফ রাইটিং—এগুলো বেশি আসতে দেখা গেছে। পাশাপাশি কম্প্রিহেনশন, এক্সপ্লানেশন, রি-এরেঞ্জিং এবং ট্রান্সফরমেশন অব সেনটেন্সের ওপরে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

বাংলা লিখিতর ক্ষেত্রে বানান শুদ্ধি ও প্রমিতকরণ, মূলভাব লিখন, কবিতার উদ্ধৃতি ব্যাখ্যা, অনুবাদ, সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদ লেখন, মিলকরণ ইত্যাদি পড়ে যাওয়া জরুরি। 

কেমন হবে পরীক্ষার রুটিন
পরীক্ষার রুটিন করার আগে মূলত নিজের কোন বিষয়ে দক্ষতা বেশি আর কোন বিষয়ে দক্ষতা কম, সেটি নিজেই অ্যানালাইসিস করা জরুরি। সেই অনুযায়ী যে বিষয়ে দুর্বলতা বেশি, সেটির জন্য রুটিনে বেশি সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। যেমন ইংরেজি প্রশ্নপত্র যেহেতু মার্ক ওঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বলে বিবেচিত হয়, এ ক্ষেত্রে দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ইংরেজিতে সময় দেওয়া খুবই জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০-১৫ বছরের প্রশ্ন পড়লে প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনেকটা দূর হয়ে যায়; বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় কোন কোন টপিক থেকে কোন প্রশ্ন বেশি করে থাকে, সেটি নিজেই তুমি অনুধাবন করতে পারবে। তাই বেশ কয়েকবার প্রশ্ন ব্যাংক সমাধান করাটা জরুরি। সবশেষে বলব, প্রস্তুতি যখন একটা মোটামুটি জায়গায় চলে আসবে, তখন একটা মডেল টেস্টের বই কিনে নিজে নিজে পরীক্ষা দাও ঘড়ি ধরে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সময় সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, অন্যের প্রস্তুতির সঙ্গে তুলনা করা খুব বেশি সুবিধাজনক কিছু বয়ে নিয়ে আসে না, কারণ একেকজনের একেক বিষয়ে দক্ষতার স্তর একেক রকম হয়। তাই নিজের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলো বিশ্লেষণ করে সেখানে নিয়মিত সময় দিতে পারলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর অধরা থাকবে না।

নিজের সঙ্গে নিজের যুদ্ধে জয়!
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মানসিক চাপ থাকে অনেক। এ সময় শিক্ষার্থীদের খুব কম সময়ে অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হয় এবং অনেক মানুষের প্রত্যাশার চাপ তাদের জন্য অনেক সময় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। মনে রাখতে হবে, এই সময় নিজেকে মানসিকভাবে সতেজ রাখাটা অনেক বেশি জরুরি। তুমি পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিশ্রম করলে পরীক্ষার হলে ভালো না করার কোনো কারণই নেই। কারণ দিনান্তে যারা নিজেদের স্বপ্নের পেছনে শক্তভাবে লেগে থাকে, বিজয়ীদের দলে তাদের অবস্থান সুনিশ্চিত। 

আব্দুল্লাহ সাদমান জামী, ২য় স্থান, ডি ইউনিট, ঢাবি (২০১৭-১৮)

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে ৮ নভেম্বর; যা চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের ১০ হাজার ২১৯টি পদে শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

এ বিভাগগুলো হলো রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র বলছে, দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এ দুই বিভাগে শূন্য পদ রয়েছে ৪ হাজার ১৬৬টি।

আজ বুধবার বিকেলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ধাপে ছয় বিভাগের ১০ হাজার ২১৯টি শূন্য পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আগামীকাল দেশের তিনটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হবে।

এর আগে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট রাতে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিন দিন পর ৩১ আগস্ট গঠিত হয় আট সদস্যের ‘কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি’। এ কমিটির চেয়ারম্যান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সদস্যসচিব অধিদপ্তরের (পলিসি ও অপারেশন) পরিচালক। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ও সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন কমিটিতে।

পরে ২ নভেম্বর সংশোধিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ প্রকাশ করা হয়। এতে নতুন সৃষ্টি করা সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাদ দেওয়া হয়। এ দুটি পদ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি বিধিমালায় কিছু ‘শব্দগত পরিবর্তন’ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদ্রাসার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা শুরু ২৮ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এ বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন অষ্টম ও ইবতেদায়ি (পঞ্চম) শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এবং ইবতেদায়ি শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হবে।

গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রকাশিত সময়সূচিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সময়সূচি অনুযায়ী, অষ্টম শ্রেণির কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ, আকাইদ ও ফিকহ বিষয়ের পরীক্ষা হবে ২৮ ডিসেম্বর। আরবি (১ম ও ২য় পত্র) পরীক্ষা হবে ২৯ ডিসেম্বর। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩১ ডিসেম্বর।

অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় তিন ঘণ্টা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় থাকবে।

বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান (৫০ + ৫০) = ১০০ এবং পরীক্ষার সময় (১.৩০ + ১.৩০) = ৩ ঘণ্টা। দুটি বিষয়ে একই দিনে ভিন্ন কোডে পরীক্ষা হবে এবং উত্তরপত্র আলাদা থাকবে। গণিত ও বিজ্ঞান পরীক্ষাও একই পদ্ধতিতে হবে, পূর্ণমান (৭০ + ৩০) = ১০০।

অন্যদিকে ইবতেদায়ি শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী, কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ বিষয়ের পরীক্ষা হবে ২৮ ডিসেম্বর। আরবি (১ম ও ২য় পত্র) পরীক্ষা হবে ২৯ ডিসেম্বর। বাংলা ও ইংরেজি পরীক্ষা হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩১ ডিসেম্বর।

পঞ্চম শ্রেণিতে প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান (৫০ + ৫০) = ১০০ আর গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পূর্ণমান (৬০ + ৪০) = ১০০ নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পাঠ্যবই থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রশ্নকাঠামো অনুযায়ী উভয় পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করা হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রের কক্ষে উপস্থিত হয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রবেশপত্র প্রতিষ্ঠানপ্রধানের স্বাক্ষর, সিলসহ পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগে সংগ্রহ করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা ওএমআর ফরমে সঠিকভাবে রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও বিষয় কোড পূরণ করবে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীরা কেবল অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর (নন-প্রোগ্রামেবল) ব্যবহার করতে পারবে। কোনো অবস্থায় উত্তরপত্র ভাঁজ করা বা প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে তফসিল ঘোষণা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে তফসিল ঘোষণা করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২২ ডিসেম্বর।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ সাজিদ একাডেমি ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশন অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।

নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী, আচরণ বিধিমালা প্রকাশ ৫ নভেম্বর, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা ৫ নভেম্বর, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ৬ নভেম্বর, ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ নভেম্বর, জকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিতরণ ১৩, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), জকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল ১৭ ও ১৮ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ ও ২০ নভেম্বর।

এ ছাড়া জকসু নির্বাচনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২৩ নভেম্বর। প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর (সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা), ‎চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৩ ডিসেম্বর। ‎মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর। ‎প্রত্যাহার করা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ৯ ডিসেম্বর।

প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ ২২ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এ ছাড়া ২২ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করা হবে। ভোট গণনার ওপর ভিত্তি করে ২২ অথবা ২৩ ডিসেম্বর ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তফসিল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী দিবস, শহীদ দিবস, শীতকালীন ছুটি—সব বিবেচনা করে এ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, সব বিবেচনায় আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১ হাজার ৮৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
১ হাজার ৮৯ ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত

আন্দোলনের মুখে শর্তসাপেক্ষে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।

এস এম মাসুদুল হক বলেন, ‘আমরা আবেদন করা ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। শর্তসাপেক্ষে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়।’

মাসুদুল হক আরও বলেন, ১ হাজার ৮৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মধ্যে যেগুলো চলতি বছর জারি করা এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে এমপিওভুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে।

দেড় হাজারের বেশি অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির আবেদন গত ৮ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রহণ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকেরা তিন হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দেশে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।

শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এ বছরের শুরুতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে প্রথমে এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষকেরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। এর মধ্যে তাঁদের এক পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে। বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের পিটুনির সে ঘটনা আলোড়ন তোলে। এর একপর্যায়ে গত ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।

গত ২৫ জুন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর মোট ছয়টি পদ এমপিওভুক্ত হবে। ইবতেদায়ির প্রধান বেতন পাবেন দশম গ্রেডে আর সাধারণ, বিজ্ঞান ও আরবি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ১৩তম গ্রেডে। আর ক্বারী বা নুরানি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকেরা ১৬তম গ্রেডে বেতন পাবেন। আর প্রতিটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার অফিস সহায়ক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, যে পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০তম গ্রেডে বেতন পাবেন।

নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষক পদে এনটিআরসিএর সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। আর নীতিমালায় মাদ্রাসাগুলোর ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নির্দেশনা এসেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক পদে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়েছে।

এমপিওভুক্তির জন্য ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি, প্রতিষ্ঠানের জমি, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা, বার্ষিক পরীক্ষার গড় নম্বর, পরিবেশ ইত্যাদি সূচকে নম্বর নির্ধারণ করে মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং করা হবে।

নীতিমালায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের এমপিও কমিটি গঠন করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর মাদ্রাসাগুলোর কাগজপত্র যাচাই করে এমপিও দেবে। প্রথমে মাদ্রাসাগুলোকে এমপিও কোড দেওয়া হবে। শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে বা এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে যোগদানের তারিখ থেকে এমপিও পাবেন।

বিক্ষোভ-মিছিল করেননি শিক্ষকেরা

সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ পাঁচ দাবিতে আজ বিক্ষোভ-মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। তবে প্রধান উপদেষ্টা ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেওয়ায় তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেননি। তবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।

জানতে চাইলে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষক ঐক্য জোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম আজ সন্ধ্যায় বলেন, ‘১ হাজার ৮৯টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় অনুমোদন দিয়েছেন বলে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাঁরা আমাদের বিক্ষোভ-মিছিল না করার অনুরোধ করেছেন। তাই আমরা বিক্ষোভ-মিছিল করিনি। তবে আমরা লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাব। আপাতত আমরা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত