Ajker Patrika

মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ায় ছয় পুলিশ বরখাস্ত

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ১৭
মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ায় ছয় পুলিশ বরখাস্ত

রাজশাহীতে এক ব্যক্তিকে ধরে মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় ছয় পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক সাময়িক বরখাস্তের এ আদেশ জারি করেন। 

বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা সবাই নগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্সে কর্মরত ছিলেন। তাঁরা হলেন-সহকারী শহর উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) নাসির উদ্দীন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেলিম শাহাজাদা, কনস্টেবল মো. শাহ আলম, সারোয়ার আলম, রিপন আলী ও শংকর চন্দ্র। এদের মধ্যে নাসির উদ্দীন পুলিশ বক্সের ইনচার্জ ছিলেন। 

আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, সাময়িক বরখাস্ত করে এসব পুলিশ সদস্যদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগও হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিভাগীয় তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

এদিকে বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা খোরশেদ গাজী ও তাঁর ভাগ্নি জামাই মো. শাহীন আদালতে হাজিরা দিতে রাজশাহী আসেন। হাজিরা শেষে বাড়ি যাওয়ার জন্য তাঁরা শিরোইল বাস টার্মিনালে এলে এএসআই সেলিম শাহাজাদা ও অন্য কনস্টেবলরা তাঁদের ধরে পুলিশ বক্সে নিয়ে যেতে চায়। 

এ সময় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে খোরশেদ গাজী পালিয়ে যান। তবে মো. শাহীনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে তাঁর কাছে এক হাজার টাকা ও দুটি ডার্বি সিগারেট পায়। এ সময় ওই এক হাজার টাকা পুলিশ নেয়। এরপর তাঁর কাছে আরও টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে তাঁর কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে, এমন মিথ্যা মামলা দেওয়া হবে। বিষয়টি শাহীন তাঁর এক আত্মীয়কে জানালে তিনি বিকাশের মাধ্যমে চার হাজার ৬০০ টাকা পাঠান। এরই মধ্যে এটিএসআই নাসির পুলিশ বক্সে আসেন। 

ভুক্তভোগী শাহীনের কাছে বাড়ি যাওয়ার মতোও আর কোন টাকা ছিল না। তাই তিনি এটিএসআই নাসিরের কাছে টাকা চান। নাসির তখন ধমক দিয়ে জেলে ঢুকানোর ভয় দেখান। এ সময় শাহীন পুলিশ বক্স থেকে চলে যান। 

এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আরএমপি কমিশনারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই ছয় পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। 

এদিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন জানিয়েছেন, মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর ভয় দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে আদায় এবং নগদ এক হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগীরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ অভিযোগের বিষয়েও আলাদাভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বিভাগীয় তদন্তও হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত