Ajker Patrika

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২২ জনের যাবজ্জীবন  

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫১
রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২২ জনের যাবজ্জীবন  

রাজশাহীর ছাত্রলীগ নেতা শাহেন শাহ হত্যা মামলায় ৯ জনের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ২২ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক ও এইচ এম ইলিয়াস হোসাইন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ১ লাখ ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। 

নিহত শাহেন শাহ রাজশাহী কোর্ট কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি নগরীর গুড়িপাড়া এলাকার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। শাহেন শাহ হত্যা মামলায় মোট ৩১ জন আসামি ছিলেন। সবার সাজা হয়েছে। আলোচিত এ মামলার ১ নম্বর আসামি ছিলেন রাসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপিপন্থী সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর রহমান। রায়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—গোবিন্দপুর পূর্ব রায়পাড়া এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে হাসানুজ্জামান হিমেল (৩৮), তৌফিকুল ইসলাম চাঁদ (৪৫), গিয়াস উদ্দিন ওরফে গিসুর ছেলে মো. মহাসীন (৫০), মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে মো. সাইরুল (২৬), নুহু শেখের ছেলে রজব (৩২), মৃত আক্কাস আলীর ছেলে বিপ্লব (৩৫), গুড়িপাড়া এলাকার গোলশের কশাইয়ের ছেলে মো. মমিন (৩০) এবং আব্দুস সামাদের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৬)। তাঁদের মধ্যে মমিন ও আরিফুল পলাতক রয়েছেন। 

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—বুলনপুর জিয়ানগর এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে লাল মোহাম্মদ ওরফে লালু (৩৮), গিয়াস উদ্দিন ওরফে গিসুর ছেলে মাহাবুল হোসেন (৪২), মৃত তাজু শেখের ছেলে সাত্তার (৪৫), মৃত আজিম আলীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (৩৮), মৃত ঝাড়ু শেখের ছেলে বখতিয়ার আলম রানা ওরফে রংলাল (৩৫), হাসান আলী (৩২), মৃত লিয়াকত মণ্ডলের ছেলে মাসুদ (৩৫), মৃত তাইদের ছেলে রাসেল (৩২), ইমদাদুল হকের ছেলে রাজা (৩২), মজিবর রহমানের ছেলে মর্তুজা (৩০), মো. মোস্তফার ছেলে সুমন (৩০), গুড়িপাড়া এলাকার মো. মহাসীনের ছেলে আসাদুল (২২), আখতারুল (২৫), মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে জইদুর রহমান (৪৮), মৃত গোলাপ শেখের ছেলে ফরমান আলী (৪০), মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে জয়নাল আবেদিন (২৫), রেজাউল করিমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৮), মৃত মাজদার আলীর ছেলে আকবর আলী (৪৫), মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে সম্রাট হোসেন (১৯), ওয়াজেদ আলীর ছেলে টিয়া আলম (৩০), মৃত আজম আলীর ছেলে আজাদ হোসেন (৩৫) ও মৃত ওয়াহেদ কশাইয়ের ছেলে মো. মাসুম (২৬)। তাঁদের মধ্যে আজাদ ও মাসুম পলাতক আছেন। 

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালে রাসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন নিহত শাহেন শাহর বড় ভাই রজব আলী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন বিএনপি নেতা মুনসুর রহমান। নির্বাচনে মুনসুর রহমান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পরে শুরু হয় সহিংসতা। ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট মুনসুর ও তাঁর সমর্থকেরা রজব আলীর মালিকানাধীন রজব অ্যান্ড ব্রাদার্সের গুদামঘর ও ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া শহীদ কামারুজ্জামান স্মৃতি সংঘ ভাঙচুর করে তাঁদের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়। পরদিন ২৮ আগস্ট গুড়িপাড়া সাকিনের ক্লাব মোড়ে শাহেন শাহকে পেয়ে তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন আসামিরা। 

তাঁর কাছে থাকা মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়। এরপর পিস্তলের ফাঁকা গুলি করতে করতে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা শাহেন শাহকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে নিহতের ভাই নাহিদ আক্তার নাহান বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তের পর ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। 

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় সাক্ষী ছিলেন ২৪ জন। আদালত ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। গত বছরের ১১ নভেম্বর আদালতে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর আদালত গত বছরের ১০ ডিসেম্বর মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এরপর দফায় দফায় রায় ঘোষণার দিন পেছানো হয়। প্রথম রায় ঘোষণার দিনের এক বছর পর আজ রায় ঘোষণা করা হলো। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কথিত গোয়েন্দা এনায়েতকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা, প্রাডো গাড়িও দেন তাঁকে

জনপ্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে বদলি

৯ পুলিশ পরিদর্শক বাধ্যতামূলক অবসরে

গণবিক্ষোভ আতঙ্কে মোদি সরকার, ১৯৭৪-পরবর্তী সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ

হতাশায় শেষ হচ্ছে ইলিশের মৌসুম, আসছে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত