আজকের পত্রিকা ডেস্ক
১৩৩৭ সালের এক মে সন্ধ্যায়, লন্ডনের ওল্ড সেন্ট পল’স ক্যাথেড্রালের সামনে রক্তাক্ত এক হত্যাকাণ্ড ঘটে। জন ফোর্ড নামের এক ধর্মযাজককে একদল লোক ঘিরে ধরে কানের কাছে ও পেটে ছুরি মারে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা হত্যাকারীদের শনাক্ত করলেও কেবল একজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর যে নারী এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিলেন বলে মনে করা হয়— ধনী ও প্রভাবশালী অভিজাত এলা ফিৎসপেইন— তাঁকে কোনোদিন বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
প্রায় সাতশ বছর পর ইতিহাসবিদরা নতুন দলিল-দস্তাবেজ ঘেঁটে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। জানা যাচ্ছে, ফিৎসপেইন শুধু ব্যভিচারে লিপ্তই ছিলেন না, তিনি চুরি, চাঁদাবাজি এবং এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায়ও জড়িত ছিলেন। নিহত যাজক জন ফোর্ড ছিলেন একসময় তাঁর প্রেমিক— এবং সম্ভবত তাঁর অপরাধচক্রের অন্যতম সদস্য।
২০১৮ সালে চালু হওয়া ‘মিডিয়েভাল মার্ডার ম্যাপস’ নামের এক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এই ঘটনার পুনর্গঠন করা হয়েছে। দলিল অনুযায়ী, ফিৎসপেইন একটি গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিতেন যারা এক ফরাসি অধ্যাসনে (প্রিওরি) এ হামলা চালিয়ে গবাদিপশু লুট করে মুক্তিপণ আদায় করেছিল। সেই সময় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল, যা কাজে লাগায় এই চক্র।
এই ঘটনায় ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের কাছে সম্ভবত ফিৎসপেইনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ফোর্ড। ১৩৩২ সালে ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ একটি চিঠিতে এলাকে ‘ধর্মযাজকসহ বিবাহিত-অবিবাহিত বহু পুরুষের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত’ বলে অভিযুক্ত করেন। এতে বলা হয়, এই ধনী ও প্রভাবশালী অভিজাত নারী ধারাবাহিকভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত ছিলেন— ‘নাইট, বিবাহিত-অবিবাহিত অন্যান্য পুরুষ, এমনকি ধর্মগুরুর সঙ্গেও।’ এই চিঠিতেই প্রথম ফোর্ডের নাম আসে এলার প্রেমিক হিসেবে।
এই অভিযোগের পর এলাকে ধর্মীয় লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। তাঁকে আদেশ দেওয়া হয় প্রতিবছর শরৎকালে সালিসবুরি ক্যাথেড্রালের বেদীমণ্ডলের দিকে খালি পায়ে হাঁটতে, হাতে চার পাউন্ড ওজনের মোমের মোমবাতি নিয়ে। এ ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার পরা নিষিদ্ধ এবং দরিদ্রদের জন্য দান করার নির্দেশ ছিল। তবে ইতিহাসবিদরা মনে করেন, তিনি আদেশ অমান্য করেন এবং এই অপমানের প্রতিশোধ নেন ফোর্ডকে খুন করিয়ে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞানী ড. মানুয়েল আইজনার নতুন গবেষণায় এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি খুঁজে পান এক দলিল যেখানে উল্লেখ আছে— ফিৎসপেইন, তাঁর ভাই, দুই চাকর ও এক যাজককে নিয়ে পরিকল্পনা করে ফোর্ডকে খুন করান। যাজক প্রথমে ফোর্ডের সঙ্গে কথাবার্তায় তাকে বিভ্রান্ত করেন, পরে এলার ভাই তাঁর গলা কাটেন এবং চাকররা পেটে ছুরি মেরে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটায়। এই পাঁচজনের মধ্যে কেবল একজন চাকর হিউ কোলন দণ্ডিত হন, তাঁকে ১৩৪২ সালে নিউগেট কারাগারে পাঠানো হয়।
দুঃসাহসী এক নারীর ছায়াতেই খুন
এ ঘটনা শুধু মধ্যযুগের নিষ্ঠুরতা নয়, বরং সমাজে নারীদের ভূমিকাও তুলে ধরে। ইতিহাসবিদ হ্যানা স্কোডা বলেন, “এলা ছিলেন সেই সময়ের নারীদের মধ্যে একজন, যিনি ক্ষমতার দাপটে পুরুষদের দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতেন।”
ত্রয়োদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ড ছিল সহিংসতাপূর্ণ। অক্সফোর্ড শহরে তখন প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ৬০ থেকে ৭৫ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হতেন— আধুনিক ইংল্যান্ডের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি। তারপরও মানুষ সহিংসতায় বিমুখ ছিল না, বরং তদন্ত ও বিচার হতো নিয়মমাফিক।
এই তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষরাও কখনো কখনো অপরাধজগতের ‘হিংস্র খেলোয়াড়’ হয়ে উঠতেন। এলার মতো নারীরাও সেই খেলায় পিছিয়ে ছিলেন না।
৬৮৮ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, রাজনীতি আর প্রতিহিংসার এক কাব্যিক ট্র্যাজেডি— যেখানে প্রেমিক এক যাজক হয়ে উঠেছেন প্রতিশোধের শিকার, আর এক সাহসী নারী আড়াল থেকে বুনেছেন ষড়যন্ত্রের জাল।
মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের অন্ধকার ইতিহাসে আজও এই কাহিনী এক অনন্য অধ্যায় হয়ে আছে— নতুন গবেষণার আলোয় যা আবারও সামনে এলো, ইতিহাসপ্রেমীদের বিস্মিত করে।
(সিএনএনের নিবন্ধ অবলম্বনে সংক্ষেপিত অনুবাদ)
১৩৩৭ সালের এক মে সন্ধ্যায়, লন্ডনের ওল্ড সেন্ট পল’স ক্যাথেড্রালের সামনে রক্তাক্ত এক হত্যাকাণ্ড ঘটে। জন ফোর্ড নামের এক ধর্মযাজককে একদল লোক ঘিরে ধরে কানের কাছে ও পেটে ছুরি মারে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা হত্যাকারীদের শনাক্ত করলেও কেবল একজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর যে নারী এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিলেন বলে মনে করা হয়— ধনী ও প্রভাবশালী অভিজাত এলা ফিৎসপেইন— তাঁকে কোনোদিন বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
প্রায় সাতশ বছর পর ইতিহাসবিদরা নতুন দলিল-দস্তাবেজ ঘেঁটে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। জানা যাচ্ছে, ফিৎসপেইন শুধু ব্যভিচারে লিপ্তই ছিলেন না, তিনি চুরি, চাঁদাবাজি এবং এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায়ও জড়িত ছিলেন। নিহত যাজক জন ফোর্ড ছিলেন একসময় তাঁর প্রেমিক— এবং সম্ভবত তাঁর অপরাধচক্রের অন্যতম সদস্য।
২০১৮ সালে চালু হওয়া ‘মিডিয়েভাল মার্ডার ম্যাপস’ নামের এক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এই ঘটনার পুনর্গঠন করা হয়েছে। দলিল অনুযায়ী, ফিৎসপেইন একটি গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিতেন যারা এক ফরাসি অধ্যাসনে (প্রিওরি) এ হামলা চালিয়ে গবাদিপশু লুট করে মুক্তিপণ আদায় করেছিল। সেই সময় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল, যা কাজে লাগায় এই চক্র।
এই ঘটনায় ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের কাছে সম্ভবত ফিৎসপেইনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন ফোর্ড। ১৩৩২ সালে ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ একটি চিঠিতে এলাকে ‘ধর্মযাজকসহ বিবাহিত-অবিবাহিত বহু পুরুষের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত’ বলে অভিযুক্ত করেন। এতে বলা হয়, এই ধনী ও প্রভাবশালী অভিজাত নারী ধারাবাহিকভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত ছিলেন— ‘নাইট, বিবাহিত-অবিবাহিত অন্যান্য পুরুষ, এমনকি ধর্মগুরুর সঙ্গেও।’ এই চিঠিতেই প্রথম ফোর্ডের নাম আসে এলার প্রেমিক হিসেবে।
এই অভিযোগের পর এলাকে ধর্মীয় লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। তাঁকে আদেশ দেওয়া হয় প্রতিবছর শরৎকালে সালিসবুরি ক্যাথেড্রালের বেদীমণ্ডলের দিকে খালি পায়ে হাঁটতে, হাতে চার পাউন্ড ওজনের মোমের মোমবাতি নিয়ে। এ ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার পরা নিষিদ্ধ এবং দরিদ্রদের জন্য দান করার নির্দেশ ছিল। তবে ইতিহাসবিদরা মনে করেন, তিনি আদেশ অমান্য করেন এবং এই অপমানের প্রতিশোধ নেন ফোর্ডকে খুন করিয়ে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞানী ড. মানুয়েল আইজনার নতুন গবেষণায় এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি খুঁজে পান এক দলিল যেখানে উল্লেখ আছে— ফিৎসপেইন, তাঁর ভাই, দুই চাকর ও এক যাজককে নিয়ে পরিকল্পনা করে ফোর্ডকে খুন করান। যাজক প্রথমে ফোর্ডের সঙ্গে কথাবার্তায় তাকে বিভ্রান্ত করেন, পরে এলার ভাই তাঁর গলা কাটেন এবং চাকররা পেটে ছুরি মেরে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটায়। এই পাঁচজনের মধ্যে কেবল একজন চাকর হিউ কোলন দণ্ডিত হন, তাঁকে ১৩৪২ সালে নিউগেট কারাগারে পাঠানো হয়।
দুঃসাহসী এক নারীর ছায়াতেই খুন
এ ঘটনা শুধু মধ্যযুগের নিষ্ঠুরতা নয়, বরং সমাজে নারীদের ভূমিকাও তুলে ধরে। ইতিহাসবিদ হ্যানা স্কোডা বলেন, “এলা ছিলেন সেই সময়ের নারীদের মধ্যে একজন, যিনি ক্ষমতার দাপটে পুরুষদের দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতেন।”
ত্রয়োদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ড ছিল সহিংসতাপূর্ণ। অক্সফোর্ড শহরে তখন প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ৬০ থেকে ৭৫ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হতেন— আধুনিক ইংল্যান্ডের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি। তারপরও মানুষ সহিংসতায় বিমুখ ছিল না, বরং তদন্ত ও বিচার হতো নিয়মমাফিক।
এই তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষরাও কখনো কখনো অপরাধজগতের ‘হিংস্র খেলোয়াড়’ হয়ে উঠতেন। এলার মতো নারীরাও সেই খেলায় পিছিয়ে ছিলেন না।
৬৮৮ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের ভেতর দিয়ে ফুটে উঠেছে প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, রাজনীতি আর প্রতিহিংসার এক কাব্যিক ট্র্যাজেডি— যেখানে প্রেমিক এক যাজক হয়ে উঠেছেন প্রতিশোধের শিকার, আর এক সাহসী নারী আড়াল থেকে বুনেছেন ষড়যন্ত্রের জাল।
মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের অন্ধকার ইতিহাসে আজও এই কাহিনী এক অনন্য অধ্যায় হয়ে আছে— নতুন গবেষণার আলোয় যা আবারও সামনে এলো, ইতিহাসপ্রেমীদের বিস্মিত করে।
(সিএনএনের নিবন্ধ অবলম্বনে সংক্ষেপিত অনুবাদ)
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মহসিন মিয়াকে (৪৬) দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
১৬ দিন আগেসবার সামনে পিটিয়ে হত্যা, পাথরে শরীর থেঁতলে দেওয়া, নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে পায়ের রগ কেটে হত্যা, অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই, চাঁদা না পেয়ে গুলি—এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচিত। কিন্তু পুলিশ অনেকটাই নির্বিকার। প্রতিটি ঘটনার সিটিটিভি ফুটেজ থাকলেও সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
১৪ জুলাই ২০২৫এবার রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা এক যুবকের পোশাক ও জুতা খুলে নিয়ে গেছে।
১২ জুলাই ২০২৫মোবাইল চুরির ঘটনায় বোরহান নামের এক তরুণকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে বোরহানের বাবা রুবির পরিবারের সাহায্য চান। বসে এক গ্রাম্য সালিস। তবে সেই সালিসে কোনো মীমাংসা হয় না। এরই মধ্য নিখোঁজ হয়ে যান বোরহান। এতে এলাকায় রব পড়ে বোরহানকে হত্যা ও লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তখন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দা
০৫ জুলাই ২০২৫