Ajker Patrika

না পড়িয়ে দশ বছর ধরে বেতন উত্তোলনের অভিযোগ 

কামাল হোসেন, কয়রা (খুলনা)
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ৩৫
না পড়িয়ে দশ বছর ধরে বেতন উত্তোলনের অভিযোগ 

খুলনার কয়রা উপজেলায় সরকারি মহিলা কলেজের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে কলেজে পাঠদান না করিয়ে ১০ বছরে ধরে বেতন উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি এলাকায় বিভিন্ন সংসদ সদস্যের সহকারী হিসেবে পরিচিত।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোলের প্রভাষক মো. আক্তারুজ্জামান কলেজে অনুপস্থিত আছেন বছরের পর বছর। কলেজের পরিচালনা কমিটির যখন যিনি সভাপতি হন, তাঁকে ও অধ্যক্ষকে হাত করে একদিন এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই করেন এবং বেতন উত্তোলন করেন।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মো. আক্তারুজ্জামান ২০০১ সালের ১২ নভেম্বর কলেজে যোগদান করেন। ২০১১ সালের ১ নভেম্বর বেতন চালু হয় এবং ৩০ মার্চ ২০১৬ সালে জাতীয়করণ হয়। তিনিসহ বর্তমান বিদ্যালয়ে ৩৩ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। বর্তমানে ওই কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৭৮। 

গত রোববার বেলা ১১টার দিকে সরকারি মহিলা কলেজে গিয়ে কথা হয় বিভিন্ন শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। এ সময় একাদশ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী বলে, `আমাদের কলেজে মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক শিক্ষকের কথা শুনেছি। কিন্তু তিনি কোনো দিন আমাদের ক্লাস নেননি, তাঁকে চিনিও না।’ এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী বলে, ওই নামে কোনো শিক্ষককে তারা চেনে না এবং তাদের ক্লাসও নেন না। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা আর কী বলব, অধ্যক্ষ স্যার ভালো জানেন।’ 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, শুরুর দিকে ক্লাস নিলেও ২০০৯ সালের পর থেকে মো. আক্তারুজ্জামান আর কোনো ক্লাস নেন না। তাঁর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এমপির সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় যখন যিনি কলেজের সভাপতি হন, তখন তাঁকে ও প্রিন্সিপাল স্যারকে হাত করে একদিন এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই করেন এবং সরকারি বেতন উত্তোলন করেন। 

প্রভাষক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘একেবারেই ক্লাস করাই না, এমন নয়। মাঝেমধ্যে করাই। কলেজটি সরকারিকরণে আমি দীর্ঘ সময় ঢাকায় থেকেছি। এ ছাড়া কয়রার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প পাস করার জন্য কাজ করেছি। এ কারণে ক্লাস নিতে পারিনি। এটা আমার ভুল হয়েছে।’ 

এ ব্যাপারে কলেজের অফিসার-ইন-চার্জ আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রভাষক আক্তারুজ্জামান ‘মাঝেমধ্যে আসেন। কলেজটি সরকারিকরণের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান আছে।’ তাই বলে কলেজে না এসে বেতন পাওয়ার কোনো বিধান আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা অবশ্য নেই। তাহলে ওই শিক্ষক কীভাবে বেতন পান এমন প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি রাজি হননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা বলেন, ‘আমি এখন অসুস্থ। সুস্থ না হয়ে এ বিষয়ে কোনো  মন্তব্য করতে চাইছি না।’ 

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আক্তারুজ্জামান আমার অফিশিয়াল কোনো সহকারী না। আমি যত দূর জানি, সে মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন কাজ করে দেয়। আমার তাঁর সঙ্গে পরিচয় রয়েছে। তবে সে আমার এপিএস না।’

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুন অর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত