Ajker Patrika

জিপিএ কম হলেও চিন্তা নেই

জুবায়ের আহম্মেদ
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ৩১
জিপিএ কম হলেও চিন্তা নেই

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মতো প্রতিযোগিতামূলক একটি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কৌশলী হতে হবে। উপযুক্ত কৌশল অনুসরণ করে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিলেই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা সম্ভব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে পরামর্শ ও কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ২০১৮-২০১৯ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বি-ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অধিকারী ও আইবিএর শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেন আরিফ। আজকে থাকছে প্রথম পর্ব।  

ভালোভাবে রিভিশন দাও
যেহেতু পরীক্ষা এখন সন্নিকটে, তাই এই মুহূর্তে কীভাবে পড়তে হবে বা কী পড়তে হবে, এ-সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কোনো পরামর্শ দেব না। তবে যেটুকু না বললেই নয় তা হলো, এই সময়ে এসে নতুন কিছু পড়ে মাথা খারাপ করার থেকে বরং আগের পড়াগুলো ভালোভাবে রিভিশন দেওয়াটাই বরং বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষার আগে এসে নতুন টপিক পড়তে গিয়ে দেখা যায় আমরা আগের পড়াগুলো ভালোভাবে রিভিশন দিতে পারি না। ফলে পরীক্ষার প্রশ্ন হাতে পেয়ে আফসোস করি আর বলি ইশ! এই প্রশ্নটা তো আমি পড়েছি, কিন্তু উত্তরটা ঠিক মনে পড়ছে না। আমার পরামর্শ হলো, ‘যা-ই পড়ো না কেন এমনভাবে পড়ো, যেন সেই টপিক থেকে প্রশ্ন এলে অনায়াসেই উত্তর করতে পারো।’

সামাজিক মাধ্যমে সময় নষ্ট নয়
পরীক্ষা কাছে এলে যে বিষয়টা বেশি হয়, আমরা সামাজিক মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার যে গ্রুপগুলো রয়েছে তাতে সময় বেশি দেওয়া শুরু করি। ফলে ধীরে ধীরে পড়াশোনার গতি কমে আসে এবং বিষণ্ণতা অনুভব করি। তাই আমার একান্ত পরামর্শ থাকবে ওই সব গ্রুপে পাশের সিটে কে বসবে সেটা খুঁজে, অ্যাডমিট কার্ডের ছবি আপলোড করে সময় নষ্ট না করে বরং সময়টা পড়াশোনার পেছনে ব্যয় করো।

থাকার জায়গার ব্যবস্থা
ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের বাসা থেকে অনেক দূরে যেতে হয়। নতুন জায়গায় গিয়ে নানা রকমের বাজে অভিজ্ঞতার স্বীকার হতে হয়। এ রকমের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে বাঁচতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যার যার নিজস্ব জেলা সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ রইল। জেলা সমিতিতে যোগাযোগ করলে ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত সব সহায়তা পাওয়া যায়।

নো টেনশন
পরীক্ষার আগে বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারো। যেমন হল খুঁজে না পাওয়া, সিট খুঁজে না পাওয়া, রিকশা না পাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। যত সমস্যাই হোক না কেন চিন্তিত হওয়া যাবে না। সমস্যার জন্য ৫-১০ মিনিট দেরি হতেই পারে। এতে হতাশ না হয়ে অবশ্যই ধৈর্যসহ মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দেবে।

ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত থাকি, যার ফলে মনের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। আমি তেমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব আজ।  

প্রশ্ন-১: পরীক্ষায় কতগুলো প্রশ্ন উত্তর করে আসব?
উত্তর: যতগুলো প্রশ্নের উত্তর সঠিক বলে তুমি নিশ্চিত, সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করে আসবে।

প্রশ্ন-২: আন্দাজে উত্তর করব কি না?
উত্তর: যদি ৬০ শতাংশ প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারো, তাহলে আর আন্দাজে উত্তর করার দরকার নেই। কারণ ৬০ শতাংশ মার্কস পেলে ইনশা আল্লাহ ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে যদি ৬০ শতাংশের বেশি সঠিক উত্তর করার পর তুমি আন্দাজে উত্তর করো, তাহলে নেগেটিভ মার্কিংয়ের কারণে চান্স না-ও হতে পারে।

প্রশ্ন-৩: কত মার্কস পেলে চান্স হবে?
উত্তর: অনেকেই জিজ্ঞেস করে, কত পেলে আমি চান্স পেতে পারি। এমনকি আমি নিজেও ভর্তি পরীক্ষার সময় এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছি। এই প্রশ্নের উত্তরে আমি যেটা বলব তা হলো, ৬০ শতাংশের ওপরে মার্কস পেলে মোটামুটি নিশ্চিত থাকতে পারো তুমি চান্স পেয়ে যাবে।

প্রশ্ন-৪: আইবিএতে চান্স পেতে কী করতে হবে?
উত্তর: আইবিএতে মোট সিট ৫০টা। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ২৫ এবং বাকি ২৫ জন নেবে অন্য বিভাগ থেকে। তাই আইবিএতে চান্স পেতে হলে অবশ্যই বি-ইউনিটের মেরিট লিস্টে প্রথম ৩০-এর মধ্যে থাকতে হবে। ৩০-এর বাইরে গেলে আইবিএতে না হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া আইবিএতে চান্স পাওয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ৪০ শতাংশের বেশি মার্কস থাকতে হবে।

প্রশ্ন-৫: সাবজেক্ট চয়েস: সাবজেক্ট চয়েস হওয়া উচিত নিজের পছন্দমতো, অর্থাৎ নিজের যে সাবজেক্ট পড়তে ভালো লাগে, সেই হিসেবে। আমি যেভাবে সাবজেক্ট চয়েস দিয়েছি, তা নিম্নরূপ: 
১। আইবিএ 
২। ফিন্যান্স 
৩। অ্যাকাউন্টিং 
৪। মার্কেটিং 
৫। ম্যানেজমেন্ট 
৬। টিএইচএম এবং 
৭। ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স।

প্রশ্ন-৬: আমার জিপিএ খুবই কম। আমার কি চান্স হবে?
উত্তর: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ খুব বেশি একটা প্রভাব ফেলে না। ভর্তি পরীক্ষায় ভালো মার্কস থাকলে চান্স হয়ে যাবে। আমার নিজেরও এসএসসির রেজাল্ট ছিল মাত্র ৩.৯৪। আমার এক বন্ধুর এসএসসির রেজাল্ট ছিল মাত্র ৩.৯৬। সেই বন্ধুও এখন আইবিএতে পড়াশোনা করে। সুতরাং জিপিএ কম থাকায় চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

প্রশ্ন-৭: কত মার্কস পেলে প্রথম হতে পারব?
উত্তর: আমাদের সময় প্রথম স্থান অর্জনকারী ১০০ নম্বরে ৭৬ পেয়েছিল। আমি তৃতীয় হয়েছিলাম ৭৩.৪৫ মার্কস পেয়ে। ৭০ নম্বরের বেশি পেলে প্রথম ১৫ জনের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা থাকে।

প্রশ্ন-৮: প্রশ্ন রিপিট হয় কি না?
উত্তর: হ্যাঁ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিট হয়।

এই সময়কার একটি পদক্ষেপ তোমার ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে। অতএব, সময় অপচয় না করে নিজের ওপর বিশ্বাস আর সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে শেষ সময়ে প্রস্তুতিটা ঝালিয়ে নাও।

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

আমাকে ধর্ষণের সময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল দুই যুবক: ধর্ষণের শিকার তরুণী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত