Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতি

মো. সাজেদুল ইসলাম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ১৫
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের প্রস্তুতি

ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয় দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইংরেজিতে ভালো নম্বর না থাকলে প্রথম সারির বিষয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায় না। বাংলার ক্ষেত্রেও অনেক শর্ত থাকে। তাই ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোন বই পড়তে হবে, কী পড়তে হবে, কীভাবে পড়তে হবে ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মো. সাজেদুল ইসলাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ও ‘ডি’ ইউনিটের প্রস্তুতির ধরন প্রায় একই। অর্থাৎ ‘বি’ ইউনিটের প্রস্তুতি নিলে ‘ডি’ ইউনিটের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যায়। ‘বি’ ও ‘ডি’ ইউনিটে মূলত তিনটি বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়। যেমন ১. বাংলা ২. ইংরেজি ৩. সাধারণ জ্ঞান। 

বাংলা 
১. উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা প্রথম পত্র বই
২. নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ 
৩. সাহিত্য জিজ্ঞাসা– ড.সৌমিত্র শেখর
৪. প্রশ্নব্যাংক পর্যালোচনা

প্রতিবছরই বাংলা প্রথম পত্র বই থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন আসে। তাই বাংলা মূল বইটার গুরুত্ব অনেক। গত বছর ১৬টি বাংলা এমসিকিউর মধ্যে ৯টিই মূল বই থেকে এসেছে। বিগত বছরগুলোয়ও ৮-১০টি প্রশ্ন বই থেকে এসেছে। তাই বইটা ভালো করে পড়তে হবে। শুধু রিডিং পড়লেই হবে না। তথ্যবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আন্ডারলাইন করে বারবার পড়তে হবে। গল্পে বা কবিতায় যে ফুল, ফল, নদী, গাছ, পোকা, পাখি ইত্যাদি শব্দ খুব সচেতনভাবে পড়তে হবে। কারণ বিগত বছরগুলোতে এসব বিষয় থেকে অনেক প্রশ্ন এসেছে। তা ছাড়া কবির নামের বানানও ভালোভাবে লক্ষ করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ যদি বলা হয় বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার লেখকের নাম কী? তাহলে অনেক শিক্ষার্থীই মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামটি লিখতে বা সঠিক উত্তর নির্বাচন করতে ভুল করতে পারে; যদি নামটি একটু পরিবর্তন করে সবগুলো অপশনে বসিয়ে দেওয়া হয়।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বইটি থেকেও অনেক প্রশ্ন করা হয়। বিগত বছরগুলোতে গড়ে ৯-১০টি প্রশ্ন এসেছে। ২০১৯-২০ সালের নতুন সিলবাসের পরীক্ষায়ও এখান থেকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছিল। সম্পূর্ণ বইটি ভালোমতো আয়ত্তে আনতে হবে। বাক্য প্রকরণ, ধ্বনি পরিবর্তন, ণত্ব ও ষত্ব বিধান, উপসর্গ-অনুসর্গ, সমাস, সন্ধি, কারক ও বিভক্তি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে।

সাহিত্য জিজ্ঞাসা থেকে শুধু বিরচন অংশটি, অর্থাৎ বাগধারা, এককথায় প্রকাশ, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, শুদ্ধি-অশুদ্ধি, সমোচ্চারিত শব্দ ইত্যাদি অংশ পড়লেই হবে। 

প্রতিদিন বাংলা ব্যাকরণের ১টি করে টপিকস পড়লেই যথেষ্ট। তবে এখন প্রস্তুতির শেষ দিকে আছি আমরা। সে ক্ষেত্রে নিজের পড়াশোনার গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। বিরচন অংশগুলো মুখস্থের বিষয়। প্রথম প্রথম পড়তে অসহ্য লাগবে; কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না। কয়েকবার রিভিশন দিলেই সম্পূর্ণ আয়ত্তে চলে আসবে। আমাদের সময় লিখিত না থাকায় লিখিত অংশের বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। তবে গত বছরের প্রশ্ন দেখে সহজেই অনুমান করা যায় লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে বাংলা মূল বইটা ভালোভাবে বুঝে পড়ার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

ইংরেজি
ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইংরেজি। দেখা যায় প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়। তা ছাড়া অনেকে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো মেধাক্রমে থাকার পরও ইংরেজিতে কম নম্বরের কারণে পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারে না। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেতে ইংরেজির গুরুত্ব অপরিসীম। ইংরেজিতে ভালো করতে এ বইগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে–

১. উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি প্রথম পত্র বই
২. English For Competitive Exam
৩. Barron's & Cliff'sTOEFL 
৪. Dictionary (ডিকশনারি পড়া না থাকলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য Saifur's Student Vocabulary বইটা পড়তে পারেন)

আগে ইংরেজি পাঠ্যবই থেকে প্রশ্ন করা না হলেও বিগত কয়েক বছরে (৬-৭ বছর) পাঠ্যবই থেকে অনেক প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রতিবারই ২-৩টি প্রশ্ন সরাসরি পাঠ্যবইয়ের গদ্য অথবা পদ্য থেকে করা হয়। তা ছাড়া অনেক সময় ভর্তি পরীক্ষায় আসা ইংরেজি ভোকাবুলারিগুলোও পাঠ্যবই থেকে তুলে দেওয়া হয়। এ জন্য ইংরেজিতে ভালো করতে পাঠ্যবইয়ের বিকল্প নেই। কবিতাংশ থেকেই সাধারণত বেশি প্রশ্ন করা হয়। যেমন কবিতার লেখকের নাম কী, কবিতার প্রথম ও শেষ লাইন কী। তা ছাড়া কবিতার মধ্যে থাকা বিভিন্ন সাহিত্যিক সিম্বল যেমন-Simile, Metaphor, Personification, Alliteration, Exaggeration ইত্যাদি অংশ থেকেই সাধারণত বেশি প্রশ্ন করা হয়। এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর করার জন্য টেক্সট বুলেটিন বা টেক্সট প্যানাসিয়ার মতো বইগুলো পড়া যেতে পারে। ২০১৯-২০ সালে ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের কবিতাংশ থেকে ২টি ও গদ্যাংশ থেকে ১টি প্রশ্ন আসে। পাশাপাশি ৪টি ভোকাবুলারিভিত্তিক প্রশ্নের সবগুলোই মূল বই থেকে করা হয়েছিল। গ্রামারের জন্য English For Competitive Exam ও TOEFL বইটা পড়লেই যথেষ্ট হবে বলে আমি মনে করি। প্রতিদিন গ্রামার অংশ পড়ার চেষ্টা করতে হবে। বইয়ের কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে অন্যান্য শিট বা বই থেকে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। পড়ার সময় গ্রামারের নিয়মগুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে। নিয়মগুলো ভালোভাবে মাথায় সেট করে নিতে হবে, যাতে এই সংক্ষিপ্ত সময়ে একই বিষয় দ্বিতীয়বার পড়তে না হয়। একটি গ্রামার অংশের সব নিয়ম পড়ার পর সেগুলো নিজের কতটা আয়ত্তে এসেছে তা বোঝার সব থেকে কার্যকর উপায় হলো ওই টপিকস সম্পর্কীত বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো সমাধান করা। এ জন্য English For Competitive Exam বইটি ভালো হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

আমাকে ধর্ষণের সময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল দুই যুবক: ধর্ষণের শিকার তরুণী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত